২৬ ডিসেম্বর ২০২৫

চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ—ভোগান্তি চরমে

চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ—ভোগান্তি চরমে

বাংলাধারা প্রতিবেদক : ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে বন্ধ রয়েছে কক্সবাজারের মহেশখালীর দুটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরবরাহ। যার ফলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে চট্টগ্রাম নগরবাসীকে। শুক্রবার রাত থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকলেও গ্যাস সংকট প্রকট আকার ধারণ করে আজ সকাল থেকে। গ্যাসের চুলা নির্ভর বাসা-বাড়ি ও দোকানের চুলোয় জ্বলেনি সকাল থেকে আগুন। অফিসগামীদের হয়নি সকালের নাস্তাও।

বাসাবাড়ির মতো হোটেলগুলোর চিত্রও ভিন্ন নয়। সকালে হোটেলগুলো খুললেও গ্যাস না থাকায় তৈরী করা যায়নি কোন নাস্তা। সকাল ১০টার দিকে আস্তে আস্তে বন্ধ করতে দেখা যায় বেশকিছু খাবার হোটেলকে।

চট্টগ্রাম নগরীর একটি হোটেলে দেখা যায় সকালের কোন নাস্তা তৈরী হয়নি। শ্রমজীবী মানুষরা সকালের নাস্তা করতে এসে পাননি রুটি ছাড়া কোন নাস্তা। সাথে আছে চা। হোটেল মালিক মো. আলী জানান, গ্যাস সংকটের জন্য মূল চুলা জ্বালাতে পারিনি। কয়লার চুলায় রুটি বানানো হয়েছে। অন্য কোন নাস্তা বানানো সম্ভব হয়নি। বেশিক্ষণ এভাবে দোকান চালানো যাবেনা। বন্ধ করে বাড়িতে চলে যাব।

এদিকে হোটেলে সকালের নাস্তা ও দুপুরের খাবার খেতে এসে ফিরে যেতে হচ্ছে কর্মজীবী মানুষদের। সিলিণ্ডার গ্যাস নির্ভর কিছু হোটেলে রান্না হলেও সেসব হোটেলে কাস্টমারদের বাড়তি চাপ। সেসব দোকানগুলোতে কাস্টমারদের সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে হোটেল মালিকরা। টেবিল চেয়ার সংকটের কারণে অনেকে লাইন ধরে দাঁড়িয়েছে কাঙ্খিত টেবিলে বসে দুপুরের খাবারটা খেতে।

জালাল কমিশনার লেইনের একটি বাড়িতে দেখা যায় ইট দিয়ে বসানো হচ্ছে অস্থায়ী চুলা। কাঠের ভাঙাচোরা অংশ জ্বালিয়ে চেষ্টা করা হচ্ছে রান্নার। কেউ কেউ ছুটছেন কৃত্রিম লাকড়ির দোকানে। সেসব দোকানে কেজি দরে কৃত্রিম লাকড়ি ক্রয়ে মানুষের উপচে পড়া ভিড়। কেউ কেউ ঝুঁকছেন সিলিণ্ডার এলপিজি গ্যাস কিনতে।

নগরীর ওয়াসা মোড়ের ফেনী হোটেলে দেখা যায় উল্টো চিত্র। দুপুরের খাবার খেতে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে আছে শ্রমজীবী ও সাধারণ মানুষরা। হোটেলের ভেতর নেই তিল ধরনের ঠাঁই। হোটেল বয়দেরও নেই দম ফেলার ফুসরত।

ভাত থেকে আসা মোসাদ্দেক নামে এক ব্যক্তি জানান, আশে পাশের খাবারের হোটেলগুলো ব্যায়বহুল। এ হোটেলে তুলনামূলক কম মূল্যে খাবার পাওয়া যায়। তবে গ্যাস সংকটের কারনে আসেপাশের বিভিন্ন হোটেল বন্ধ থাকায় আজ কাস্টমারের ভিড় বেশী।

এদিকে সকাল থেকে বেড়েছে ইন্ডাকশন চুলার বিক্রি। গ্যাসের চুলার বিকল্প হিসেবে ইলেকট্রিক চুলা দেদারসে কিনছে মানুষ। এ চুলাই এখন পরিবারের খাবারের চাহিদা পূরণের শেষ ভরসা।

ওয়াসা মোড়ের ওয়ালটন শো রুমের সেলস অফিসার সোহাগ বড়ুয়া বলেন, মানুষজন সকাল থেকে সবগুলো ইন্ডাকশন চুলো কিনে নিয়ে গেছে। দোকানে আর কোন ইলেকট্রিক চুলা নেই। এখনো প্রচুর কাষ্টমার আসছে। তাদের ফিরিয়ে দিতে হচ্ছে।

চট্টগ্রামে গ্যাস না থাকায় কেরোসিন ও ইনডাকশন কুকারের দোকানে ভিড় করছেন সাধারণ জনগণ। ভোক্তারা বলছেন, এসব পণ্যের দাম আগের তুলনায় অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছেন বিক্রেতারা। তবে চাহিদা অনুযায়ী মালামাল না থাকায় দোকান থেকে হতাশা নিয়ে ফিরত যাচ্ছে বেশিরভাগ ভোক্তা। এদিকে কেরোসিনের দোকান গুলোতেও লক্ষ্য করা যায় উপচে পড়া ভিড়। কেরোসিনের জন্য লম্বা লাইনের পেছনে দাঁড়িয়ে থেকেও কিনতে পারছেন কেরোসিন। হুট করেই কেরোসিনের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় হিমসিম খাচ্ছেন দোকানিরা।

আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও

সর্বশেষ