কক্সবাজারের উখিয়ার ক্যাম্প থেকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া মো. রায়হান (৪) নামে এক রোহিঙ্গা শিশুকে তিনদিন পর উদ্ধার করেছে উখিয়া থানা পুলিশ। এ সময় অপহরণকারী চক্রের তিন সদস্যকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) ভোরে উখিয়া-টেকনাফের মাঝামাঝি পাহাড়ি ঢালুতে অভিযান চালিয়ে অপহরণ চক্রের সদস্যদের আটক করা হয়। পরবর্তীতে তাদের দেওয়া তথ্য মতে টেকনাফের মুছনি ক্যাম্পে চক্রের নারী সদস্যের কাছ থেকে অপহৃত শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত তিনজন হলেন, টেকনাফের মোছনী রেজিষ্টার্ড ক্যাম্প-২৬ এর সি ব্লকের মো. আমিনের ছেলে সাদেক হোসাইন (২৫), মেয়ে রোকসানা (১৫) এবং একই ক্যাম্পের দিল মোহাম্মদের ছেলে আমির ফয়সাল (২৩)। তাদের মধ্যে অপহরণ চক্রের মূল হোতা সাদেক হোসেন জামতলি বাজার সংলগ্ন জহুর আলমের বাসায় ভাড়া থাকতো।
রোবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার উখিয়া (সার্কেল) মোহাম্মদ রাসেল বলেন, গত ৩০ আগস্ট সকাল ১১টার দিকে অপহরণ চক্রের হোতা সাদেক ও ফয়সাল রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১৬ থেকে ৪ বছরের এক শিশুকে ২০ টাকার লোভ দেখিয়ে অপহরণ করে টেকনাফের মুছুনী রেজিস্টার্ড ক্যাম্পের পিছনে দুর্গম পাহাড়ে নিয়ে যায়। তার শিশুটির নির্যাতন চালিয়ে তার বাবা-মাকে কান্নার শব্দ শুনিয়ে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে। টাকা না দিলে শিশুটিকে মেরে ফেলার হুমকি দেন তারা।
এমতাবস্থায় কোনো উপায় না পেয়ে উখিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন ভিকটিমের মা রেহেনা বেগম। এরপর তথ্য প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জড়িতদের গ্রেপ্তারের উদ্দেশ্যে উখিয়া ও টেকনাফ থানার চৌকস আভিযানিক দল দুর্গম পাহাড়ে ঢালে বিভিন্ন খুপরি ঘরে শিশুটির সন্ধানে অভিযান চালায়। দিনের বেলা ড্রোনের মাধ্যমে পাহাড়ের উপর থেকে অনুসন্ধান করা হয় দুর্বৃত্তদের অবস্থান।
অবশেষে রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) ভোররাতে সাড়াশি অভিযান চালিয়ে ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী সাদেককে জামতলী থেকে গ্রেফতার করা হয় এবং তার দেখানো মতে মুছুনী ক্যাম্পের সি ব্লক থেকে অপহরণ চক্রের সদস্য তার বোন রোকসানার কাছ থেকে রায়হানকে উদ্ধার করা হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরও বলেন, রায়হানের বাবা-মা রোহিঙ্গাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে ৪৫ হাজার টাকা ৭০০ টাকা মুক্তিপণ জোগাড় করেছিল। সেই টাকা দিতে চাইলে ওই টাকায় তারা রায়হানকে ছেড়ে দিতে রাজিও হয়নি।
এদিকে, জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা সম্পূর্ণ ঘটনা স্বীকার করেছেন বলে উল্লেখ করেন পুলিশের এ কর্মকর্তা। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সামনের দিনেও অপরাধি চক্রের বিরুদ্ধে পুলিশের জোরালো সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।
				












