২৬ অক্টোবর ২০২৫

করোনার কাছে হেরে গেলেন সাংবাদিক মোনায়েম খান

কক্সবাজার প্রতিনিধি »

পর্যটন উদ্যোক্তা ডালিমের পর এবার করোনার থাবার শিকার হলেন কক্সবাজারের সিনিয়র সাংবাদিক আবদুল মোনায়েম খান।

সোমবার (৭ জুন) বেলা ৩টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। হাসপাতালে সঙ্গে থাকা তার স্ত্রীর ভাই জয়নাল আবেদীন সাংবাদিক মোনায়েম খানের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

সিনিয়র সাংবাদিক আবদুল মোনায়েম খান (৫৪) কক্সবাজার শহরের তারাবনিয়ার ছরা কবরস্থান রোডের মরহুম কানুনগো বদিউল আলমের জ্যেষ্ঠ ছেলে। তিনি ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টার, নিউ এইজ, ডেইলি সান পত্রিকার পর ডেইলি ফিনেন্সিয়াল এক্সপ্রেস’র কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

এ ছাড়াও তিনি কক্সবাজারের স্থানীয় পত্রিকা দৈনিক কক্সবাজার, আজকের দেশ-বিদেশ, দৈনিক বাঁকখালী, দৈনিক দৈনন্দিনসহ একাদিক পত্রিকায় নানা পদে দায়িত্বপালন করেছেন। তিনি সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজার’র সিনিয়র সদস্য। সদাহাস্যজ্বল মিতভাষী মোনায়েম খান সবার সাথে বন্ধুবৎসল আচরণ করতেন বলে অজাত শত্রু হিসেবে দীর্ঘদিন কালিমামুক্ত থেকে পেশাগত দায়িত্ব পালন করে এসেছেন।

তার পারিবারিক সূত্র জানায়, সাংবাদিক আবদুল মোনায়েম খান গত মে মাসের মাঝামাঝি থেকে প্রচন্ড জ্বরে ভুগছিলেন। সাথে তার ছেলে কক্সবাজার সিটি কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র মোহাইমেনও অসুস্থ হওয়া ৩০ মে পিতা-পুত্রের করোনা স্যাম্পল টেস্টে দেয়া হয়। গত ৩১ মে আবদুল মোনায়েম খান ও সন্তান মোহাইমেনের করোনা ‘পজেটিভ’ রিপোর্ট আসে।

আবদুল মোনায়েম খানকে ১ জুন রাতে উখিয়া এনজিও পরিচালিত আইসুলেশন সেন্টারে ভর্তি করা হয়। সেখানেও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় চিকিৎসকদের পরামর্শে গত ৩ জুন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে তাকে চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছিলো। সেখানে শুক্রবার তার শারিরীক অবস্থার উন্নতি লক্ষ্য করা যায়। ওইদিন বিকেলে কক্সবাজারের সহকর্মীদের সাথে ফোনে কথা বলে নিজের স্বাস্থ্যের উন্নতির কথা জানিয়ে নিজের জন্য সবার দোয়াও চান তিনি। এসময় সবার ধারণা ছিল তিনি করোনা কাটিয়ে উঠার পথে রয়েছেন।

কিন্তু শনিবার দিনগত রাত হতে মোনায়েম খানের অবস্থা খুবই সংকটাপন্ন হতে শুরু করে। তাঁর শরীরে অক্সিজেন সিসুরেশনের মাত্রা ৬০-৪০ এ উঠা নামা করছিলো। যা সুস্থ মানুষের ক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবে ৯৩ দরকার।

তারা আরো জানায়, চমেক’র করোনা ওয়ার্ডের রেড জোনে চিকিৎসাধীন থাকা মোনায়েম খানের অবস্থার গুরতর অবনতি হয় রোববার ৭ জুন ভোর থেকে। খবর জেনে কক্সবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আজম নাসিরের সহায়তায় একই হাসপাতালে তার জন্য আইসিইউর ব্যবস্থা করে রোববার বেলা ২টার পর তাকে আইসিইউ-তে নেয়া হয়। আইসিইউ-তে নেয়ার পর পরই সবাইকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে না ফেরার দেশে চলে যান আবদুল মোনায়েম খান।

এদিকে, তার৷ মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর সহকর্মীদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বিভিন্ন হাউজে এক সাথে কাজ করা সহকর্মীগণ নিজেদের অনুভূতি শেয়ার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার মৃত্যুতে বেদনা গাথা শেয়ার করছেন।

শুক্রবার সন্ধ্যায় পর্যটন উদ্যোক্তা ও কক্সবাজার শহরের সচেতন সবার প্রিয় আবু সায়েম ডালিমের মৃত্যুর মতো সাংবাদিক মোনায়েম খানের অকাল মৃত্যুও চরম বেদনাদায়ক বলে উল্লেখ করে আল্লাহর কাছে তাদের উভয়ের জন্য জান্নাতুল ফেরদৌস কামনা করেছেন।

বাংলাধারা/এফএস/টিএম/এএ

আরও পড়ুন