বাংলাধারা ডেস্ক »
চীন থেকে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) প্রকোপ বাড়ছেই। সময়ের সঙ্গে বাড়ছে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা। এখন পর্যন্ত ১ লাখ ২৬ হাজার ৩শ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ৪ হাজার ৬৩৩ জন। অন্যদিকে ৪ হাজার ৬৩৩ জন চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
প্রাণঘাতী এই ভাইরাস বিশ্বের ১১৫টিরও বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় বুধবার (১১ মার্চ) করোনাভাইরাসকে বৈশ্বিক মহামারি ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে চীনের মূল ভূখণ্ডেই আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ হাজার ৭৯৬ এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ১৬৯ জনের। চীনের পর করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ইতালিতে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১২ হাজার ৪৬২ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং মৃত্যু হয়েছে ৮২৭ জনের।
অপরদিকে, ইরানে এখন পর্যন্ত ৯ হাজার মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ৩৫৪ জন। দক্ষিণ কোরিয়ায় এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৭ হাজার ৮৬৯ এবং মৃত্যু হয়েছে ৬৬ জনের। ফ্রান্সে এখন পর্যন্ত ২ হাজার ২৮১ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ৪৮ জন।
স্পেনে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ২৭৭ এবং মৃত্যু ৫৫, জার্মানিতে আক্রান্ত ১ হাজার ৯৬৬ এবং মৃত্যু ৩। যুক্তরাষ্ট্রে ১ হাজার ৩২২ জন আক্রান্ত এবং মৃত্যু হয়েছে ৩৮ জনের।
সুইজারল্যান্ডে করোনায় আক্রান্ত ৬৫২ এবং মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের। জাপানে নোঙ্গর করা প্রমোদতরী ডায়মন্ড প্রিন্সেসে ৬৯৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ৭ জন। অপরদিকে জাপানের বিভিন্ন স্থানে আক্রান্তের সংখ্যা ৬৩৯ এবং মৃত্যু ১৫।
গত ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে করোনাভাইরাসের আবির্ভাব ঘটে। প্রতিনিয়ত এই ভাইরাসে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের শরীরে প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে শ্বাসকষ্ট, জ্বর, সর্দি, কাশির মতো সমস্যা দেখা দেয়। যার সমাধান স্বরুপ এখনো কোনো টিকা বা প্রতিষেধক আবিষ্কার করতে পারেনি বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ শনাক্ত করা হয়। নিউমোনিয়ার মত লক্ষণ নিয়ে নতুন এ রোগ ছড়াতে দেখে চীনা কর্তৃপক্ষ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে সতর্ক করে। এরপর ১১ জানুয়ারি প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। ঠিক কীভাবে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হয়েছিল- সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত নন বিশেষজ্ঞরা। তবে ধারণা করা হচ্ছে, উহানের একটি সি ফুড মার্কেটে কোনো প্রাণী থেকে এ ভাইরাস প্রথম মানুষের দেহে আসে। তারপর মানুষ থেকে ছড়াতে থাকে মানুষে।
করোনাভাইরাস মূলত শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণ ঘটায়। এর লক্ষণ শুরু হয় জ্বর দিয়ে, সঙ্গে থাকতে পারে সর্দি, শুকনো কাশি, মাথাব্যথা, গলাব্যথা ও শরীর ব্যথা। সপ্তাহখানেকের মধ্যে দেখা দিতে পারে শ্বাসকষ্ট। উপসর্গগুলো হয় অনেকটা নিউমোনিয়ার মত। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো হলে এ রোগ কিছুদিন পর এমনিতেই সেরে যেতে পারে। তবে ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদযন্ত্র বা ফুসফুসের পুরোনো রোগীদের ক্ষেত্রে ডেকে আনতে পারে মৃত্যু।
নভেল করোনাভাইরাস এর কোনো টিকা বা ভ্যাকসিন এখনো তৈরি হয়নি। ফলে এমন কোনো চিকিৎসা এখনও মানুষের জানা নেই, যা এ রোগ ঠেকাতে পারে। যারা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন তাদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলাই আপাতত এই রোগ থেকে বাঁচার একমাত্র উপায়।
বাংলাদেশের কেউ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বলে সন্দেহ হলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কন্ট্রোল রুমের হট লাইন ০১৯৩৭১১০০১১, ০১৯৩৭০০০৯১১, ০১৯২৭৭১১৭৮৪ ও ০১৯২৭৭১১৭৮৫ এ যোগাযোগের জন্য পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
করোনাভাইরাস সম্পর্কে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বা অন্য কোনোভাবে মিথ্যা বা ভুল তথ্য প্রচার নজরে আসলে তথ্য অধিদপ্তরের সংবাদকক্ষের ফোন নম্বর ৯৫১২২৪৬, ৯৫১৪৯৮৮, ০১৭১৫২৫৫৭৬৫, ০১৭১৬৮০০০০৮ এবং ইমেইল: piddhaka@gmail.com/piddhaka@yahoo.com অথবা ৯৯৯-এ যোগাযোগ করার জন্য সর্বসাধারণের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে।
বাংলাধারা/এফএস/টিএম













