২৮ অক্টোবর ২০২৫

কোরবানকে ঘিরে চলছে ছুরি-বটিতে শান

বাংলাধারা প্রতিবেদন »

দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদুল আজহা। আর মাত্র কিছুদিন পরেই কোরবানির ঈদ। এই ঈদের অন্যতম কাজ হচ্ছে পশু জবাই করা। ঈদ-উল আজহাকে সামনে রেখে পশু জবাইয়ের সরঞ্জাম প্রস্তুত করছেন নগরীর কামার শিল্পের কারিগররা। পাশাপাশি জেলার লোহাগাড়া, সাতকানিয়া, চন্দনাইশ, আনোয়ারা, বাঁশখালী, পটিয়া, বোয়ালখালী, সন্দ্বীপ, রাউজান, রাঙ্গুনিয়া, ফটিকছড়ি, সীতাকুণ্ড ও মিরসরাই উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারগুলোর সব কামারপল্লীতে চলছে ছুরি-বটি তৈরির কাজ। তবে প্রতিবারের মত এ বছর তেমন একটা ব্যস্ততা নেই কারিগরদের।

কয়লার দগদগে আগুনে লোহাকে পুড়িয়ে পিটিয়ে তৈরি করছেন সব ধারালো সামগ্রী। তবে এসব তৈরিতে এখনো আধুনিকতার কোন ছোঁয়া লাগেনি। পুরানো সেকালের নিয়মেই চলছে আগুনে পুড়ে লোহা হতে ধারালো সামগ্রী তৈরির কাজ।

মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসবের অন্যতম হচ্ছে ঈদুল আজহা। আর এই ঈদে মুসলিম ধর্মের অনুসারীরা আল্লাহকে খুশি করতে পশু জবাই করে থাকে। এই পশু জবাইয়ের জন্য প্রয়োজন হয় বিভিন্ন ধরনের সরঞ্জামাদি। মাংস কাটা এবং কোরবানির পশু জবাই করার বিভিন্ন ধাপে ছুরি, দা, চাপাতি এসব ব্যবহার করা হয়। ঈদের বাকি আর এক সপ্তাহ। তাই পশু কোরবানিকে কেন্দ্র করে কামার পল্লীগুলো ছুরি-বটি বানাতে ব্যস্ত।

দগদগে আগুনে গরম লোহায় ওস্তাদ-সার্গেদের পিটাপিটিতে মুখর হয়ে উঠেছে কামার পল্লীগুলো। প্রস্তুত করছেন পশু জবাইয়ের সামগ্রী। ঈদে শত শত গরু, খাসি, ভেড়া, মহিষ ইত্যাদি পশু কোরবানি করা হয়ে থাকে। এসব পশু জবাই থেকে শুরু করে রান্নার জন্য চূড়ান্ত প্রস্তুত পর্যন্ত দা-বঁটি, ছুরি, চাপাতি ইত্যাদি ধাতব হাতিয়ার আবশ্যকীয় হয়ে যায়। ঈদের আগেই পশু জবাই করার ছুরি, চামড়া ছাড়ানোর ছুরি, চাপাতি, পস্টিক ম্যাট, চাটাই, গাছের গুঁড়িসহ সবকিছু প্রস্তুতি রাখতে হয়।

ইস্পাতের চাপাতি কেজিপ্রতি ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত দাম হাঁকাচ্ছেন বিক্রেতারা। বিভিন্ন ধরনের ছুরি ৫০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত দাম চাইতে দেখা গেছে। হাড় কাটা দা ২০০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হতে দেখা গেছে। এ ছাড়া কোপ ছুরি ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।

ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এখনো পুরোদমে বিক্রি শুরু হয়নি। আগে মানুষ গরু কিনবে পরে ছুরি-চাপাতিসহ অন্যান্য সরঞ্জাম কিনবে।

কামাররা জানায়, এ পেশায় অধিক শ্রম, জীবিকা নির্বাহে কষ্ট হলেও শুধু বাপ-দাদার ঐতিহ্য ধরে রাখতে এ পেশাটিকে তারা এখনও আঁকড়ে ধরে আছেন। বিভিন্ন সময় এসবের চাহিদা কম থাকলেও কোরবানির পশুর জন্য বেশি প্রয়োজন হওয়ায় সকলেই এখন ছুটছেন কামারদের কাছে। কামাররা এই ঈদ মওসুম ছাড়া কাস্তে, হাঁসুয়া, পাসুন, বাঁশিলা, কুড়ালও তৈরি করে থাকেন।

কয়েকজন ক্রেতা জানান, কোরবানীর ঈদের আর সপ্তাহখানেক বাকি। তাই আগেই পশু জবাইয়ের সরঞ্জাম কেনার কাজটি সেরে ফেলছেন। তবে অন্য বছরের চেয়ে এবার ছুরি, চাকু, কাটারির দাম একটু বেশি বলে জানান তারা। লোহার পাশাপাশি স্টিলের ছুরি, চাকুও বিক্রি হয়।

বাংলাধারা/এফএস/টিএম

আরও পড়ুন