খাল খনন শুধু পানি নিষ্কাশনের কাজ নয়—এটি একটি শহরের অর্থনৈতিক, পরিবেশগত এবং সামাজিক পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া। আর এই খাল খননকেই বিএনপির রাজনীতির অন্যতম প্রধান খুঁটি বলে উল্লেখ করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
শুক্রবার (২ মে) সকালে চট্টগ্রামের উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ডে বিএনপির অর্থায়নে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে নাজির খাল ও কালির ছড়া খাল খনন ও পরিষ্কার কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “খাল খনন বিএনপির রাজনীতির পিলার। শুধু পানি সরানো নয়, খালকে ঘিরে গড়ে তোলা যেতে পারে নতুন অর্থনীতি, নির্মাণ করা যেতে পারে হাঁটার পথ, গড়ে উঠতে পারে স্থানীয়দের জন্য বিনোদনকেন্দ্র। খাল খননের মধ্য দিয়েই শহরের প্রাণ ফিরে পাবে।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি রফিক উদ্দিন চৌধুরী এবং পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক ফরিদুল আলম। পরিচ্ছন্ন কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
মেগা প্রকল্পে দুর্নীতি, খাল নিয়ে চক্রান্তের অভিযোগ মেয়রের
বক্তব্যে মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, “চট্টগ্রামে একসময় ৭১টি খাল ছিল, যা জলাবদ্ধতা নিরসনে মুখ্য ভূমিকা রাখতো। অথচ নিয়মবহির্ভূতভাবে খাল খননের দায়িত্ব এখন সিডিএ’র হাতে। তারা ৫৭টি খাল চিহ্নিত করলেও কাজ করছে মাত্র ৩৬টির উপর। খাল খননের অভিজ্ঞতা ছাড়াও সিডিএ প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছে। বরং উঠেছে মেগা দুর্নীতির অভিযোগ।”
তিনি আরও বলেন, “বিগত সরকারের সময়ে খাল ও নালার উপর গড়ে তোলা হয়েছে মার্কেট, ভবন, এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছি। আমরা চেষ্টা করছি, তবে যন্ত্রপাতির সংকটে ভুগছি। ইতোমধ্যে প্রায় ৪০০ কোটি টাকার প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে, এখন বরাদ্দ প্রয়োজন।”
আন্দোলনের সময় শেষ, এখন দেশ গড়ার পালা
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু বলেন, “আন্দোলন সংগ্রামের সময় পেরিয়ে গেছে, এখন সময় দেশ গড়ার। শহীদ জিয়ার রাজনীতি হলো উন্নয়নের রাজনীতি—আর খাল খনন তারই প্রতিফলন। একটি ওয়ার্ডের দুটি খাল খননের উদ্যোগ নিঃসন্দেহে মহৎ। এই উদ্যোগ ছড়িয়ে দিতে হবে প্রতিটি ওয়ার্ডে।”
মেয়র শাহাদাত হোসেন সম্পর্কে তিনি বলেন, “আজকের চট্টগ্রামবাসীর জন্য সৌভাগ্যের সময়। অনেকদিন পর চট্টগ্রাম পেয়েছে একজন শিক্ষিত, সৎ, সাহসী ও পরীক্ষিত মেয়রকে। আন্দোলনের মাঠ থেকে উঠে আসা এই নেতৃত্বকে কাজে লাগাতে হবে।”
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক আলহাজ্ব এরশাদ উল্লাহ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি মোশাররফ হোসেন দিপ্তী, চসিক সচিব আশরাফুল আমিন, পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা ইখতিয়ার উদ্দিনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
এআরই/বাংলধারা













