২৩ অক্টোবর ২০২৫

চটগ্রামে হালিশহরে সড়ক ও ড্রেনেজ অব্যবস্থাপনায় চরম দুর্ভোগে এলাকাবাসী

চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহর থানাধীন আনন্দিপুর এলাকার প্রধান সড়কের বেহাল অবস্থাই এলাকাবাসীর ভোগান্তির একমাত্র কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত এই সড়কটি বর্তমানে চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। রাস্তার বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্ত ও খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির পানি জমে এসব গর্ত আরও বিপজ্জনক রূপ নিচ্ছে, ফলে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি যানবাহন চলাচলও ব্যাহত হচ্ছে।

পাশাপাশি এলাকার ড্রেনেজ অব্যবস্থাপনার ফলে মানুষের দূর্ভোগ বেড়েছে দিগুন। বেশিরভাগ নালা ময়লা-আবর্জনায় পরিপূর্ণ, ফলে পানি নিষ্কাশন ব্যাহত হচ্ছে। অল্প বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি এবং ড্রেন উপচে স্যুয়ারেজের পানি রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ছে, যা পরিবেশ দূষণ ও স্বাস্থ্যঝুঁকির সৃষ্টি করছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রায় ছয় মাস ধরে রাস্তাটি এই অবস্থায় রয়েছে। বারবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হলেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন করননি কর্তৃপক্ষ। ফলে স্কুলগামী শিশু, কর্মজীবী নারী-পুরুষ, বৃদ্ধ ও অসুস্থদের যাতায়াতে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।

বাসিন্দাদের অভিযোগ ও উদ্বেগ

আনন্দিপুর এলাকার বাসিন্দা মো. মোহাম্মদ মুমিন বলেন, “রাস্তাটির এমন করুণ অবস্থা আগে কখনো দেখিনি। গর্তে গাড়ি পড়ে প্রায়ই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে। পথচারীদের জন্যও হাঁটা দুরূহ হয়ে পড়েছে।”

অটোচালক মো: আশিক বলেন, “প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে যাত্রী নিয়ে যেতে গিয়ে আমাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। যানবাহনের যন্ত্রাংশ বারবার নষ্ট হচ্ছে, অথচ কর্তৃপক্ষ নির্বিকার।”

গৃহবধূ শিউলি বেগম জানান, “বৃষ্টির দিনে আমাদের ঘরের সামনের রাস্তায় হাঁটুসমান পানি জমে থাকে। ড্রেনের পানি ঘরে ঢুকে যায়। ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাতে পারি না ঠিকমতো।”

অ্যাডভোকেট মো. রায়হান উদ্দিন জয় বলেন, “আনন্দিপুর এলাকার ড্রেনেজ ব্যবস্থা অত্যন্ত নাজুক—প্রতি বছর তিনবার নালা পরিষ্কার দরকার হলেও কোনো নজর দেওয়া হয় না। দুই বছর আগে ড্রেন বড় করার সময় প্রধান সড়কটি ভেঙে গেলেও তা ঠিকমতো মেরামত হয়নি। সাম্প্রতিক সময়ে ওয়াসার কাজের পর রাস্তা আরও খারাপ হয়েছে, কিন্তু সিটি কর্পোরেশন বা সিডিএ এখনও কোনো সংস্কারের উদ্যোগ নেয়নি।

প্রশাসনিক উদাসীনতা ও আশ্বাস

স্থানীয়দের অভিযোগ, এলাকাটি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের আওতাভুক্ত হলেও বছরের পর বছর সড়ক ও ড্রেনেজ উন্নয়নের কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এমনকি জনপ্রতিনিধিদের বারবার জানানো সত্ত্বেও বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে না।

এই বিষয়ে আনন্দিপুর এলাকার সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ২৪ নং উত্তর আগ্রাবাদ ওয়ার্ড বিএনপির সংগঠক মোহাম্মদ আলী বলেন,“রাস্তাটি সংস্কারের বিষয়টি ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। আমরা বিষয়টি ভালোভাবেই জানি এবং গুরুত্ব দিয়ে অনুসরণ করছি। সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়েছে।

পাশাপাশি মেয়রের ব্যক্তিগত সহকারীর (পিএস) সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছি, হোয়াটসঅ্যাপে ডকুমেন্টস পাঠিয়েছি। খুব শিগগিরই আমি আবার সিটি কর্পোরেশনে যাব এবং বিষয়টি দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য জোর দাবি জানাব। আশা করছি প্রস্তাব অনুমোদন পেলেই দ্রুত কাজ শুরু হবে।”

আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও

সর্বশেষ