চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় ৫টি খালের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ইছামতী খাল। খালটি এখন কচুরিপানায় পরিপূর্ণ হয়ে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। ফলে নদীর তীরবর্তী এলাকায় কৃষি জমিতে পানি সেচ ব্যাহত হচ্ছে বলে জানান স্থানীয় কৃষকরা।
উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে প্রায় ৫ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়, আমন চাষ হয় প্রায় সাড়ে ৭ হাজার হেক্টর জমিতে। যার মধ্যে চাতরী,আনোয়ারা সদর,বারখাইন,পরৈকোড়া,হাইলধর ও বরুমচড়া ইউনিয়নসহ সব চাষিরা ইছামতি খালের পানির ওপরই নির্ভরশীল।
ইছামতি খালে কচুরিপানা বেড়ে যাওয়ায় কৃষকদের মধ্যে বোরো চাষে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। যেহেতু, এই খালের পানি ব্যবহার করে ৬টি ইউনিয়নের ২ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে বোরো ও রবিশস্যের চাষ করেন প্রায় ৫ হাজার কৃষক। খালটির বিভিন্ন অংশ- বোয়ালগাঁও,সা’দ মুছা,কৈখাইন এলাকা পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার জুড়ে জমে আছে এই কচুরিপানা।
প্রসজ্ঞত, শঙ্খ নদীর লবনাক্ত পানি ঢোকা বন্ধ করতে বরুমচড়া ভরা শঙ্খ খালের মুখে প্রায় ২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি এলিভেটর রাবার ড্রাম নির্মাণ করা হয়। এরপর শিকলবাহা খালের নতুনরাস্তা-কোদলা-ইছামতি খালের মুখেও বাঁধ দেওয়া হয় । কয়েক বছর আগে একটি নতুন সুইচগেইট নির্মাণ করার পরপর তা ভেঙে যায়। ফলে চাষাবাদের জন্য পানি ধরে রাখা অসম্ভব হয়ে পড়ছে।
বঙ্গোপসাগরের জোয়ারের সময় পানি শঙ্খ নদী হয়ে এই খালে প্রবাহিত হয়। আবার ভাটার সময় শিকলবাহা খাল দিয়ে জোয়ারের পানি আসলেও সুইচগেইট না থাকায় ইছামতি খালের ভেতর পানি প্রবেশের আগেই ভাটায় সে পানি নেমে পড়ে।
স্থানীয় কৃষকেরা বলেন, খালে অতিরিক্ত কচুরিপানা জমে থাকায় পানি চলাচলে বাঁধার সৃষ্টি হচ্ছে যা পরিষ্কার করা প্রয়োজন। অতিরিক্ত কচুরিপানা থাকায় পানি চলাচল কম হচ্ছে। ফলে হাইলধর,চাতরী,শোলকাটা,বোয়ালগাঁও,খীলপাড়া,ধানপুরা,শিলাইগড়া,ঝিওরি,বরুমচড়া,নলদিয়া,পদ্মাপাড়া,তৈলারদ্বীপসহ এ অঞ্চলের রবিশস্য ও বোরো চাষের চাহিদা অনুপাতে সেচের পানি পাচ্ছেন না বলে জানা তারা।
আনোয়ারা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রমজান আলী জানান,বছরের শীত মৌসুমে ইছামতী খালে কচুরিপানার অধিক দেখা মিলে। বর্ষাকালে পানি উচ্চতা বেড়ে গেলে তা নদীর স্রোতে কমে যায়। আনোয়ারায় শিকলবাহা খালের যে সুইচ গেটটি পুনর্নির্মাণ করলে আশা করি কৃষকদের কৃষি খাতে কোনো সমস্যা হবে না।
এ বিষয়ে আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিনা আকতার বলেন, আনোয়ারার মানুষের কৃষি খাতে সমস্যা যাতে না হয় তার জন্য ইছামতী খাল স্বাভাবিক রাখার জন্য আমি সেখানে পরিদর্শন করব।যেখানে কচুরিপানায় সমস্যা দেখা দিয়েছে আমরা একটা বাজেট করে পরিস্কার করার ব্যবস্থা নিব।