৩ নভেম্বর ২০২৫

করোনাকালে কাজিরদেউড়ি বাজারের হালচাল

ইফতেখার হোসেন » 

চট্টগ্রাম মহানগরীর ব্যস্ততম ও অন্যতম বাজারের একটি হচ্ছে কাজিরদেউড়ি কাঁচাবাজার। প্রবেশ পথে করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে স্থাপন করা হয়েছে তিনটি জীবানুনাশক ডিজইনফেকশন পয়েন্ট। এই তিনটি পয়েন্ট ব্যবহার করে ভেতরে প্রবেশ করতে হচ্ছে প্রত্যেককে। ক্রেতাসাধারণ এই পয়েন্টে পা রাখার সাথে সাথে অটো জীবাণুনাশক স্প্রে হচ্ছে।

সুরক্ষিত হয়েই ক্রেতা-বিক্রেতারা প্রবেশ করছেন বাজারে। বাজারের ভেতরের পরিবেশটাও ছিল সুশৃঙ্খল। নিরাপদ দুরত্ব বজায় রেখেই চলছে কেনাকাটা। আবার বাজার শেষে ক্রেতাদের বাহির হতে দেখা গেছে অন্য পথে।

শুক্রবার (১২ জুন) এই বাজারে খোঁজখবর নিয়েই দেখা যায়, সবজি ভরপুর থাকলেও সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা। পাশাপাশি দাম বেড়েছে মুরগির। তবে কমেছে পেঁয়াজ-রসুনের দাম। আর অপরিবর্তিত রয়েছে চাল-ডাল-তেল-লবণসহ অন্যান্য পণ্যের দাম।

ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়ে বাজারে বর্তমানে পটল বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫৫ টাকা, ঝিঙা-চিচিঙা-ধন্দুল ৪০-৬০ টাকা, কাকরোল ৬০-৭০ টাকা, কচুর ছড়া ৫০-৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে প্রতিকেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৪০-৬০ টাকা, কাঁচাপেঁপে ৪০-৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০-৫০ টাকা, কচুর লতি ৫০-৬০ টাকা, বেগুন ৪০-৮০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৫০-৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

দাম বাড়ার বিষয়ে কাজিরদেউড়ি বাজারের সবজি বিক্রেতা জাহাঙ্গীর বলেন, বর্তমানে অনেক সবজির সিজন না হওয়ায় সেগুলোর বাড়তি দাম রয়েছে পাইকারি বাজারে। তাছাড়া সবজির দাম আমদানির ওপর নির্ভর করে। বাজারে মালামাল বেশি হলে দাম কমে, মালের সংকট হলে দাম বেড়ে যায়। পাইকারি বাজারের দাম অনুপাতে আমরা খুচরা বাজারে মালামাল বিক্রি করি।

গরু ও খাসির মাংসের দাম অপরিবর্তিত থাকলেও বেড়েছে মুরগির বাজার। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ২০-২৫ টাকা বেড়ে বর্তমানে প্রতি কেজি বয়লার ১৫৫-১৬০ টাকা, লেয়ার ২২০ টাকা, সাদা লেয়ার ১৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে প্রতি কেজি সোনালি মুরগী বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা, দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা।

মুরগির দাম বাড়লেও অপরিবর্তিত আছে ডিমের দাম। বর্তমানে প্রতি ডজন লাল ডিম (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৯০-৯৫ টাকা, দেশি মুরগির ডিমি ১৪০-১৫০ টাকা, সোনালী মুরগির ১২০-১৩০ টাকা, হাঁসের ১১৫-১২৫ টাকা, কোয়েল প্রতি ১০০ পিস ডিম ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মুরগির দাম বৃদ্ধি বিষয়ে এই বাজারের মুরগি বিক্রেতা রহমান বলেন, ঈদের আগে পাইকারি বাজারে মুরগির সংকট থাকায় দাম বেশি ছিল। পাইকারি বাজারে গত সপ্তাহে সরবরাহ বেশি ছিলো তাই দামও কম ছিল। দুইদিন ধরে আবারও মুরগি সংকট। এ কারণে দাম বাড়তি থাকায় খুচরাতেও বেড়েছে দাম।

দাম বাড়তি রয়েছে মাছের বাজারেও। বাজারে দাম বেড়ে প্রতি কেজি কাঁচকি মাছ ৩৮০-৪২০ টাকা, মলা ৪০০-৪৫০ টাকা, ছোট পুটি (তাজা) ৫৫০-৬০০ টাকা, ছোট পুটি ৩০০-৪০০ টাকা, টেংরা মাছ (তাজা) ৭০০-৮০০ টাকা, দেশি টেংরা ৫০০-৫৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া প্রতি কেজি শিং (আকারভেদে) ৩০০-৫৫০ টাকা, পাবদা ৩২০-৫৫০ টাকা, চিংড়ি (গলদা) ৪০০-৭০০ টাকা, বাগদা ৫৫০-১০০০ টাকা, দেশি চিংড়ি ৩৫০-৫৫০ টাকা, রুই (আকারভেদে) ২৫০-৩৫০ টাকা, মৃগেল ২০০-৩২০ টাকা, পাঙাস ১৫০-২০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০-১৮০ টাকা, কৈ ১৮০-২০০ টাকা, কাতল ২০০-৩২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। এদিকে এক কেজি ওজনের ইলিশ ১০০০-১০৫০ টাকা, ৭৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৭৫০ টাকা থেকে ৮০০, ছোট ইলিশ আকারভেদে ৩৮০-৪৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

তবে দাম কমেছে পেঁয়াজ, আদা ও রসুনের। কেজিতে পাঁচ টাকা কমে এসব বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকা, কেজিতে ২০ টাকা কমে রসুন বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা। কেজিতে ১০-২০ টাকা কমে প্রতি কেজি আদা বিক্রি হচ্ছে (মানভেদে) ১৪০-১৫০ টাকা।

প্রসঙ্গত, সংক্রমণ রোধে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সিডিএর এ বাজারে তিনটি গেইট স্থাপন করে সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের সদস্যরা।

ব্যস্ততম এই বাজারে সংক্রমণ রোধে এমন উদ্যোগে খুশি ব্যবসায়ীসহ বাজারে আগতরা।

বাংলাধারা/এফএস/টিএম

আরও পড়ুন