২৮ অক্টোবর ২০২৫

করোনায় অনিষ্টের মুখে মুহুরী মৎস্য প্রকল্প, লোকসান গুনছেন ব্যবসায়ীরা

শাহ আব্দুল্লাহ আল রাহাত, মিরসরাই »

মিরসরাই উপজেলায় কোভিট ১৯-এর প্রভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছে মৎস্য প্রকল্প ব্যবসায়ীরা। অনেকটা লোকসান মাথায় নিয়ে দিন গুনতে হচ্ছে তাদের।

মিরসরাই এবং উত্তর চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় মৎস্য প্রকল্প হলো মুহুরী মৎস্য প্রকল্প। এটি উপজেলার ওচমান ইউনিয়নের মুহুরী প্রজেক্ট এলাকা সংলগ্ন অঞ্চলে অবস্থিত। এখানে প্রায় ৪ হাজার একরজুড়ে সাড়ে পাঁচ শতাধিক প্রকল্প রয়েছে, যেটি চট্টগ্রামে মানুষের আমিষের চাহিদা মেটাতে প্রায় ৭০ থেকে ৭৫ ভাগ মাছের যোগান দিয়ে থাকে। প্রতিদিন মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত ২ শতাধিক মাছ ভর্তি মিনি ট্রাক ছুটে চলে ফেনী, বাইয়ারহাট, সীতাকুন্ড, পাহাড়তলী, বহদ্দারহাটের আড়তগুলোর দিকে। উল্লেখিত অঞ্চল গুলোর আড়তগুলোতে বেশির ভাগ মাছ সরবরাহ করা হয় এই মুহুরী মৎস্য প্রকল্প থেকে।

মহামারী করোনার প্রভাবে কমে গেছে মাছ সরবরাহ।যেখানে প্রতিনিয়ত ২০০ শতাধিক মিনি ট্রাক ভর্তি মাছ বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হতো সেখানে (২ এপ্রিল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত) এখন মাছ সরবরাহ করে মাত্র ৩৫ থেকে ৪০ মিনি ট্রাক। যার ফলে অনেকটা বড়সড় ক্ষতির দিকে এ মৎস প্রকল্পটি। কেননা প্রতিদিন মাছ বিক্রি করে সে টাকার কিছু অংশ দিয়ে কিনে নিয়ে আসা হতো মাছের খাবার। এখন সেটি আর সম্ভব হয়ে ওঠছে না। ফলে মৎস্য উৎপাদন ও হুমকির মুখে পড়ছে আর এসব প্রকল্পগুলো নিয়মিত মাছ না আসায় ঝিঁমিয়ে গেছে আড়তগুলো।

উপজেলার বারইয়ারহাট পৌর বাজারের ফিশ মার্কেটে প্রায় ৩০ টি আড়ৎ রয়েছে। এখানে দৈনিক মাছ বেচাকেনা হতো প্রায় ৫ টনের কাছাকাছি। সেখানেও এখন ধস নেমে এসেছে। কেননা মাছ বিক্রি নেমে এসেছে ১ টনের নিচে। বাজারে তেমন তেমন পাইকার নেই, নেই মাছের যোগান। এমতাবস্থায় অনেক ব্যবসায়ী বন্ধ রেখেছেন তাদের আড়ৎ।

মিরসরাই উপজেলা আড়ৎ এবং প্রকল্প মিলিয়ে প্রায় ৫শ মৎস্য ব্যবসায়ী রয়েছে যাদের বছরে লেনদেন হয় প্রায় ৫’শ কোটি টাকা। গত কয়েক সপ্তাহ নিয়মিত লেনদেন বাধাপ্রাপ্ত হওয়ার এই বছর বড়সড় লোকসানের আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।

মুহুরী মৎস্য প্রকল্পের ব্যবসায়ী শাহ আলম জানান, গত কয়েক দিনে আড়তগুলোতে মাছের চাহিদা কমে যাওয়ায় পর্যাপ্ত মাছ সরবরাহ করা যাচ্ছে না। এর ফলে মাছ উত্তোলন ও বাঁধার সম্মুখীন হচ্ছে।

বারইয়ারহাট মৎস্য আড়ৎ ব্যবসায়ী আউয়াল বলেন, করোনা প্রভাবে বাজারে তেমন একটা পাইকার নেই, খুচর বিক্রেতারা ও বন্ধ করে দিয়েছে বেচাকেনা।

এ বিষয়ে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা নাসিম আল মাহমুদ বলেন, করোনার প্রভাবে বাজারে সাধারণ ক্রেতা সমাগম না থাকায় এর প্রভাব খুচরা বাজার থেকে আড়ৎ এবং মৎস প্রকল্পগুলোতে গিয়ে প্রভাব ফেলছে। ফলে মাছ সরবরাহ কমে গিয়েছে।

তিনি আরো বলেন, আমরা উদ্যোগ নিচ্ছি বাজারগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখার।

বাংলাধারা/এফএস/টিএম/এএ

আরও পড়ুন