২৩ অক্টোবর ২০২৫

চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো ৫৪ কিমি মনোরেল: বিদেশি বিনিয়োগে বদলে যাবে নগরীর পরিবহন ব্যবস্থা

চট্টগ্রাম নগরীতে প্রথমবারের মতো নির্মিত হতে যাচ্ছে ৫৪ কিলোমিটার দীর্ঘ মনোরেল। প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বিদেশি বিনিয়োগে বাস্তবায়নযোগ্য এই প্রকল্প সফল হলে চট্টগ্রাম দক্ষিণ এশিয়ার ‘গেটওয়ে’ হিসেবে গড়ে উঠবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।

রোববার (১ জুন) আগ্রাবাদের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের চেম্বার মিলনায়তনে আয়োজিত এক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে চসিক ও বিদেশি বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মনোরেল চালুর লক্ষ্যে চুক্তি স্বাক্ষর হয়।

মেয়র শাহাদাত হোসেন জানান, নগরের যানজট নিরসন, পরিবেশ সংরক্ষণ এবং টেকসই গণপরিবহন ব্যবস্থার লক্ষ্যে এই মনোরেল প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তিনি বলেন, “মনোরেল শুধু যানজটই কমাবে না, এটি নগরকে আধুনিক, ব্যবসাবান্ধব ও পরিবেশবান্ধব শহরে রূপান্তর করবে।”

প্রকল্পটির অর্থায়ন করবে দুটি বিদেশি প্রতিষ্ঠান—ওরাসকম কনস্ট্রাকশন এবং আরব কন্ট্রাক্টরস। পুরো বিনিয়োগ তাদের তরফ থেকেই আসবে, চসিক কেবল ভূমি বরাদ্দ ও প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করবে।

মনোরেল প্রকল্পের তিনটি সম্ভাব্য রুটের মধ্যে প্রথম রুট (লাইন ১) হবে ২৬.৫ কিলোমিটার, যা কালুরঘাট থেকে শুরু হয়ে বহদ্দারহাট, চকবাজার, লালখান বাজার, দেওয়ানহাট হয়ে বিমানবন্দর ও পতেঙ্গায় পৌঁছাবে। দ্বিতীয় রুট (লাইন ২) হবে ১৩.৫ কিলোমিটার, চলবে সিটি গেট থেকে এ.কে. খান, নিমতলী, সদরঘাট হয়ে শহীদ বাশিরুজ্জামান স্কয়ার পর্যন্ত। তৃতীয় রুট (লাইন ৩) ১৪.৫ কিলোমিটার, যা অক্সিজেন থেকে মুরাদপুর, পাঁচলাইশ, আন্দরকিল্লা, কোতোয়ালি হয়ে ফিরিঙ্গি বাজারে গিয়ে শেষ হবে।

আরব কন্ট্রাক্টরস ও ওরাসকম পেনিনসুলা কনসোর্টিয়ামের প্রতিনিধি কাউসার আলম চৌধুরী বলেন, মনোরেল হবে পরিবেশবান্ধব ও আধুনিক পরিবহন ব্যবস্থা। এটি পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) মডেলে বাস্তবায়িত হবে এবং বিনিয়োগ আসবে NAS Investment ও National Bank of Egypt-এর মাধ্যমে।

তিনি আরও জানান, মনোরেল থেকে টিকিট ছাড়াও রাজস্ব আসবে বিজ্ঞাপন, স্টেশনসংলগ্ন দোকান এবং আশপাশের জমির মূল্যবৃদ্ধির মাধ্যমে। একটি কার্যকর গণপরিবহন ব্যবস্থা অর্থনীতিতে ৫ থেকে ৭ গুণ রিটার্ন দিতে পারে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা সরোয়ার কামাল, গ্রেটার চিটাগাং ইকোনমিক ফোরামের সভাপতি আমীর হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী ও সদস্য সচিব নাজির শাহীনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

এআরই/বাংলাধারা

আরও পড়ুন