২৪ অক্টোবর ২০২৫

খাল দখলকে কেন্দ্র করে সন্দ্বীপ বিএনপির দুই গ্রুপের রক্তাক্ত সংঘর্ষ

চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার মগধরা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে আধিপত্য বিস্তার ও একটি খাল দখলকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে ভয়াবহ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে কমপক্ষে চারজন আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত একজন বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

ঘটনাটি ঘটে সোমবার (১৯ মে) সন্ধ্যা ৭টার দিকে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জামসেদ মেম্বারের ছেলে রিফাতের সঙ্গে একই ইউনিয়নের আলমগীর ও দিদার নামে দুই ব্যক্তির কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে হাতাহাতি শুরু হয়। এর কিছুক্ষণের মধ্যে দুই পক্ষের উত্তেজনা চরমে ওঠে।

এসময় মগধরা ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ, জাহাঙ্গীর, সুমন, রুবেল, ইলিয়াস, শাহাদাত, নোয়াব, আনোয়ার, রিপন, রহিমসহ অন্তত ১৫-২০ জনের একটি দল রামদা, ছুরি, রড, হকিস্টিকসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হয়। তারা রিফাত ও তার সহযোগীদের ওপর হামলা চালায়। একপর্যায়ে উভয়পক্ষের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষে জড়ায়।আধঘণ্টাব্যাপী চলা সংঘর্ষে চারজন আহত হন।

তাদের মধ্যে রিফাতের মাথায় রামদার কোপ লাগায় তিনি গুরুতর আহত হন। প্রথমে তাকে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হলেও অবস্থার অবনতি হলে দ্রুত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে তিনি হাসপাতালের আইসিইউতে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন।

ঘটনার পেছনে রাজনৈতিক দ্বন্দ্বকেই দায়ী করছেন এলাকাবাসী। জানা গেছে, মগধরা ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি ও সাবেক মেম্বার জামসেদ এবং সারিকাইত ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী রাজুর অনুসারীদের মধ্যে  বিরোধ থেকেই এই সংঘর্ষের সূত্রপাত। যদিও রাজু তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সরাসরি অস্বীকার করেছেন।

সারিকাইত বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শওকত রাজু বলেন, “এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও হাস্যকর। আমি সারিকাইতের রাজনীতি করি, মগধরার সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। ঘটনার সময় আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। এখানে স্থানীয় দু’জনের মধ্যে খাল নিয়ে বিরোধ থেকেই এই ঘটনা ঘটেছে।”

তবে জামসেদ মেম্বার এই দাবিকে প্রত্যাখ্যান করে বলেন, “রাজুর নেতৃত্বেই আমার ছেলের ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হয়েছে। আমার ছেলে এখন চট্টগ্রাম হাসপাতালে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। আমি বর্তমানে ছেলের চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত আছি, পরে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”

সন্দ্বীপ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিকুল আলম চৌধুরী জানান,“ঘটনার খবর পেয়ে আমরা সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে যাই। এখনো পর্যন্ত কোনো পক্ষ মামলা করেনি। তবে কেউ অভিযোগ করলে আমরা প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।”

এই ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

কেএআরই/বাংলাধারা

আরও পড়ুন