৩০ অক্টোবর ২০২৫

খাগড়াছড়ির মহালছড়িতে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে বিদ্যালয় ভবন নির্মান

জসিম উদ্দিন, খাগড়াছড়ি »

খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়ি উপজেলার পূর্ব মানিকছড়ি মূখ এলাকার চিওরঞ্জন কার্বারী পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মানে নিম্নমানের রড, বালু ও সিমেন্ট ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। এ  বিষয়ে স্থানীয় এলাকাবাসী  অভিযোগ করার পরও কোন কাজ না হওয়ায় এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

মহালছড়ি উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা যায়, স্হানীয় সরকার পরিষদ এলজিইডির প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতায় মহালছড়ি উপজেলার পূর্ব মানিকছড়ি মূখ এলাকার চিওরঞ্জন কার্বারী পাড়া সরকারি  প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনটি ৪৬ লাখ ৭৩হাজার চারশত টাকা ব্যয়ে একটি একতলা ভবন  নির্মানের কাজ খাগড়াছড়ির ঠিকাদারী প্রতিষ্টান মের্সাস আর্শীবিল্ডার্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়াকর্সফ লটারীর মাধ্যমে পান। চিওরঞ্জন কার্বারী পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের  একতলা ছাদ নির্মান শেষে বর্তমানে দেওয়ালের আস্তরের কাজ চলছে স্থানীয় নিম্নমানের বালু দিয়ে।

বিদ্যালয়ে ব্যাচ ঢালাইয়ের কাজে নিম্নমানের রড ব্যবহার করা হয়েছে এলাকাবাসী অভিযোগ করে আরো বলেন, এরই মধ্যে  বিদ্যালয়ে ছাদ নির্মানের সময় সিলেট বালু ব্যবহারের কথা থাকলে নামমাত্র সিলেট বালু দিয়ে বেশির ভাগ স্থানীয় চেঙ্গীনদীর বালু দিয়ে ছাদ ডালাই দিয়েছেন  তাতে নিম্ম মানের ইট ও খোয়া ব্যবহার করা হয়েছে। ছাদে ১০ মিলি রডের পরিবর্তে কোথাও কোথাও ৬ মিলি রড দেওয়া হয়েছে। কলামে রড বান্ডিংয়ে যে পরিমান রিং দেওয়ার কথা তা দেওয়া হয়নি। বালু ও খোয়া সাথে নির্ধারিত পরিমানের চেয়ে কম সিমেন্ট মেশানো হয়েছে।

চিওরঞ্জন কার্বারী পাড়া  সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাদ নির্মান শেষে এখন দেওয়াল গাথুনির কাজ চলছে। এতেও নিম্ম মানের ইট ব্যবহার করা হচ্ছে। কিছু কিছু ইট এতই খারাপ যে, আঙ্গুল দিয়ে ডলা দিলে ঝুরঝুর করে ইটের অংশ খসে পড়ছে।

এ বিষয়ে চিওরঞ্জন কার্বারী পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মানবিন্দু চাকমা  বলেন, নিম্নমার্নের বালু,সিমেন্ট, রড  দিয়ে কাজ করা, সিমেন্ট কম দেওয়া, সহ বিভিন্ন অসঙ্গতি বিষয়ে অনেকবার তিনি উপজেলা প্রকৌশলী ও জেলার প্রকৌশলী ঠিকাদারকে একাধিক বার বলার পরেও কাজ হয়নি। বিষয়টি মহালছড়ি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে  অবহিত করেছি।

স্থানীয় এলাকাবাসী ও  বিদ্যালয়ের নির্মানকাজের প্রথম দিকে মিস্ত্রীর কাজ করেন রিপন চাকমা। তিনি জানান, এত নিম্নমানের নির্মান সামগ্রী রড,বালু,সিমেন্ট দিয়ে কাজ করছে আমি দেখে নিজে এলাকার ছেলে হিসাবে নিম্নমানের কাজ থেকে আমি আমার বিবেকের কারনে সরে দাড়িয়েছি।

রিপন চাকমা আরো বলেন, উপরে কলাম ও ছাদ ডালাইয়ের সময় ভাইভেটার মেশিন ছাড়া ছাদডালাই করেন রড গুলো খুবই নিম্নমানের।

এ বিষয়ে ঠিকাদার মো:হুমায়ন সোমবার দুপুরে মুঠোফোনে বলেন, নিম্নমানের উচ্চমানের কাজ বুঝিনা স্থানীয় চেঙ্গী নদীর বালু দিয়ে কাজ করছি। তিনি আরো বলেন আমার কাজ সম্পর্কে কোন অভিযোগ আছে কিনা আমি জানিনা।

ঠিকাদারের পক্ষে সাফাই গেয়ে মহালছড়ি  উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপজেলা প্রকৌশলী মো: জহীর মেহেদী হাসান মুঠোফোনে বলেন,ঠিকাদার ভাল কাজ করছেন। বালু নিম্নমানের হলে সেটি পরির্বতন করে দেওয়া হবে।

মহালছড়ি উপজেলা শিক্ষা অফিসার দীপিকা খীসা বলেন, বিদ্যালয় ভবন নির্মানের প্রথম দিন আমি গিয়েছি। নির্মান কাজে নিম্নমানের নির্মান সামগ্রী ব্যবহারের কথা শুনেছি। আমাকে কেউ অভিযোগ করেনি এখন যেহেতু আমি জেনেছি। সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে আমি অবহিত করবো।

বাংলাধারা/এফএস/টিএম

আরও পড়ুন