কক্সবাজার প্রতিনিধি »
চরম বর্বরতায় ২০১৭ সালে গণহত্যার বিচার দাবি ও পূর্ণ নাগরিক অধিকার ফিরিয়ে দিয়ে, মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনসহ নানা দাবিতে সমাবেশ ও মানববন্ধনের ডাক দিয়েছে রোহিঙ্গারা।
বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) উখিয়া-টেকনাফের অন্তত ৬ থেকে ৯টি ক্যাম্পে পৃথকভাবে এই মানববন্ধন ও সমাবেশ হবে বলে জানিয়েছে রোহিঙ্গা নেতারা।
যদিও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এটি আনুষ্ঠানিক কোন সমাবেশ নয়। শুধু নিজ নিজ ক্যাম্পে মানববন্ধন করার সুযোগ পাবে রোহিঙ্গারা। একেকটা মানববন্ধনে ১০০ জনের বেশি কাউকে দাঁড়াতে দেয়া হবে না।
জানা যায়, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নির্যাতন ও গণহত্যার শিকার হয়ে রোহিঙ্গারা দেশ ছাড়া হবার ৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে সমাবেশ ও মানববন্ধনের আয়োজন করছে রোহিঙ্গারা।
এর আগে, ২০১৯ সালের ২৫ আগস্ট ক্যাম্পে প্রথম বড় সমাবেশ করা হয়, যার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মাস্টার মুহিবুল্লাহ। পরে তিনি স্বগোত্রীয় সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত হন। এবারের সমাবেশে কারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তা গোপন রাখা হয়েছে।
একটি সূত্র জানায়, ক্যাম্পে এবারও সমাবেশ আয়োজনে সাধারণ রোহিঙ্গাদের সঙ্গে নিয়ে নেতৃত্বে দিচ্ছে মাস্টার মুহিবুল্লাহর হাতে গড়া সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি পিস ফর হিউম্যান রাইটস। সমাবেশে বেশকিছু দাবি উপস্থাপন করা হবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন রোহিঙ্গা নেতা জানান, ক্যাম্পের ভেতরে অন্তত ৬ থেকে ৯টি পৃথক স্থানে যথাক্রমে উখিয়া ক্যাম্পের ১-ই ও ২-ই ও ৩,৪,১৩,১৯,১৪,১৫,১৬ নাম্বার ক্যাম্পে এ সমাবেশ ও মানববন্ধনের প্রস্তুতি নিয়েছে তারা।
তারা আরও জানায়, সমাবেশে থেকে ২০১৭সালের গণহত্যার বিচার, জড়িতের বিচারের মুখামুখি করা ছাড়াও পূর্ণ নাগরিকত্ব অধিকার ফিরিয়ে দিয়ে রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনসহ নানা বিষয়ে তুলে ধরা হবে।
এ ছাড়াও সমাবেশে থেকে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র, জাতিসংঘ, ওআইসি, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, বাংলাদেশ, এনজিও, সংশ্লিষ্ট সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবির পাশাপাশি (মিয়ানমার)এর ১৯৮২ সালের নাগরিকত্ব আইন বাতিল, সম্পত্তি ফেরত, স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার অধিকার বিষয়ে তুলে ধরা হবে বলে জানিয়েছেন রোহিঙ্গা নেতারা।
রোহিঙ্গাদের সমাবেশের বিষয়ে জানতে চাইলে ক্যাম্পে নিরাপত্তায় নিয়োজিত ১৬ এপিবিএন এর অধিনায়ক এডিআইজি হাসান বারী নুর বলেন, কাল (আজ) ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গাদের গণহত্যার ও দেশত্যাগের পাঁচ বছর পূর্ণ হচ্ছে। এ কারনে রোহিঙ্গারা দিনটি স্মরণে মানববন্ধনের আয়োজন করছে। এটি বড় কোন সমাবেশ বা মহাসমাবেশ নয়।
সমাবেশের কোন অনুমতিও নেই। তাই শুধু ব্যানার আর ফেস্টুন পরির্দশন করার সুযোগ পাবে রোহিঙ্গারা।
ক্যাম্পে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে জানিয়েছেন ১৬ এপিবিএন এর অধিনায়ক এডিআইজি হাসান বারী নুর।
এর আগে ২০১৯ সালের ২৫ আগস্ট এ সংগঠনটির ব্যানারে বড় একটি সমাবেশ হয়েছিল। যার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সংগঠনের চেয়ারম্যান, গত ২০২১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত মুহিবুল্লাহ।
ইতোমধ্যে মুহিবুল্লাহ হত্যা মামলার অভিযোগপত্রে হত্যাকাণ্ডের জন্য মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী সংগঠন আরসাকে দায়ী করা হয়েছে। মুহিবুল্লাহ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের পক্ষে জনমত গঠন করায় তাকে হত্যা করা হয় বলেও উল্লেখ করা হয় অভিযোগপত্রে।













