৪ নভেম্বর ২০২৫

ঘূর্ণিঝড় আম্পান : ৭ নম্বর বিপদ সংকেত জারি

বাংলাধারা প্রতিবেদন »  

একদিকে করোনা মহামারিতে দেশে প্রাণঘাতি ভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। এরই মধ্যে বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড় আমফান এখন ‘অতি প্রবল’ সাইক্লোনে রূপান্তরিত হয়েছে। এর বর্তমান অবস্থান ও গতি বিশ্লেষণ করে আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশের দিকেই এখন এটি ধেয়ে আসছে। বিধ্বংসী ক্ষমতা নিয়ে সাইক্লোনটি মঙ্গলবার রাত কিংবা বুধবার ভোরের দিকে উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানতে পারে।

সোমবার (১৮ মে) বিকেলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বুলেটিনে উপকূলীয় ১৪টি জেলা থেকে হুঁশিয়ারি সংকেত সরিয়ে ৭ নম্বর বিপদসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হচ্ছে। পাশাপাশি খুলনা, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অফিস। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

আবহাওয়ার বিশেষ বুলেটিনে আরও বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় এবং অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভালো, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪-৫ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। ঘূর্ণিঝড় অতিক্রমকালে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম জেলা সমূহ এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণসজ ঘন্টায় ১৪০-১৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

সোমবার বিকাল ৩টায় এ ঘূর্ণিঝড় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১০৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে; কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১০১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে; মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর-উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে এবং পরে দিক পরিবর্তন করে উত্তর-উত্তর পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে খুলনা ও চট্টগ্রামের মধ্যবর্তী অঞ্চল দিয়ে ১৯ মে শেষরাত থেকে ২০ মে বিকেল বা সন্ধ্যার মধ্যে বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

আমফানের সম্ভাব্য গতিপথ সম্পর্কে আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ বলেন, বাংলাদেশ ভারত সীমান্তে সুন্দরবন অংশ দিয়ে ঘূর্ণিঝড়টির মূল অংশ দেশের সীমানায় আঘাত করতে পারে।২২ মে অমাবস্যা থাকায় সমূদ্রে জোয়ার থাকবে, এ অবস্থায় শক্তিশালি ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলাগুলোয় জলোচ্ছাসে প্লাবিত হওয়া সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের ঘূর্ণিঝড় সংকেত ব্যবস্থায় ৫ থেকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত একই মাত্রার ঝুঁকি বোঝায়। বন্দরের ডান দিক দিয়ে ঝড় গেলে ৬ এবং বন্দরের ওপর বা আশপাশ দিয়ে গেলে ৭ নম্বর সংকেত দেখাতে বলা হয়। দুই ক্ষেত্রেই নিশানে দুটি লাল রঙের সংকেত পতাকা দেখানো হয়।

বাংলাধারা/এফএস/টিএম

আরও পড়ুন