৪ নভেম্বর ২০২৫

করোনার ছোবল বিহারি পল্লীতে; স্থবির বুটিকস কারখানা

ইয়াসির রাফা »

প্রতি বছর ঈদকে কেন্দ্র করে প্রায় ৮০ থেকে ৯০ লাখ টাকার জারদসি, কারচুপি বুটিকসের এক বিশাল ব্যবসা করে থাকে চট্টগ্রাম নগরীর ঝাউতলা এলাকায় বসবাসরত বিহারি জনগষ্ঠি। কিন্তু বর্তমানে চলমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে সকল প্রকার জারদসি, কারচুপির কারখানা বন্ধ, বড় রকমের লোকসানের মুখিমুখি হচ্ছেন এই বিহারি কারিগরেরা। সরেজমিনে গিয়ে এমন পরিস্থিতির কথা জানা গেছে বিহারি পল্লীতে।

বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বসবাসরত মূলত উর্দুভাষী ব্যক্তি, যারা ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে আটকে পরেছিল তারা সাধারণভাবে বিহারি হিসাবে পরিচিত।

সারা বছর ধরে এই বুটিকসের কাজ করলেও তাদের সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়ে থাকে ঈদকে কেন্দ্র করেই। প্রায় ৫০ বছর ধরে ঐতিহ্যগত ভাবে বিহারিরা এই ব্যবসা করে আসছে।

ঝাউতলা এলাকার প্রায় ৫০টি পরিবার এই কাজের সাথে জড়িত, যেখানে বর্তমানে দুইশত লোক কর্মরত আছে, যাদের পরিবারের প্রধান আয় এসে থাকে এই বুটিকসের কাজের মাধ্যমে। নগরীর টেরিবাজার, রিয়াজউদ্দীন বাজারে তাদের সবচে বেশি পরিমাণ অর্ডার হয়ে থাকে বলেও জানায় জারদসি, কারচুপির কারিগরেরা।

খালেদ জাফর পাপ্পু নামের এক কারিগরের সাথে কথা বলে জানা যায়, তিনি দীর্ঘ ২৩ বছর যাবত এই জারদসি, কারচুপির কাজ করে আসছেন। কিন্তু করোনাভাইরাসের সৃষ্ট অবস্থার কারণে কাজ নেই কারও। অর্ডার থাকলেও প্রয়োজনীয় উপাদান না থাকায় কাজ করতে পারছেন না।

তিনি আরও জানায়, তার সারা বছরের মূল আয় আসে এই ঈদের সময়কে কেন্দ্র করে। প্রায় দুই থেকে তিন লাখ টাকার লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছেন তিনি।

আকরাম নামের আরেক কারিগর জানান, আমি ৬ বছর বয়স থেকে পারিবারিকভাবে এই ব্যবসার সাথে জড়িত, প্রায় ২৭ বছর যাবত করে আসছি এই কাজ। কিন্তু এই করোনা অবস্থায় আমার প্রায় তিন লাখ টাকার কাজ করতে পারছি না। সবকিছু বন্ধ। না পারছি ম্যাটারিয়াল এনে কাজ ধরতে, না পারছি কারিগরদের বেতন দিতে। সম্পূর্ণ ঘরে বসা লকডাউনের পর থেকে।

এলাকা সূত্রে আরও জানা যায়, ৫০ টি পরিবার এই ঈদকে কেন্দ্র করে প্রায় ৮০ থেকে ৯০ লাখ টাকার কাজ করে থাকে। কিন্তু এবার কারও এক তৃতীয়াংশ কাজ করাও সম্ভব হয়নি।

মো. আসিফ নামের একজন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অনেক জায়গায় ত্রাণ দিচ্ছে, এসব খরব দেখি। কিন্তু এখনো কারও কাছ থেকে কোন সাহায্য পেলাম না। খুবই খারাপ অবস্থার মাঝে আছি পরিবার নিয়ে। কি করব কিছুই বুঝতে পারছি না।

বাংলাধারা/এফএস/টিএম/এএ

আরও পড়ুন