২৪ অক্টোবর ২০২৫

ঘরে বাবার মরদেহ রেখে পরীক্ষা দিল নিলুফা

কক্সবাজার প্রতিনিধি »

কক্সবাজারের টেকনাফে পিতার মরদেহ ঘরে রেখে চোখে কান্না নিয়ে হলে গিয়ে পরীক্ষা দিয়েছেন নিলুফা ইয়াছমিন নামের এক শিক্ষার্থী।

মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) ভোর ৫ টায় নিলুফার বাবা পেঠান আলী (৬০) বাড়িতে মারা যান। নিলুফা টেকনাফের হ্নীলা রঙ্গিখালী মঈন উদ্দিন মেমোরিয়াল কলেজ থেকে উপজেলার হ্নীলা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে বাংলা দ্বিতীয় পত্র বিষয়ে পরীক্ষায় অংশ নেয়। তার বাড়ি রঙ্গিখালী মাদ্রাসা পাড়া এলাকায়।

টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী বলেন, মঙ্গলবার ভোররাতে নিলুফার বাবা রঙ্গিখালী মাদ্রাসা ক্যাম্পাসে রাস্তায় স্ট্রোক করে আকস্মিক ভাবে মারা গেছেন। তিনি রাতে ক্যাম্পাসে সুপারী বাগান দেখভাল করতেন। বাবার মৃত্যুতে নিলুফা ইয়াছমিন মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। সে সকাল থেকেই কাঁদছিল। তাকে সান্ত্বনা দিয়ে সহপাঠী ও স্বজনরা পরীক্ষা দিতে উৎসাহিত করে।

চেয়ারম্যান আরো বলেন, পিতার মরদেহ ঘরে রেখে মেয়েটি সকালে কাঁদতে কাঁদতে পরীক্ষাকেন্দ্রে গেছে। স্বজনরা সাহস দিলেও পিতার অকস্মাৎ মৃত্যু সহজে মেনে নেয়া কোমলমতি শিক্ষার্থীটির জন্য কঠিনই ছিলো।

নিলুফার বড় ভাই শাখাওয়াত হোছাইন জানান, বাবার মৃত্যুর পর নিলুফা পরীক্ষা দিতে অনীহা প্রকাশ করেছিল। যেহেতু বোর্ড পরীক্ষা তাই তাকে অনেক বুঝিয়ে সাহস ও স্বান্ত্বনা দিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়ে যায়। তবে সে দেড় ঘন্টা লিখে চলে আসে বাড়িতে।

পরীক্ষাকেন্দ্রের দায়িত্বরত ছিদ্দিক আহমদ ও কলেজের প্রতিনিধি ইব্রাহিম খলিল বলেন, সকাল ১১টায় পরীক্ষায় অংশ নেয় নিলুফা ইয়াছমিন। তবে সে সাড়ে ১২ টায় খাতা জমা দিয়ে হল থেকে বের হয়ে যান। তার পিতার মৃত্যুর সংবাদ জেনে শিক্ষকরাও তাকে মানসিক সাহস জোগাতে সহযোগিতা করেছি।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ভারপ্রাপ্ত (ইউএনও) এরফানুল হক চৌধুরী বলেন, এক পরীক্ষার্থীর বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে শোকাহত ওই শিক্ষার্থীকে পরীক্ষাকেন্দ্রে মানসিক সাহস জোগাতে হলের দায়িত্বরতদের বলা হয়েছিল।

আরও পড়ুন