৮ ডিসেম্বর ২০২৫

কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা পারমিস সাউথ ইস্ট এশিয়া লিমিটেডের

শাহ আব্দুল্লাহ আল রাহাত  »

ঢাকা কাস্টমস বন্ড এবং কমিশনারেটের উপ-কমিশনার এর স্বাক্ষর জালিয়াতি করে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান পারমিস সাউথ ইস্ট এশিয়া লিমিটেড প্রায় ২ কোটি ৪৪ লক্ষ টাকার রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করে। তাদের মনোনীত সি এন্ড এফ এজেন্ট লিরা ইন্টারন্যাশানালের মাধ্যমে এই জালিয়াতির চেষ্টা করা হয়।

গত ১৮ জুলাই ৪ টি চালানে পণ্য খালাসের লক্ষে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. ইব্রাহীম এর কাছে বিল অফ এন্ট্রি দাখিল করা হয়। এসময় আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের মনোনীত সি এন্ড এফ এজেন্ট লিরা ইন্টারন্যাশানালের কর্মকর্তা রিটন চৌধুরী ডকুমেন্ট গুলো প্রদান করেন। তবে বন্ড প্রাপ্যতা শিটে ঢাকার কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটের ডিপুটি কমিশনার কাঞ্চন রানী দত্তের সাক্ষর দেখে সন্দেহ করেন রাজস্ব কর্মকর্তা মো. ইব্রাহীম। এরপর বাকি চালান গুলোর সাথে এই সাক্ষরটি মিলানো শুরু করেন তিনি। বিষয়টি বুঝতে পেরে সি এন্ড এফ এজেন্ট কর্মী রিটন চৌধুরী ২ ঘন্টা পর টেবিল থেকে ফাইলগুলো নিয়ে পালাতে চেষ্টা করেন। পরে হল রুমে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের অন্যান্য কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় তাকে আটক করে পুলিশে হস্তান্তর করা হয়।

এই জালিয়াতির মাধ্যমে আমিদানকারক প্রতিষ্ঠান পারমিস সাউথ ইস্ট এশিয়া লিমিটেড আমদানিকৃত ৫৫ হাজার ৬০৯ কেজি তৈরী পোশাক শিল্পের বিভিন্ন কাঁচামাল খালাস নিতে চেষ্টা করে। যেখানে শুল্কমূল্য ছিলো প্রায় ২ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা। এছাড়া এই প্রতিষ্ঠানটি জালিয়াতির মাধ্যমে ভূয়া প্রাপ্যতা শিট দাখিল করে আরো ৩ টি চালান খালাস করে। যেখানে রাজস্ব ছিলো প্রায় ৬৮ লক্ষ ২৪ হাজার ৪৫১ টাকা। আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানটি আরো ৪ টি চালান জালিয়াতির মাধ্যমে খালাসের প্রস্তুতি নিচ্ছিলো বলে জানায় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।

জালিয়াতির সাথে সম্পৃক্ত আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান পারমিস সাউথ ইস্ট এশিয়া লিমিটেডের চেয়ারম্যান ইভার্ট জান ব্যারেন যিনি নেদারল্যান্ডর নাগরিক। ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফতাব খান, পরিচালক হিসেবে রয়েছেন রিসাত খান; যারা করোনা পরিস্থিতির কারণে বর্তমানে আমেরিকায় অবস্থান করছেন।

এই জালিয়াতির বিষয়ে চট্টগ্রাম কাস্টমসের হাউসের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. ইব্রাহীম বাংলাধারাকে জানান,‘আমি সাক্ষর দেখে জালিয়াতির বিষয়টি বুঝতে পারি। এই ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান পারমিস সাউথ ইস্ট এশিয়া লিমিটেড এবং সি এন্ড এফ এজেন্ট লিরা ইন্টারন্যাশানাল এর বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম বন্দর থানায় একটি এজাহার দায়ের করা হয়েছে।’

বিষয়টি জানতে পারমিস সাউথ ইস্ট এশিয়া লিমিটেডের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা বাংলাধারাকে জানান, বিষয়টি নিয়ে আমাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আপনার সাথে কথা বলবেন। কিন্তু এই বিষয়ে আর কিছু জানায় নি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানটি। অন্যদিকে সি এন্ড এফ এজেন্ট লিরা ইন্টারন্যাশানালের সাথে মোবইল ফোনে বারবার সংযোগ প্রদানের চেষ্টা করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

এই বিষয়ে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের কমিশনার ফখরুল আলম বাংলাধারাকে জানান, ‘জালিয়াতির এই ঘটনায় সি এন্ড এফ এজেন্টের লাইন্সেস স্থগিত করা হয়েছে এবং ঘটনায় জড়িত আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ও সি এন্ড এফ এর বিরুদ্ধে ফৌজাদারি আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

বাংলাধারা/এফএস/এআর

আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও

সর্বশেষ