২৬ অক্টোবর ২০২৫

করোনা বিস্তাররোধে কক্সবাজারেও ঈদ বাজারে মার্কেট খুলছে না

সায়ীদ আলমগীর, কক্সবাজার »

করোনার ভয়াবহতা রোধে কক্সবাজারেও ঈদুল ফিতর পর্যন্ত মার্কেট, শপিংমল, দোকান না খোলার বিষয়ে ঐকমত্য ঘোষণা করেছেন ব্যবসায়ীরা।

শনিবার (৯ মে) কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি ও কক্সবাজার মার্কেট ওনার্স এসোসিয়েশনের যৌথ বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

সভায় শহরের ১৮টি মার্কেটের মালিক অংশ নেন। পাশাপাশি বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি কক্সবাজার শাখা এবং টেকনাফ, উখিয়া, চকরিয়া, ঈদগাঁওসহ অন্যান্য উপশহর গুলোতে থাকা ব্যবসায়ী সমিতিও বৈঠক করে একই সিদ্ধান্তের কথা প্রচার করেছেন।

কক্সবাজার মার্কেট ওনার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি ও শহরের পূর্ব বাজারঘাটার সৈকত টাওয়ারের সত্বাধিকারী মাহবুবুর রহমান বলেন, সভার সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে কেউ নিজ আগ্রহে কক্সবাজারে মার্কেট, শপিংমল, দোকান কেউ খোলা রাখতে চাইলে সম্পূর্ণ নিজ দায়িত্বে সামাজিক ও শারীরিক দুরত্ব বজায় রেখে, সরকারি বিধিমালা মেনে, নিজ দায়িত্বে সুরক্ষিত থেকে কক্সবাজারে মার্কেট, শপিংমল, দোকান খুলতে হবে। কক্সবাজার মার্কেট ওনার্স এসোসিয়েশন এবিষয়ে কোন দায় দায়িত্ব নেবেনা।

শহরের আবু সেন্টারস্থ কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির কার্যালয়ে মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় চেম্বার সভাপতি আবু মোরশেদ চৌধুরী খোকা, ওনার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নুরুল করিম, সরওয়ার রোমন, পারভেজ চৌধুরী, লোকমান মাস্টার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

এদিকে, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির কক্সবাজার জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম মুকুল জানিয়েছেন, করোনার ভয়াবহতা রোধে সকল ধরণের দোকানপাট বন্ধ রাখতে একমত হয়েছেন কক্সবাজারের ব্যবসায়ীগণ। দোকান ভাড়া মওকুফের ব্যাপারে মার্কেট মালিকদের সাথে আলাপের ফলাফলের উপর নির্ভর করছে মার্কেট খোলা বা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত। মার্কেট মালিকদের কাছে লিখিত আবেদনের ফলাফলের উপর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে ঐকমত্য পোষণ করেছেন তারা।

শনিবার (৯ মে) বিকালে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি কক্সবাজার জেলা শাখার জরুরি সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। নির্দেশনা অমান্য করে যারা দোকান খুলবেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্তও নিয়েছে ব্যবসায়ী নেতারা। শহরের বিভিন্ন মার্কেটের দোকানদার, ব্যবসায়ীদের নিয়ে শহরের বড়বাজার নূর মোহাম্মদ কমপ্লেক্সে গ্রাউন্ডে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় সংগঠনের সভাপতি রফিক মাহমুদ বলেন, আমরা অনেকেই সরকারী সিদ্ধান্ত মানছি না। নিজেদের জীবনের চেয়ে অর্থকে প্রাধান্য দিচ্ছি। যে কারণে আমরা ঝুঁকির দিকে যাচ্ছি। আমাদের কোন কর্মচারী প্রণোদনা পায় নি এটা ঠিক। অনেক ব্যবসায়ী কষ্টে রয়েছে। এরপরও নিজেদের স্বার্থে রোববার (১০ মে) থেকে অন্তত আর কয়েকটা দিন দোকান বন্ধ রাখতে ব্যবসায়ীদের অনুরোধ জানান রফিক মাহমুদ।

সভায় স্বাগত বক্তব্যে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম মুকুল বলেন, শহরে ২০ হাজারের অধিক ব্যবসায়ী রয়েছেন। তারা এখনো কোন ধরণের সাহায্য সহযোগিতা পায় নি। শ্রমিক-কর্মচারীদের মানবিক দিক বিবেচনায় ত্রাণ সহায়তা দিয়ে তাদের পাশে থাকতে জেলা প্রশাসন, পৌর মেয়রসহ সংশ্লিষ্টদের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।

সাংগঠনিক সম্পাদক নাছির উদ্দীন সুমনের সঞ্চালনায় এতে আরো বক্তব্য রাখেন, কার্যকরী সভাপতি নজরুল ইসলাম, সিনিয়র সহসভাপতি মিজানুর রহমান, সহসভাপতি মোহাম্মদ আলম সওদাগর, মাহমুদুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ ফরহাদ, ব্যবসায়ী নেতা হাবিবুর রহমান, জাহেদুল ইসলাম, জিল্লুর রহমান কাজল, অলি আহমদ জিয়া, মুহাম্মদ ফরিদ, কামাল উদ্দিন, তৌহিদুল ইসলাম, মোবারক হোসেন, আবদুল মান্নান, জহিরুল ইসলাম, মহি উদ্দিন ভুট্টো, সাদ্দাম হোসেন, মোহাম্মদ ওসমান, মোহাম্মদ হাসনাত, আবু আহমদ প্রমূখ।

মার্চ থেকে অন্তত তিন মাসের ভাড়া মওকুফের ব্যাপারে মার্কেট মালিকদের সাথে আলোচনা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে সভায়। সভায় জানানো হয়েছে- ভাড়া মওকুফ চেয়ে মার্কেট মালিকদের লিখিত দরখাস্ত করবে ব্যবসায়ীরা। যার যার মার্কেটের দায়িত্ব তাকে নিতে হবে। ভাড়া মওকুপের উপর নির্ভর করছে মার্কেট খোলা আর বন্ধ রাখা। কারণ দোকানিরা এমনতি লোকসানে রয়েছে। বসা অবস্থায় কর্মচারিদের বেতন দিতে হচ্ছে। দেখানে দোকান ভাড়াও দিতে হলে ধার-দেনা ও ঋণ বাড়বে ব্যবসায়ীদের। তাই প্রশাসন যদি ভাড়া মওকুপের ব্যবস্থা করতে পারেন তবে, ব্যবসায়ীরা দ প্রয়োজনে ঈদের আগে পর্যন্ত দোকান বন্ধ রাখবে বলে অভিমত ব্যবসায়ীদের।

অপরদিকে, উখিয়ার কোর্টবাজার দোকান মালিক সমবায় সমিতি লিমিটেড সভাপতি আবু ছিদ্দিক সওদাগর জানান করোনা থেকে এলাকাবাসীকে নিরাপদ রাখতে সব ধরণের দোকান-পাট ঈদ পর্যন্ত বন্ধ রাখতে সিদ্ধান্ত হয়েছে। একই কথা জানান টেকনাফ বাস স্টেশন বণিক সমিতির সভাপতি এহতেশামুল হক। তেমনি ভাবে চকরিয়া, পেকুয়া, মহেশখালী, রামু, ঈদগাঁও এবং কুতুবদিয়ার মার্কেটগুলোও বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে সেখানকার ব্যবসায়ী সমিতিগুলো এমটি জানিয়েছে সূত্র।

বাংলাধারা/এফএস/টিএম/এএ

আরও পড়ুন