বাংলাধারা প্রতিবেদন »
নগরীর হাজারীগলিতে বেশি দামে ওষুধ বিক্রিসহ কয়েকটি অপরাধের দায়ে ২৯টি ফার্মেসিকে ১০ লাখ ৯৩ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এছাড়া ঔষধের দাম বেশী রাখার অপরাধে কোতোয়ালী থানা পুলিশ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে।
রোববার (৭ জুন) চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ৪ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নেতৃত্বে এই অভিযানে ওষুধ প্রশাসন, র্যাব এবং চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কর্মকর্তারা অংশ নেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শিরীন আক্তার এবং এস এম আলমগীরের নেতৃত্বে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত বেশি দামে ওষুধ বিক্রি, ফিজিশিয়ান স্যাম্পল বিক্রি, অনুমোদনহীন ওষুধ বিক্রির দায়ে ১৪টি ফার্মেসিকে ৭ লাখ টাকা জরিমানা করে।
অন্যদিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. উমর ফারুকের নেতৃত্বে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত নকল পিপিই-মাস্ক বিক্রি, মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি, বেশি দামে ওষুধ বিক্রিসহ কয়েকটি অপরাধের দায়ে ১০টি ফার্মেসিকে ৩ লাখ ৪৩ হাজার টাকা জরিমানা করে।
এছাড়া নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গালিব চৌধুরীর নেতৃত্বে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত ওষুধ কেনা-বেচার রশিদ সংরক্ষণ না করা, বেশি দামে ওষুধ বিক্রিসহ কয়েকটি অপরাধের দায়ে ৫টি ফার্মেসিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ড. বদিউল আলম জানান, জেলা প্রশাসনের ৪ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হাজারী গলির ওষুধের বাজারে অভিযান পরিচালনা করেন। ওষুধ ক্রয়-বিক্রয়ের রশিদ সংরক্ষণ না করা, বেশি দামে ওষুধ বিক্রি, নকল ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রিসহ নানা অপরাধের দায়ে অভিযানে ২৯টি ফার্মেসিকে ১০ লাখ ৯৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেনের নির্দেশে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে চট্টগ্রামের সব ফার্মেসিতে এই ধরণের তদারকিমূলক অভিযান অব্যাহত রাখা হবে বলে জানান চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের এই কর্মকর্তা।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে চট্টগ্রামে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। এর সঙ্গে ফ্লুসহ নানা রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় ওষুধের চাহিদাও বেড়েছে কয়েকগুণ। ওষুধের চাহিদা বৃদ্ধির এই পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে ফার্মেসিগুলোতে কয়েকগুণ বেশি দামে ওষুধ বিক্রি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন ক্রেতারা।
এছাড়া রোববার দুপুরে উচ্চ মূল্যে ঔষুধ বিক্রয় করার দায়ে হাজারী লেইন থেকে ৩জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মহসীন জানান, রোববার দুপুরে জনৈক সুলতানুল আরেফীন (৪৯) হাজারী গলিতে গিয়ে বিভিন্ন দোকানে ইভেরা সিক্স ট্যাবলেটটি ক্রয় করার জন্য খোঁজ করেন। ছভিলা কমপ্লেক্স এর মেসার্স এ গফুর ফার্মায় ঔষধটি কেনার জন্য গেলে কফিল উদ্দিন (২৮) নামের একজন সেখানে থাকা মোঃ আশরাফ(২৮) ও অনিক ধর(১৮) কে ঔষুধটি আছে কিনা জিজ্ঞাসা করে। অনেকক্ষন অপেক্ষার পর গ্রেফতারকৃত ও পলাতক ব্যক্তি পরষ্পরকে ইশারা করে পরে ক্রেতাকে ঔষুধটির ব্যাপারে জানাবে বলে। কিন্তু পরক্ষণেই পলাতক কফিল উদ্দিন(২৮) উক্ত ঔষুধটি ১ হাজার টাকায় এক পাতা বিক্রির কথা বলে নিজেরা অন্য কাজে ব্যস্ত হইয়া পড়ে। পরে অভিযোগকারী হাজারীগলীর অন্য দোকানে ঔষধটির দাম যাচাই করে একই দোকানে আসলে দোকানদার ঔষধটি শেষ হয়ে গেছে বলে জানায়।
অভিযোগকারী এ বিষয়ে সেখানে অভিযান চালানো কোতোয়ালী থানা পুলিশকে বিষয়টি জানালে পুলিশ তাৎক্ষনিক ভাবে এ. গফুর ফার্মার পরিচালক মোঃ আশরাফ (২৮) কে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে বিষয়টি স্বীকার করে ফার্মেসীতে লুকানো থাকা ইভেরা সিক্স ট্যাবলেটের দুইটি পাতা বের করে দেয়। এসময় পুলিশ দোকানের পরিচালক মো: আশরাফ(২৮), দোকান কর্মচারী অনিক ধর(১৮), মো: আকবর হোসেন(১৮)কে আটক করে। কফিল উদ্দিন(২৮) নামে আরেকজন কৌশলে পালিয়ে যায়।
বাংলাধারা/এফএস/টিএম













