কক্সবাজার প্রতিনিধি »
পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) নিয়োগ পরীক্ষায় প্রক্সি দিতে গিয়ে পরীক্ষার্থী ও প্রতারক চক্রের দুইজনকে গ্রেফতার করেছে কক্সবাজার জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশ।
এ সময় প্রতারণায় ব্যবহৃত টিআরসি পরীক্ষার্থী হারুন অর রশীদ রোল ৭১১০১৩০ এর প্রবেশপত্র, তিনটি মোবাইলফোন, বিভিন্ন কাগজপত্রাদিসহ ৫০ হাজার টাকা জব্দ করা হয়।
সোমবার (৬ মার্চ) মাঝরাতে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশের ওসি আহমেদ নাসির উদ্দীন মোহাম্মদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেন৷
ডিবির ওসি জানান, নিয়োগ পরীক্ষা যেন প্রশ্নবিদ্ধ এবং কোন পরীক্ষার্থী জালিয়াতির আশ্রয় নিতে না পারে তা নিশ্চিত করতে পুলিশ সুপার মহোদয়ের সার্বিক নির্দেশনা ছিল৷ সোমবার কক্সবাজার মডেল হাই স্কুল পরীক্ষা কেন্দ্রে টিআরসি লিখিত পরীক্ষায় হারুন অর রশীদের (রুল নং ৭১১০১৩০) ছবি ফটোশপের মাধ্যমে এডিট করেন তানজিম উদ্দিন তাহের বাবলা৷ সেই প্রবেশপত্র নিয়ে সকাল ১০টায় পরীক্ষার হলে প্রবেশ করার সময় হাতেনাতে গ্রেফতার হন হারুন৷
ডিবির ওসি আরো জানান, গ্রেফতার তানজিম উদ্দিনকে ব্যাপক জিজ্ঞেসাবাদে তিনি প্রতারক চক্রের আরেক সদস্যের বিষয়ে তথ্য দেন৷ তার তথ্য মতে কক্সবাজারের আবাসিক হোটেল আল হেরা’র ৩২৫ নং কক্ষ থেকে একরাম হোসেন নামে আরেকজনকে গ্রেফতার করা হয়৷
গ্রেফতার একরামের কাছ থেকে টিআরসি পরীক্ষার্থী হারুন অর রশীদের মূল (রোল ৭১১০১৩০) প্রবেশপত্র, তিনটি মোবাইলফোন, বিভিন্ন কাগজপত্রাদিসহ ৫০ হাজার টাকা জব্দ করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, কুতুবদিয়া উপজেলার লেমশীখালী হাবীব হাজির পাড়ার আবু তাহের’র ছেলে তানজিম উদ্দিন তাহের বাবলা (২০), একই উপজেলার ছিদ্দিক হাজির পাড়ার ছাবের আহমেদ’র ছেলে একরাম হোসেন (২৪)৷
ডিবির ওসি জানান, প্রতারক চক্রের সদস্য একরাম হোসেনের বড় ভাই সাইফুল ইসলাম সায়েম, প্রক্সি পরীক্ষার্থী মিরাজ, পলাতক পরীক্ষার্থী হারুন অর রশীদসহ চক্রের অন্যান্য সদস্যগণ পালিয়ে যায়৷
প্রাথমিক অনুসন্ধানে চক্রের মূল হোতা সাইফুল ইসলাম সায়েম তার সহোদর একরাম হোসেনদের একটি চক্র দীর্ঘদিন যাবৎ পুলিশ বাহিনীসহ বিভিন্ন সরকারি নিয়োগ পরীক্ষায় ফটোশপের মাধ্যমে প্রার্থীদের ছবি ও স্বাক্ষর এবং নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে আসছে বলে স্বীকার করেছে৷
কিছু বিপদগামী কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আর্থিক প্রলোভনের মাধ্যমে প্রক্সি পরীক্ষার্থী হিসেবে ব্যবহার করে আর্থিক ফায়দা নিচ্ছিল বলেও জানায় গ্রেফতারকৃতরা৷ প্রতারক চক্রের প্রধান হোতা সায়েমসহ অন্যান্য সদস্যদের শনাক্ত করে আটকের প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে৷ আটক ও পলাতকদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছেন ডিবির ওসি৷
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম জানান, কক্সবাজারে টিআরসি নিয়োগ পরীক্ষায় দুই হাজার আটশত ৩২ জন পরীক্ষার্থী আবেদন করেন৷ প্রাথমিক ও শারীরিক বাছাইয়ের পর ৬৭৩ জন লিখিত পরীক্ষা দেন৷