ইয়াসির রাফা »
করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে দেশের স্বাভাবিক কর্মকান্ড বন্ধ এক মাসেরও বেশি সময় ধরে। মার্চ মাসের শেষ থেকে শিল্প-কারখানা, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানসহ নানা খাত স্থবির হয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার নানা পদক্ষেপ নিলেও একের পর এক সংকট ও নতুন নতুন বিষয় সামনে এসে দাঁড়াচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে করোনা যুদ্ধের অন্যতম সৈনিক হয়ে মানুষের কল্যানে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন বর্তমান সরকারের শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এমপি।
যেমনটি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় চট্টগ্রামের মাটি ও মানুষের মুক্তির জন্য ঝাপিয়ে পড়েছিলেন তাঁর পিতা মুক্তিযোদ্ধা তথা চট্টলবীর মরহুম আলহাজ্ব এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী। এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী শুধু মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে নিজের জীবনকে সীমাবদ্ধ রাখেননি। তিনি মানবতার জলন্ত উদাহরণ সৃষ্টি করে গেছেন। যারমধ্যে তিনি ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ে বহু বেওয়ারিশ লাশ দাফন ও সৎকারের ব্যবস্থা করেছেন। ডায়রিয়া আক্রান্ত মানুষের চিকিৎসার জন্য ভ্রাম্যমাণ বা অস্থায়ী হাসপাতালের ব্যবস্থা করেছেন। নগরীর মুসলিম হলে রোগীদের জন্য স্যালাইন তৈরি করে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেছেন। কালুরঘাটে গার্মেন্টস কারখানায় অগ্নিকান্ডে অনেক কর্মীর পুড়ে যাওয়া লাশ দাফন ও সৎকার করেছেন। আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন। বন্দরটিলায় নৌবাহিনীর সাথে এলাকাবাসীর সংঘর্ষে নিহতদের দাফন ও সৎকারে তিনি ছিলেন সর্বাগ্রে। এইসব করুণাঘন মানবরূপই চট্টগ্রামের শোষিত, বঞ্চিত, নিপীড়িত, নির্যাতিত, সহায়-সম্বলহীন মানুষের বন্ধু করে তাঁকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের তিনবারের মেয়র হিসাবে নির্বাচিত করেছিলেন এ নগরের মানুষ।

তেমন যোগ্য নেতার রক্ত বহনকারী উত্তরসূরি ব্যরিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল চট্টগ্রামের মাটি ও মানুষের জন্য দিনরাত খেটে যাচ্ছেন। দেখা গেছে এই করোনাকালে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বানে সাড়া দিয়ে চট্টগ্রামের ঘরে ঘরে ছুটে বেড়াচ্ছেন। নগরবাসীকে সচেতন ও সহযোগিতা করছেন। যতক্ষণ সময় পান ততক্ষণেই নগরীর হাসপাতালে হাসপাতালে ছুটে যাচ্ছেন করোনা মোকাবেলার বিভিন্ন উপকরণ নিয়ে। ইতোমধ্যে তিনি করোনাভাইরাস শনাক্তকরণের লক্ষ্যে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিভাসু)’তে করোনাভাইরাস শনাক্তকরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন নওফেল। যেখানে ২৫ এপ্রিল থেকে করোনার পরীক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। এদিকে চট্টগ্রামের অসহায় মানুষের কথা চিন্তা করে প্রতিদিন ১ হাজার বস্তিবাসীর নিকট পৌঁছে দেয়া হচ্ছে রান্না করা খাবার। এছাড়াও রমজান শুরু হওয়ার পর থেকেই নিয়মিতই নগরীর বিভিন্ন এলাকায় নওফেলের পক্ষ থেকে সেহরি ও ইফতার সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে।

একই সাথে দৃঢ় মনোবল নিয়ে, সচেতনতার সাথে এ সংকট মোকাবেলা করতে নিয়মিতই চট্টগ্রামের মাঠে ময়দানে ছুটে বেড়েচ্ছেন তিনি। ঘুরে বেড়াচ্ছেন চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে, অসহায় মানুষে দরজায়। একই সাথে জনসচেতন সৃষ্টিসহ চট্টগ্রামে ত্রাণ দেয়ার সময় রাজনৈতিক স্বার্থ কিংবা ভোটার না দেখে সমন্বয় করে ত্রাণ দেয়ার আহবান জানিয়েছেন তিনি। এ প্রসঙ্গে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ধারন করে মানব কল্যানে কাজ করছি। রাজনীতির মর্মার্থ হল জনকল্যাণ, সেবা, সৃষ্টিশীলতা এবং গণমানুষের প্রতি ভালবাসা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যেমন দেশের মানুষের জন্য অবিরাম কাজ করেছেন। তেমনি চট্টগ্রামের মানুষের জন্য আমার বাবা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী আমৃত্যু ভালোবেসে কাজ করে গেছেন।

শিক্ষা উপমন্ত্রী নওফেল মধ্যবিত্ত পরিবারের পাশে দাঁড়াতে চালু করেছেন ‘জরুরি সেবা’। যেখানে পরিচয় গোপন রেখে মধ্যবিত্ত পরিবারের সম্মানিত সদস্যরা প্রয়োজনে জরুরি সেবা গ্রহণ করতে পারবেন।
চট্টগ্রামবাসী মনে করেন, বাংলাদেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল মতো মানুষ খুব প্রয়োজন। জাতীয় দুর্যোগে তার মতো মানুষই দিশা হয়ে দাঁড়াবেন।

একটি মানুষ যখন সবাইকে ভালবাসতে শিখবে, সবার কল্যাণে কাজ করে যাবে- জীবনের ক্রান্তিলগ্নে গিয়ে দেখবে মানুষের ভালবাসায় তিনি আকণ্ঠ ডুবে থাকেন। নওফেল সে ভালবাসা পাবারই যোগ্য এক মানুষ। তিনি যেভাবে অসহায় মানুষের জন্য কাজ শুরু করেছেন তা করবার জন্য শক্তি যেন সব সময় অক্ষত থাকে।
প্রসঙ্গত: শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র এবং চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের সভাপতি প্রয়াত এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর বড় ছেলে। ১৯৮৩ সালের ২৬ জুন তিনি চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। রাজনৈতিক যাত্রাও শুরু হয় চট্টগ্রাম মহানগর থেকে। ২০১৪ সালে ৭১ সদস্যের নগর কমিটির নির্বাহী সদস্য করা হয় নওফেলকে। যুক্ত ছিলেন যুব লীগের রাজনীতির সাথে। ২০১৬ সালে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সম্মেলনে তিনি সর্বকনিষ্ঠ সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন। তিনি বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ ও ২৮৬ নং (চট্টগ্রাম-৯) কোতোয়ালী আসন থেকে নির্বাচিত জাতীয় সংসদ সদস্য। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব যেমন পালন করছেন তেমনি উন্নয়ন কাজে পরামর্শকের ভুমিকা পালন করছে তরুণ এই নেতা।
বাংলাধারা/এফএস/টিএম













