২৩ অক্টোবর ২০২৫

খাতুনগঞ্জে সয়াবিন তেলের কৃত্রিম সংকট: অসাধু ব্যবসায়ীদের ফাঁদে ভোক্তারা

চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ, যা দেশের অন্যতম বৃহত্তম পাইকারি ভোগ্যপণ্যের বাজার, সেখানে সয়াবিন তেলের কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হচ্ছে বলে প্রমাণ পেয়েছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। গোপন অনুসন্ধানের পর বাজারে তেল মজুত থাকার পরও কিছু ব্যবসায়ী কৃত্রিমভাবে সংকট তৈরি করছে বলে ধরা পড়ে।

বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) ভোক্তা অধিদপ্তরের অভিযানে দুটি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়। অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক ফয়েজ উল্লাহ জানান, বাজারে বোতলজাত তেল পাওয়া যাচ্ছে না—এমন তথ্যের ভিত্তিতে অনুসন্ধান চালানো হয়। তদন্তে দেখা যায়, কিছু ডিলার ও ব্যবসায়ী মজুত থাকা সত্ত্বেও তেল বিক্রির তথ্য গোপন করছে।

অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি:
প্রথমে মেসার্স আল আমিন স্টোরে অভিযান চালানো হলে, তাদের স্টকে তেল থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়, যদিও তারা দাবি করছিলেন তেল নেই। এ জন্য প্রতিষ্ঠানটিকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

অপরদিকে, সাতকানিয়া স্টোর নামে আরেকটি প্রতিষ্ঠানের কাছে ২৪ হাজার লিটার তেল সরবরাহের তথ্য পাওয়া গেলেও, মালিক মাত্র ৪০ কার্টনের হিসেব দিতে পেরেছেন। বাকিগুলোর কোনো জবাব না দিতে পারায় প্রতিষ্ঠানটিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

ব্যবসায়ীদের পাল্টা দাবি:
তবে ব্যবসায়ীরা দাবি করেছেন, তারা কোনো অনিয়ম করেননি। সাতকানিয়া স্টোরের মালিক মো. আবছার বলেন, ‘‘আমি তেল বেশি দামে বিক্রি করিনি, শুধু কাগজপত্রের অনিয়ম দেখিয়ে জরিমানা করা হয়েছে। সরবরাহ কম থাকায় কিছু তেল এখনও পাইনি, তাই ডকুমেন্ট হাতে আসেনি।’’

অন্যদিকে, আল আমিন স্টোরের মালিক মো. শাহজালাল বলেন, ‘‘কোম্পানি ঠিকভাবে তেল সরবরাহ করছে না। পাইপলাইনে তেল আসছে, কিন্তু আমাদের কাছে পৌঁছাতে সময় লাগছে।’’

বাজারে সংকট নাকি পরিকল্পিত গোপন মজুত?
এ ঘটনা থেকে বোঝা যায়, সরবরাহ ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা না থাকায় ভোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। ব্যবসায়ীদের দাবি ও প্রশাসনের তদন্তের মধ্যকার এই দ্বন্দ্ব সাধারণ জনগণের জন্য আরও অনিশ্চয়তা তৈরি করছে। বাজারে কৃত্রিম সংকট দূর করতে প্রশাসনের আরও কঠোর নজরদারির প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

আরও পড়ুন