২৪ অক্টোবর ২০২৫

‘চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস’—ঘুষ না দেওয়ায় লাইন্সেস স্থগিতের অভিযোগ

শাহ আব্দুল্লাহ আল রাহাত  »

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের বিরুদ্ধে ঘুষ না দেওয়ায় লাইন্সেস স্থগিতের অভিযোগ করেছেন সিএন্ডএফ এজেন্ট রফিকুল আলম প্রাইম ক্লিয়ারং হাউস। আর তাই বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) বিষয়টির প্রতিবাদ জানিয়ে দেশের সবচেয়ে বড় শুল্ক স্টেশন কাস্টম হাউসে কর্মবিরতি পালন করছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস সিএন্ডএফ এসোসিয়েশন।

জানা যায়, প্রায় এক মাস আগে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এসআর এন্টার প্রাইজ চীন থেকে প্রায় ২০০০ কেজি ওজনের কিছু কার্টার মেশিন আমদানি করেন, যেগুলোর এইচএস কোড ছিলো ৮২০৩৪০০০। গত ১৬ জুন সিএন্ডএফ এজেন্ট প্রাইম ক্লিয়ারং হাউসের মালিক রফিকুল আলমকে ৬০ হাজার টাকা ঘুষের বিনিময়ে জরিমানা বাদে ৩১ হাজার টাকা দিয়ে শুল্কায়ন সমাপ্তির প্রস্তাব দেন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের রাজস্ব কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন। তবে এই প্রস্তাবে রাজি না হয়ে জরিমানা দিয়ে শুল্কায়ন করে পণ্য খালাসের কথা বললে এক পর্যায়ে বাক-বিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন তারা। এরপর রাজস্ব কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিনের অভিযোগের ভিত্তিতে সিএন্ডএফ এজেন্ট রফিকুল আলম প্রাইম ক্লিয়ারং হাউসের লাইন্সেস স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয় চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস।

লাইন্সেস বাতিল হওয়া সিএন্ডএফ এজেন্ট প্রাইম ক্লিয়ারং হাউসের রফিকুল আলম বাংলাধারাকে বলেন, ‘অনিয়মে ভরপুর হয়ে আছে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস। ঘুষের টাকা না দেওয়ায় গতকাল আমার লাইন্সেস স্থগিত দিয়েছে তারা।’

তিনি আরো বলেন, ‘চায়না থেকে আমদানি হওয়া কার্টার মেশিন গুলোর শুল্কায়ন চলছিলো ৮-বি শুল্কায়ন শাখায়। রাজস্ব র্কমকর্তা নিজাম উদ্দিন আমার কাছেন ৬০ হাজার ঘুষ চান কিন্তু আমি দিতে রাজি না হওয়ায় আমাকে হেনস্তা করে। এছাড়া ঊর্ধ্বতন র্কমকর্তার কাছে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করে আমার প্রতিষ্ঠানের লাইন্সেস স্থগিত করে দিয়েছে।’

এই বিষয়ে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের রাজস্ব র্কমকর্তা নিজাম উদ্দিনের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

এইদিকে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার ফখরুল আলম বাংলাধারাকে বলেন, ‘ঘুষের কারণে লাইন্সেস স্থগিত করা হয়েছে এমন ঘটনার ব্যাপারে আমি অবগত নই। লাইন্সেস বাতিল বা স্থগিতের বিষয়ে আমাদের লাইন্সেস বিষয়ক আলাদা কর্তৃপক্ষ আছেন, তারা ভালো বলতে পারবেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘অবৈধ সুবিধা না দেওয়ায় আমাদের এক রাজস্ব র্কমকর্তাকে মারতে উদ্যত হয় একটি সিএন্ডএফ এজেন্টের মালিকপক্ষ।’

চট্টগ্রাম সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশনের প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী মাহমুদ ইমাম বিলু বাংলাধারাকে বলেন, ‘ঘুষের বিষয়টি বিবেচনা না এনে বরং ১০ মিনিটের মাথায় লাইন্সেস স্থগিত হওয়ার বিষয়টি নজিরবিহীন। লাইন্সেস স্থগিত ও আরো নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে আমরা র্কমবিরতি পালন করছি। আমাদের দাবি গুলো মেনে না নেওয়া পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলতে থাকবে।’

বিষয়টিকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) সকাল ৯টা থেকে প্রায় পাঁচশত সিএন্ডএফ এজেন্ট র্কমবিরতি কর্মসূচী পালন করছে। এতে বন্ধ রয়েছে শুল্ক আদায়। ফলে ১৫০ থেকে ২০০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় বন্ধ রয়েছে।

বাংলাধারা/এফএস/এআর

আরও পড়ুন