কক্সবাজার প্রতিনিধি »
কক্সবাজারের চকরিয়ার তিন সাংবাদিকের ওপর হামলার অভিযোগে যুবলীগ-ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাটি ষড়যন্ত্রমূলক দাবি করে তা দ্রুত প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে আওয়ামীলীগ-যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
বৃহস্পতিবার (৬ মে) বিকেলে চকরিয়ার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের স্টেশন এলাকায় আয়োজিত মানববন্ধনে দাবি করা হয়, তিন সাংবাদিকের ওপর হামালার ঘটনাটি পরিকল্পিত। ব্যবসায়ীক দ্বন্দ্বের জেরে সাজানো নাটকে হামলা দেখিয়ে মিথ্যা মামলাটি দায়ের করার পেছনে কলকাঠি নেড়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী। এ মামলায় আদর ছাড়াও ডুলাহাজারা ইউনিয়ন যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ১০জন নেতাকর্মীকে আসামী করা হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, যুবনেতা আদর ডুলাহাজারা ইউনিয়নের অসহায় মানুষের প্রাণ। তিনি ইউনিয়নের অবহেলিত রাস্তাঘাট ও সমাজ উন্নয়নে ছাত্রলীগের দায়িত্ব থাকাকালীন সময় থেকে কাজ করছেন। আদরের মত তারুণ্য দেশের সব জেলা-উপজেলায় প্রয়োজন। কিন্তুু দুঃখের বিষয় হলো যুবনেতা আদরের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে তার বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছে একটি কুচক্রী মহল। দ্রুত মামলাটি প্রত্যাহার করা না হলে কঠোর কর্মসূচী দেয়া হবে বলে হুশিয়ারি দেন বক্তারা।
মানববন্ধনে ডুলহাজারা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডা. আজিজুল মান্নান বলেন, সাংবাদিকরা জাতির বিবেক। তাদের প্রতি আমাদের বিশ্বাস ও আস্থা রয়েছে। কিন্তুু সাংবাদিক নামধারী কিছু দুর্বৃত্ত এ মহান পেশাটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে চলছে। একটি চক্রের স্বার্থে সাংবাদিক নামধারী তিন দুর্বৃত্ত যুবলীগ নেতা আদরসহ যুবলীগ-ছাত্রলীগের ১০জন নেতার বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছে।

যুবলীগ নেতা আদরের দাবি, সম্প্রতি বালুমহালের টেন্ডারসহ বেশ কয়েকটি টেন্ডারে হেরে যান চকরিয়া উপজেলার চেয়ারম্যান ফজলুল হক সাঈদী। এরপর তার তলপিবাহক কিছু সাংবাদিক নামধারী অর্থলিপ্সুকে টাকার বিনিময়ে প্রথমে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা নিউজ করান। পরে তারই (সাঈদীর) কথায় চলা কয়েকজন সাংবাদিকদের ওপরে হামলার সাংবাদিকদের নাটক সাজিয়ে হয়রানির উদ্দেশ্যে মামলাটি করিয়েছেন।
এতে ডুলহাজারা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডা. আজিজুল মান্নান ছাড়াও ডুলাহাজারা ইউনিয়ন যুবলীগের আহবায়ক তৌহিদুল ইসলাম তৌহিদ, যুগ্ন আহবায়ক আমানুল্লাহ আমান, কায়সার বাবুল, মৎস্যজীবিলীগের সদস্য সচীব শাহআলাম, মৎস্যজীবিলীগের নেতা রেজাউলরকরিম টিটু, ১ নং ওয়ার্ড এমইউপি রপিক উদ্দিন, ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামীলের সভাপতি কাশেম সাধারন সম্পাদক ইসহাক, ডুলহাজারা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক এম ইউপি সাইফুর রহমান সাইফুল, কক্সবাজার সরকারী কলেজের সহ সভাপতি ও ডুলহাজারা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন বাপ্পি বক্তব্য রাখেন।

মানববন্ধনে আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ছাড়াও সহস্রাধিক স্থানীয় নারী ও পুরুষ অংশগ্রহণ করেন।
উল্লেখ্য, আগে হামলার অভিযোগে গত ৩ মে স্থানীয় সাংবাদিক মোহাম্মদ উল্লাহ বাদি হয়ে চকরিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন (নং-২,জি.আর -১৭৮ /২১।

মামলায় উপজেলা যুবলীগ সদস্য হাসানুল ইসলাম আদরকে প্রধান করে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে আরো ১২জনসহ মোট ২২ জনের অজ্ঞাত আসামী করা হয়।
মামলা বাদি সংবাদকর্মী মোহাম্মদ উল্লাহ এজাহারে দাবি করেন, সম্প্রতি জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিক পত্রিকায় যুবলীগ নেতা হাসানুল ইসলাম আদরের বিরুদ্ধে পাহাড় কেটে মাটি লোপাটের উপর বেশ কয়েকটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়।
রিপোর্ট প্রকাশের পর ২ মে রবিবার পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজারের একজন সহকারি পরিচালক ডুলাহাজারা ইউনিয়নের পাহাড়কাটা বিষয়ে সরজমিন তদন্ত করতে আসেন। ওই রিপোর্ট সংগ্রহ করতে মোটারসাইকেল যোগে ডুলাহাজারায় যান মোহাম্মদ উল্লাহ, মনছুর মহসিন ও মোস্তফা কামাল নামে তিন সংবাদকর্মী।
সংবাদ সংগ্রহ শেষে ফিরে আসার সময় ডুলাহাজারা সাফারি পার্কের গেইটের সামনে আগে থেকে উৎ পেতে থাকা হাসানুল ইসলাম আদরের দুই ভাইসহ আরো ২০-২৫জন সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে আমাদের উপর হামলা চালায়।

আদরের অভিযোগ সম্পর্কে জানতে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদীর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয়। রিং হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
বাংলাধারা/এফএস/এআর













