২৪ অক্টোবর ২০২৫

ব্রাশ ফায়ারে জোড়া খুন , ছোট সাজ্জাদের ৫দিনের রিমান্ড

চট্টগ্রামের কুখ্যাত সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদ ওরফে ‘বুড়ির নাতি’কে নগরীর বাকলিয়া থানায় সংঘটিত জোড়া খুনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। একই মামলায় গ্রেপ্তার দুই আসামি মো. বেলাল ও মানিককে চারদিন করে রিমান্ডে নিতে অনুমোদন দিয়েছেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরকার হাসান শাহরিয়ার।

অন্যদিকে, চান্দগাঁও থানার তাহসীন হত্যা মামলায় সাজ্জাদের পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন ৬ষ্ঠ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এস এম আলাউদ্দিন মাহমুদ।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মো. মফিজ উদ্দীন জানিয়েছেন, বাকলিয়ার জোড়া খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার বেলাল ও মানিককে আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হলে আদালত তাদের ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পাশাপাশি, এই মামলায় কারাবন্দী ছোট সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদনও অনুমোদিত হয়।

জানা গেছে, গত ২৯ মার্চ রাতে বাকলিয়া থানার এক্সেস রোডে প্রাইভেটকারে দুর্বৃত্তদের গুলিতে মো. আব্দুল্লাহ ও মো. মানিক নিহত হন। এরপর ১ এপ্রিল মানিকের মা ফিরোজা বেগম বাদী হয়ে ছোট সাজ্জাদ, তার স্ত্রী শারমিনসহ পাঁচজনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এই ঘটনায় ৩ এপ্রিল ভোরে বহদ্দারহাট এলাকা থেকে বেলাল ও ফটিকছড়ি থেকে মানিককে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ জানায়, বেলাল সরাসরি হত্যাকাণ্ডে অংশ নেন এবং মানিক মোটরসাইকেল সরবরাহ করেছিলেন।

ছোট সাজ্জাদ চট্টগ্রামের হাটহাজারীর শিকারপুর এলাকার মো. জামালের ছেলে। তার বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র ও চাঁদাবাজিসহ অন্তত ১০টি মামলা রয়েছে।

গত বছরের ১৭ জুলাই চান্দগাঁও থানা-পুলিশ অস্ত্রসহ তাকে গ্রেপ্তার করলেও পরবর্তীতে জামিনে মুক্তি পান। এরপর সরকার পতনের পর গত ৫ আগস্ট বিএনপির এক প্রভাবশালী নেতার আশ্রয়ে চলে যান তিনি।

একই বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর কালারপুল এলাকায় শটগান হাতে নির্মাণাধীন ভবনে ঢুকে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন তিনি। এছাড়া অক্সিজেন-কুয়াইশ সড়কে গুলি করে মাসুদ কায়সার ও মোহাম্মদ আনিসকে হত্যা, বুলিয়াপাড়ায় গুলিবর্ষণ, এবং ঠিকাদার হাছানের বাড়িতে হামলার মতো একাধিক ঘটনায় তার সম্পৃক্ততা রয়েছে।

ছোট সাজ্জাদ একসময় বিদেশে পলাতক বড় সন্ত্রাসী সাজ্জাদ আলী খানের সহযোগী ছিলেন। এই সাজ্জাদের নেতৃত্বেই চট্টগ্রামে দীর্ঘ সময় ধরে চাঁদাবাজি, খুন ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চলেছে বলে জানা যায়।

অপরদিকে, তার সাবেক ‘সেকেন্ড ইন কমান্ড’ সারোয়ার হোসেন বাবলা বর্তমানে তার বিরোধী পক্ষ। বাবলার বিরোধের জেরে চান্দগাঁওয়ে তাহসীন হত্যা, ডাবল মার্ডারসহ একাধিক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের জন্ম হয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানায়, ছোট সাজ্জাদের বিরুদ্ধে নগরীর ডবলমুরিং, পাঁচলাইশ ও বায়েজিদ থানায় চাঁদাবাজি, হত্যা, ডাকাতি ও অস্ত্র মামলাসহ মোট ১৮টি মামলা রয়েছে। অধিকাংশ মামলায় তিনি জামিনে রয়েছেন।

এআরই/বাংলাধারা

আরও পড়ুন