মহামারি করোনাভাইরাসের এই মহাসংকট পরিস্থিতিতে যেসব ডাক্তার চিকিৎসা না দিয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন তাদের নামের তালিকা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে তারা ডাক্তারি করতে পারবে কিনা সেটাই চিন্তা করতে হবে।
মঙ্গলবার (৭ এপ্রিল) চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের জেলাসমূহের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে মতবিনিময়ের সময় প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
সকাল ১০টায় গণভবন থেকে এই ভিডিও কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউস অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র কেন মারা যাবে। এই রোগী কোন কোন জায়গা গিয়েছে সেখানে কোন কোন ডাক্তারের দায়িত্ব ছিল আমি তাদের নামটাও জানতে চাই। কারণ ডাক্তারি করবার মতো, চাকরি করবার মতো তাদের সক্ষমতা নেই। তাদের চাকরি থেকে বের করে দেওয়া উচিত। আমি মনে করি।
প্রধামন্ত্রী বলেন, একজন রোগী এলে চিকিৎসা করাবে তার জন্য নিজেকে সুরক্ষিত করা যায়। অ্যাপ্রোন পরে নেন, মুখে মাস্ক লাগান, গ্লভস নেন, স্যানিটাইজার ব্যবহার করেন, হাত ধোন কিন্তু রোগী দেখেন। রোগী কেন ফেরত যাবে? আর একজন রোগী নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করে সে রোগী কেন মারা যাবে।
শেখ হাসিনা বলেন, মনে রাখতে হবে এটা তাদের জন্যই করবো যারা এই করোনা ভাইরাস শুরু হওয়ার পর থেকে কাজ করেছেন। জানুয়ারি থেকে করোনা ভাইরাস শুরু। মার্চ থেকে এটা ব্যাপকভাবে দেখা দেয়। এই মার্চ মাসে যারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেছেন এই বিমাটা তাদের জন্য। যারা কাজ করেননি, নিজেদের সুরক্ষার জন্য পালিয়ে আছেন, যেখানে দ্বারে দ্বারে ঘুরে চিকিৎসা পাননি, অন্য সাধারণ রোগীরাও চিকিৎসা পাননি তাদের জন্য এই প্রণোদনা না। তারা এটা পাবেন না।
তিনি আরও বলেন, বরং ভবিষ্যতে তারা ডাক্তারি করতে পারবে কিনা সেটাই চিন্তা করতে হবে। ডাক্তার আমাদের প্রয়োজন আছে এটা নিয়ে আমাদের কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু এই মানসিকতা থাকবে কেন, মানবতাবোধ হারাবে কেন।
অনুষ্ঠানে চিকিৎসাসেবা দিতে গিয়ে এবং করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ প্রতিরোধে দায়িত্বপালনকালে কেউ আক্রান্ত হলে পদমর্যাদা অনুযায়ী ৫-১০ লাখ টাকা এবং মারা গেলে ২৫-৫০ লাখ টাকার স্বাস্থ্যবিমা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য প্রত্যক্ষভাবে নিয়োজিত প্রজাতন্ত্রের অন্য কর্মচারীদের জন্য একটা বিশেষ ইন্স্যুরেন্স সুবিধা দেওয়ার ঘোষণাও দেন তিনি।
চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষায় সরকারের নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা জানি এটা আতঙ্ক। সবাই সুরক্ষিত থাকবে এটা সত্য। কিন্তু একজন ডাক্তার তার একটা দায়িত্ব থাকে। তাদের সুরক্ষিত করার জন্য যা যা করা দরকার আমরা তা করে যাচ্ছি। আমরা আরও করবো। সেক্ষেত্রে আমরা কোনো কার্পণ্য করছি। সারা বিশ্বব্যাপী এই সমস্যা।
ভিডিও কনফারেন্সে গণভবনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া।
বাংলাধারা/এফএস/টিএম/এএ