মানিকগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগমকে মিরপুর মডেল থানার একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার করে চার দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। মঙ্গলবার (১৩ মে) ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালত এ আদেশ দেন।
এদিন দুপুর ২টা ২০ মিনিটে মমতাজকে আদালতে হাজির করা হয়। বেলা ৩টার দিকে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুয়েল রানার আদালতে রিমান্ড শুনানি শুরু হয়। বিপুল সংখ্যক আইনজীবী, পুলিশ ও সংবাদকর্মীর উপস্থিতিতে আদালতপাড়া ছিল জনাকীর্ণ।
মিরপুর মডেল থানার উপপরিদর্শক মনিরুল ইসলাম মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে মমতাজের সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। তার পক্ষে শুনানি করেন ঢাকার মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী।
শুনানিতে প্রসিকিউটর বলেন, “এই আসামি জনগণের ভালোবাসা পুঁজি করে ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে সহযোগিতা করেছেন। যখন দেশে গুম, গুলি চলছিল, তখন তিনি গণভবনে গিয়ে গান গেয়ে হাসিনার মন ভালো করতেন।”
তিনি আরও বলেন, “সংসদে যেখানে কোটি কোটি টাকা খরচ হয়, সেখানে তিনি গান গাইলেন—‘আমার নেত্রী শেখ হাসিনা, সারা বিশ্বে নাই তার তুলনা।’ এমনকি সংসদে দাঁড়িয়ে প্রশ্ন করেন—খালেদার বাপের নাম কী? যা ছিল সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক ও কুরুচিপূর্ণ।”
শুনানির সময় আদালতে উপস্থিত আইনজীবীদের কেউ কেউ ‘শেইম শেইম’ বলে প্রতিবাদ জানান। একপর্যায়ে প্রসিকিউটরের বক্তব্যে এজলাসে হাস্যরসের সৃষ্টি হয়। কাঠগড়ায় থাকা মমতাজ নিজেও হেসে ফেলেন।
পরে বিচারক মমতাজকে জিজ্ঞাসা করেন তিনি নিজের আইনজীবী হিসেবে কাকে চান। তখন আইনজীবী রেজাউল করিমকে চিহ্নিত করে ওকালতনামায় স্বাক্ষর দেন মমতাজ। যদিও আইনজীবী জানান, তিনি কোনো বক্তব্য দেবেন না।
গত বছরের ১৯ জুলাই মিরপুর-১০ গোলচত্বর এলাকায় ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে’ অংশ নিয়েছিলেন মো. সাগর নামে এক শিক্ষার্থী। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। এতে সাগর বুকে গুলিবিদ্ধ হন এবং হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান।
পরে তার মা বিউটি আক্তার ২৭ নভেম্বর মিরপুর মডেল থানায় মামলা করেন। এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৪৩ জনের নাম উল্লেখ এবং ২৫০–৪০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। এজাহারে মমতাজ বেগমের নাম ৪৯ নম্বরে রয়েছে।
সোমবার (১৩ মে) রাত পৌনে ১২টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে মমতাজকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এআরই/বাংলাধারা