রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদের পানি কমতে থাকায় দেশের একমাত্র জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদনও সর্বনিম্ন পর্যায়ে নামতে শুরু করেছে। ফলে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির সক্ষমতার তুলনায় উৎপাদন কম হচ্ছে । চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসজুড়েই ৪০ মেগাওয়াট করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে দেশের সবচেয়ে সাশ্রয়ী বিদ্যুৎকেন্দ্রটি। যেখানে এই জল বিদ্যুৎকেন্দ্রটির পাঁচটি ইউনিটে দৈনিক উৎপাদনের সক্ষমতা ২৪২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ।
কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, কাপ্তাই হ্রদে বর্তমানে যে পরিমাণ পানি রয়েছে, সে পানি দিয়ে একটি ইউনিটে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। আরও বেশি উৎপাদনের সুযোগ থাকলেও সারা বছর ধরে বিদ্যুৎ উৎপাদন অব্যাহত রাখতে কাপ্তাই হ্রদের পানি সংরক্ষণে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমানো হয়েছে। এছাড়া আশঙ্কা করা হচ্ছে আগামী মার্চ–এপ্রিলের দিকে কাপ্তাই হ্রদের পানি আরও কমতে থাকলে বিদ্যুৎ উৎপাদনেও ভাটা পড়বে। সেক্ষেত্রে পানিস্বল্পতায় উৎপাদন নামতে পারে তলানিতে ২৫–৩০ মেগাওয়াটে।
এদিকে, কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ (কন্ট্রোল রুম) সূত্র বলছে, কাপ্তাই হ্রদের পানির পরিমাপের রুল কার্ড (সময়সূচিভিত্তিক পানি ওঠানামার মাপ) অনুযায়ী রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদে পানি রয়েছে ৮৯ দশমিক ৫ মিনস্ সি লেভেল (এমএসএল)। যদিও স্বাভাবিকভাবে পানির থাকার কথা ৯৩ দশমিক ৯০ এমএসএল। রুল কার্ডের হিসেবে বর্তমানে হ্রদে সাড়ে ৪ এমএসএল পানি কম রয়েছে। তবে আবহাওয়ার অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চল বা রাঙামাটি জেলার উপর দিয়ে বড় ধরনের বৃষ্টিপাত না হওয়ার সম্ভাবনা না থাকায় কাপ্তাই হ্রদের পানি বাড়ার সুযোগ না থাকায় বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ার সম্ভাবনাও নেই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক (তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী) এটিএম আব্দুজ্জাহের বলেন, ‘কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিটের মধ্যে বর্তমানে একটি ইউনিট (১নং জেনারেটর) দিয়ে উৎপাদন রাখা হয়েছে। এক ইউনিটে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে ৪০ মেগাওয়াট। কাপ্তাই হ্রদের পানি কমতে থাকায় আপাতত আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর সুযোগ নেই। এর চেয়ে বিদ্যুৎ কমানোর পরিকল্পনাও আপাতত নেই, যদি বৃষ্টিপাত না হয়।’