২৪ অক্টোবর ২০২৫

চট্টগ্রামে গার্মেন্টসকর্মী হত্যায় স্বামী ও সঙ্গীর ফাঁসি

চট্টগ্রামের আকবর শাহ থানা এলাকায় পাঁচ বছর আগে পোশাককর্মী জেসমিন বেগমকে পাহাড়ে নিয়ে শ্বাসরোধে হত্যার ঘটনায় তার স্বামীসহ দুইজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে পৃথক ধারায় আরও তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে তাদের।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) সকালে চট্টগ্রামের ৪র্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক বেগম সিরাজাম মুনিরা এই রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন—ভোলা জেলার তজুমুদ্দিন থানার গোলকপুর গ্রামের মো. ফরহাদ (৩৩) এবং একই থানার পশ্চিম আড়ালিয়া গ্রামের মো. সেলিম ওরফে মনির (৩৫)। নিহত জেসমিন বেগম ভোলার লালমোহন থানার বাসিন্দা ছিলেন। তিনি চট্টগ্রামে একটি গার্মেন্টসে চাকরি করতেন এবং তিন সন্তান নিয়ে চান্দগাঁও এলাকায় বসবাস করতেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০২০ সালের ২১ সেপ্টেম্বর জেসমিন কর্মস্থলে গিয়ে আর ফিরে আসেননি। অনেক খোঁজাখুঁজির পর ১১ অক্টোবর তার পচাগলা মরদেহ চট্টগ্রামের হারবাতলী গ্যাসলাইন এলাকার একটি ঝোপে উদ্ধার হয়। পরে শনাক্ত করেন তার ভাই।

তদন্তে উঠে আসে, প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে ফরহাদ ও জেসমিন গোপনে ৬ লাখ টাকা কাবিনে বিয়ে করেন। তবে সংসার ও কাবিন সংক্রান্ত বিষয়ে বিরোধের কারণে ফরহাদ পূর্বপরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয়। ২০২০ সালের ২১ সেপ্টেম্বর ফরহাদ তার আত্মীয় সেলিমকে নিয়ে জেসমিনকে পাহাড়ে নিয়ে গিয়ে মুখসহ গলা চেপে শ্বাসরোধে হত্যা করে।

ঘটনার পরপরই ফরহাদ ও সেলিমকে যথাক্রমে নারায়ণগঞ্জ ও ভোলা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। পরে তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ২৮ ডিসেম্বর তাদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।

আদালত সূত্র জানায়, মামলায় ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়। তাই বিচারক দুই আসামিকে ৩০২ ধারায় মৃত্যুদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। পাশাপাশি ২০১ ধারায় ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৩ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

রায় ঘোষণার সময় দুই আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায়ের পর তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।

আরও পড়ুন