কক্সবাজার প্রতিনিধি »
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের তীরে ঢেউয়ের সাথে অকস্মাৎ উঠে এসেছে ঝাঁকে ঝাঁকে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। সৈকতের ডায়াবেটিক, শৈবাল, লাবণী পয়েন্টে যতদূর চোখ গেছে শুধু মাছ আর মাছ। তবে বালিয়াড়িতে উঠে আসা এসব মাছ মৃত ও ছোট প্রজাতির। বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) সকালে জোয়ারের সময় এসব মরা মাছ উঠে আসে বলে জানায় স্থানীয়রা।
মৃত মাছগুলো দেখতে ও কুড়াতে উৎসুক জনতা ভিড় জমায় সৈকতে। সকালে হাটতে যাওয়া অনেকে এ চিত্র মোবাইলে ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়েছে। তবে, কি কারণে মাছগুলো মরলো বিষয়টি সঠিক বলা না গেলেও মৎস্য সংশ্লিষ্টরা বলছেন- অতিরিক্ত মাছ বোঝাই করে কূলে আসতে গিয়ে ট্রলার ডুবির ঘটনায় মাছগুলো তীরে এসেছে।

স্থানীয়রা জানান, ডায়াবেটিক, শৈবাল, লাবণী ও কবিতা চত্বর সৈকতের আধা কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভেসে আসা ছোট আকৃতির এসব মাছ স্থানীয়দের কাছে ‘চামিলা’ হিসেবে পরিচিত। সাথে আছে পোয়া, ছুরিসহ অন্য প্রজাতির মাছও রয়েছে।
কক্সবাজার পৌরসভার কলাতলী এলাকার কাউন্সিলর এমএ মনজুর বলেন, কক্সবাজার সৈকতে অস্বাভাবিক ভাবে মরা মাছ ভেসে এসেছে। খবরটি জানার পর দর্শনার্থী সবাই ইচ্ছামতো কুড়িয়ে নিয়েছে এসব মাছ। কিছুদিন আগে ভেসে আসা জেলীফিশ এখনও পড়ে আছে সৈকত জুড়ে। এসব অস্বাভাবিক ঘটনা প্রকৃতির কোন্ ছন্দপতন কিনা বা সাগরে বড় ধরনের কোনো বিপর্যয় ঘটল কিনা এই নিয়ে চিন্তায় আছি। এখনই এসব নিয়ে গবেষকদের দারস্থ হওয়া উচিত।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নির্বাহি ম্যাজিস্ট্রেট (পর্যটক সেল) মাসুম বিল্লাহ জানান, ঢেউয়ের সঙ্গে হঠাৎ বিপুল পরিমাণ ছোট মরা মাছ ভেসে এসেছে বলে বীচকর্মীরা জানিয়েছে। মাছ দেখে মানুষের সমাগম বেড়ে যায় বালিয়াড়িতে। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের জানানো হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী এক লোক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সমুদ্রে মাছ শিকারে থাকা একাধিক ট্রলারে আহরিত মাছগুলো একটি ট্রলারে নিয়ে নাজিরারটেক যাচ্ছিল। অতিরিক্ত ওজনের কারণে ঢেউয়ে ট্রলারটি উল্টে যায়। এসব মাছ শুঁটকি করতেই নাজিরারটেক নেয়া হচ্ছিল বলে জেনেছি। কিন্তু এদের কেউ বিষয়টি প্রচার করছে না।

টুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের এসপি জিল্লুর রহমান বলেন, ভেসে আসা মাছ কুড়াতে মানুষের ভিড় জমে। এত মাছ কোথা থেকে এলো এখনই বলা যাচ্ছে না। এর আগেও এধরণের মাছ বালিয়াড়িতে ভেসে এসেছিল। ভেসে এসেছিল কয়েকটি মৃত তিমি এবং বিপুল পরিমাণ বর্জ্যও।
কক্সবাজার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. বদরুজ্জামান জানান, বালিয়াড়িতে মাছ আসার খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তা তদারক করে দেখেছি। অতিরিক্ত মাছ বোঝাই ট্রলার উল্টে এ ঘটনা ঘটেছে। পোয়া, ছুরি, চাপিলাসহ নানা প্রজাতির ছোট মাছ রয়েছে এখানে। অন্যকোন বিপর্যয় নয় বলে মনে হচ্ছে। এরপরও আমরা সঠিক বিষয়টি দ্রুত নির্ণয় করতে পারবো বলে আশা করছি।













