দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আবারও বাড়তে পারে এমন আশঙ্কায় এবারের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীদের জন্য কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।আগামী ২৬ জুন শুরু হতে যাওয়া এই পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরতে হবে বলে জানিয়েছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি।
সোমবার বিকেলে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এবং কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার বলেন, “সকলকে পরীক্ষাকেন্দ্রে স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে অনুসরণ করতে হবে।”
পরীক্ষা কেন্দ্রের জন্য স্বাস্থ্যবিধির নির্দেশনা:
মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক: পরীক্ষার্থী, শিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট সবার জন্য মাস্ক পরে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হবে।
হ্যান্ড স্যানিটাইজার: প্রতিটি কেন্দ্রে প্রবেশপথে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
পরিচ্ছন্নতা: ডেঙ্গু প্রতিরোধে কেন্দ্রের ভেতর ও আশপাশ এলাকায় নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে।
মশা নিধন: পরীক্ষা শুরুর আগে স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় মশা নিধনের ওষুধ স্প্রে করতে হবে।
আসন বিন্যাস: পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীদের মাঝে অন্তত ৩ ফুট দূরত্ব রেখে বসাতে হবে।
মেডিকেল টিম: প্রতিটি কেন্দ্রে সক্রিয় মেডিকেল টিম রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং সিভিল সার্জন বা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখতে বলা হয়েছে।
অভিভাবকদের জমায়েত নিরুৎসাহিত: কেন্দ্রের বাইরে ভিড় এড়াতে স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় অভিভাবকদের জমায়েত নিরুৎসাহিত করতে হবে।
করোনা পরিস্থিতি ও সতর্কতা
ভারতসহ প্রতিবেশী কয়েকটি দেশে করোনার নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ায় বাংলাদেশেও সতর্কতা জারি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
গত ৪ জুন জারি করা নির্দেশনায় সংক্রামণ রোধে মাস্ক পরা, হাত ধোয়া, তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখা, নাক-মুখে স্পর্শ না করা ও হাঁচি-কাশির সময় মুখ ঢাকার মতো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরও স্কুল-কলেজগুলোকে এসব স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছে।
দেশে করোনা পরিস্থিতি
চলতি বছরে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৮৮ জন, এর মধ্যে জুন মাসের প্রথম ১৪ দিনেই আক্রান্ত হয়েছেন ১৩০ জন।
এ বছর কোভিডে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হয় ২০২০ সালে। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত দেশে ২০ লাখ ৫১ হাজারের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ২৯ হাজার ৫০০ জন।
সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছিল ২০২১ সালে— ২০ হাজার ৫১৩ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা ভারতসহ সংক্রমণ প্রবণ দেশগুলোতে অপ্রয়োজনে ভ্রমণ না করার পরামর্শ দিয়েছে। একই সঙ্গে স্থলবন্দর ও বিমানবন্দরগুলোতে স্ক্রিনিং জোরদার করা হয়েছে।