২৮ অক্টোবর ২০২৫

করোনায় ক্ষতিগ্রস্থ ভোক্তাদের জন্য ক্যাবের ১৫ দফা দাবি

বাংলাধারা প্রতিবেদন »  

করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে পুরো দেশ লকডাউনে, আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। এর সাথে মৃত্যুর সংখ্যাও পাল্লাদিয়ে বাড়ছে। করোনা ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় সরকার শিল্পও সেবা খাত, ক্ষুদ্র ও মাজারী শিল্প খাত, রপ্তানী উন্নয়ন তহবিলসহ উৎপাদন খাতে স্বল্প সুদেঋন প্রদানের জন্য ৭২ হাজার ৫০০ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হলেও এদেশের সাধারণ কর্মজীবী, অপ্রাতিষ্ঠানিক কাজে নিয়োজিত, হতদরিদ্র, প্রান্তিক মানুষসহ সর্বস্তরের ক্ষতিগ্রস্থ সাধারণ ভোক্তাদের জন্য কোন প্রণোদনা ঘোষিত হয়নি।

এদিকে সরকারী বেসরকারী ত্রাণ ও সহায়তা বিতরণে নানা অনিয়ম স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতির অভিযোগ ক্রমাগত বাড়ছে। রাজধানী ও বিভাগীয় শহরগুলিতে করোনা পরীক্ষা ও সাধারন চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকলেও কার্যকারিতা খুবই সীমিত। অপরদিকে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে করোনা পরীক্ষা ও চিকিৎসার তেমন কোন ব্যবস্থা ব্যবস্থা না থাকায় দেশব্যাপী স্বাভাবিক চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। ফলে সাধারণ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সকল শ্রেণী-পেশার মানুষ।

এ অবস্থায় করোনার ক্ষয়ক্ষতি থেকে উত্তরণের জন্য স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদী পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য মাননীয় প্রধান মন্ত্রী ও সরকারের কাছে ১৫ দফা দাবিনামা উপস্থাপন করেন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম নগর ও বিভাগীয় নেতৃবৃন্দ। 

সোমবার সংবাদমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে ক্যাব নেতৃবৃন্দ উপরোক্ত দাবি জানান। 

ক্যাব চট্টগ্রাম কর্তৃক সাধারন ভোক্তাদের জন্য উত্থাপিত দাবি সমুহের মধ্যে আছে- দেশের দুঃস্থ, অতি দরিদ্র থেকে দরিদ্র, শহরের বস্তিবাসী, কর্মহীন ৮০ লক্ষ পরিবারের জন্য আগামি জুলাই ২০২০ পর্যস্ত খাদ্য বিতরণ নিশ্চিত করা; প্রান্তিক জনগোষ্ঠি, অপ্রাতিষ্ঠানিক কাজে নিয়োজিত ও স্বল্প আয়ের জনগোষ্ঠির জন্য অবিলম্বে সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের বাজেট বরাদ্দ করা এবং ১০ টাকায় চাল বিক্রিসহ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত সকল কার্যক্রমের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা; দেশে কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তার মূল যোগানদাতা কৃষক, কৃষিখাত, মৎস্য, প্রাণী সম্পদ খাতের জন্য পৃথক প্রণোদনার প্যাকেজ ঘোষণা করা; টিসিবির আওতায় খোলা বাজারে পণ্য বিক্রির আওতা জেলা-উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে বৃদ্দি করা, টিসিবি ও ডিলারদের কার্যক্রম নাগরিক পরীবিক্ষনের আওতায় আনা।

রাজধানীর ও বিভাগীয় শহরের পাশাপাশি জেলা-উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে করোনা পরীক্ষা ও চিকিৎসা নিশ্চিত করা এবং সর্বস্তরে সাধারণ চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা; করোনা মোকাবেলায় বেসরকারী ক্লিনিক ও হাসপাতালগুলিকে অর্ন্তভুক্ত করা, করোনা সংক্রমন চলাকালীন সময়ে চিকিৎসা সেবায় জড়িত সকল চিকিৎসক ও কর্মীদের জন্য সুরক্ষা নিশ্চিত ও রাস্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদানের ব্যবস্থা করা; দেশের কর্মহীন, প্রান্তিক ও অতিদরিদ্র জনগোষ্ঠীর ৪০ লক্ষ পরিবারের খাদ্য ও পুষ্টি নিশ্চিত করার জন্য দুর্যোগ পরবর্তী সময়ে রেশনিং ব্যবস্থা চালুর ব্যবস্থা করা; ত্রাণ, সামাজিক সুরক্ষা, খাদ্য, চিকিৎসা, প্রণোদনাসহ সকল সরকারি-বেসরকারি সহায়তার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত ও নাগরিক পরীবিক্ষন জোরদার করতে বিতরনের সকল পর্যায়ে দেশের ভোক্তাদের প্রতিনিধিত্বকারী প্রতিনিধি হিসাবে ক্যাব’র প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা।

ত্রাণ, প্রণোদনা ও অন্যান্য সরকারী-বেসরকারী সহায়তা প্রদানে খাদ্য উপকরণের পরিবর্তে নগদ সহায়তা প্রদানের ব্যবস্থা করা; দরিদ্র সীমার নীচে বসবাসকারী ৩ কোটি মানুষকে আগামি ৬ মাসের জন্য ১০-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিনা সুদে ব্যাংক থেকে আপদকালীন জরুরী ঋন সহায়তা প্রদান করা; দেশের সরকারী-বেসরকারী সকল শিল্প, কলকারখানা. শিল্প, গার্মেন্টস, অফিস-আদালতে কর্মী ছাটাই, বেতন-বোনাস কমানো ০১ বছরের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষনা করা; বাড়ীভাড়া, গ্যাস, পানি, বিদ্যুত বিল মওকুপ এবং আয়কর, সিটি করপোরেশনের হোল্ডিং ট্যাক্স খাতে রেয়াতি সুবিধা প্রদান করা; 

ব্যাংকেরক্রেডিট কার্ডের সুদ, ফিস ও সার্ভিসচার্জআদায় আগামি ১২ মাসের জন্য স্থগিত রাখা; ডিজিটাল সেবা, হটলাইন সেবাগুলির কার্যকারিতা ও গ্রাহক ভোগান্তি রোধে কেন্দ্রিয় ও জেলা পর্যায়ে তদারকি জোরদারেকমিটি গঠন করা; করোনা মোকাবেলায় সকল পর্যায়ে গঠিত কমিটির কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতে ভোক্তাদেরজাতীয় প্রতিনিধিত্বকারী প্রতিনিধি হিসাবে ক্যাব এর প্রতিনিধি অর্ন্তভুক্ত করা অন্যতম।

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজেরহোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব মহানগরেরসভাপতি জেসসিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, যুগ্ন সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম ও ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান।

বাংলাধারা/এফএস/টিএম

আরও পড়ুন