মাকসুদ আহম্মদ, বিশেষ প্রতিবেদক »
খাবারের স্বাদ বিষিয়ে দিচ্ছে ভেজাল ঘি। চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ভেজাল ঘি এর কারখানা অলিগলিতে। নামিদামী ব্রান্ডের নামে গোপন কারখানার ঘি চলছে বাবুর্চীকে কমিশন দিয়ে। দেদারসে চলছে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে। অভিযোগ রয়েছে, কারখানা মালিকদের ২শ’ টাকার টোকেনের ভিত্তিতে বাবুর্চীরাই মূলত এসব ঘি ক্রেতাকে কিনতে বাধ্য করে।
ঘি সুস্বাদু খাবারের অনন্য উপাদান হওয়ায় এর ব্যবহার হয় সবচেয়ে বেশি। এছাড়াও যাদের অঢেল অর্থ রয়েছে তারা হয়ত প্রতিনিয়তই ঘি খাচ্ছেন। তবে সেই দামি খাবারের ঘি যদি ভেজাল হয় তাহলে রসালো আপ্যায়ন রসাতলে যাবে। কিন্তু একবারও কি পরীক্ষা করে দেখছেন তিনি কি খাচ্ছেন। ‘প্রাণ’ এর জায়গায় ‘প্রাম’, ‘বাঘাবাড়ির’ ঘি নাম হাঁকিয়ে ‘স্পেশাল বাঘাবাড়ির ঘি’, আবার বাঘাবাড়ির ঠিকানাও পরিবর্তন করে ক্রেতাদের বিভ্রান্তিতে ফেলে দিচ্ছে এসব ভেজাল কারখানা।
এদিকে, প্রতিনিয়ত ভেজাল ঘি ও খাদ্যদ্রব্য প্রস্তুতকারক কারখানাগুলো খুঁজে বেড়াচ্ছে প্রশাসন। শুধু তাই নয় ডালডার ভিতরে ঘি এর ফ্লেভার দিয়ে বাঘা বাড়ির ঘি তৈরি করার ঘটনাও ঘটছে।

অভিযোগ রয়েছে, দীর্ঘ দিন ধরে চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় ভেজাল ঘি এর কারখানা বিদ্যমান থাকলেও প্রশাসন কিছুই বলছে না। বছরের পর বছর এসব কারখানায় ভেজাল ঘি উৎপাদন করে বিভিন্ন ব্রান্ডের নামে বিক্রি হচ্ছে। এতে প্রকৃত ঘি কারখানার মালিকরা ও ক্রেতা সাধারণ প্রতারণার শিকার হয়ে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

সচরাচর বাজারে পাওয়া যায় কালো জাতীয় একটি জিনিস কিন্তু ঘ্রাণ খাঁটি ঘি এর। এটি মূলত মাছের খাবার। আসলে যারা মাছ শিকার করেন তারাই এটার ক্রেতা। এক কেজি ওজনের এটি ক্রয়মূল্য ৩২০ টাকা হলেও বিক্রি কিন্তু ৪০০ টাকা। এ ধরনের খাবার আসে ফরিদপুর থেকে। এটি ঘি তৈরির সময় ফেলে দেয়া ফেনা থেকে জমে এমন হয়। কিন্তু এর সঙ্গে আরো কিছু উপাদান মেশানো হয়। যা ঘি এর ফ্লেভার হিসেবে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন স্থানে। বিভিন্ন কারখানায় অভিযান চালিয়ে দেখা গেছে, পামওয়েল, ডালডা ও হলুদ রঙ মিশিয়ে বিভিন্ন ব্রান্ডের ঘি তৈরি হচ্ছে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে।

এদিকে, এক কারখানায় ৫টি ব্রান্ডের ঘি, এক হাজার খালি কৌটা সেইসঙ্গে ভেজাল ঘি তৈরির উপকরণ জব্দ করার পর তা আবার কারখানার সামনেই পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়। তবে এসব ভেজাল ঘি এর মধ্যে বাঘা বাড়ির নামেই কৌটজাত করা হয়েছে বেশিরভাগ ঘি। কিন্তু উপজেলা প্রশাসনের মধ্যেও ভেজাল ঘি কারখানার সোর্স রয়েছে। ফলে অভিাযনের আগেই টের পেয়ে যায়। ভেজাল ঘি এর প্রতি কৌটায় টোকেন থাকে এই টোকেনের বিপরীতে দু’শ টাকা পায় বাবুর্চী।