জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনে একের পর এক হয়রানি, অনিয়ম আর ঘুষের অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরেই চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসের বিরুদ্ধে। এক অফিস থেকে আরেক অফিসে ঘুরে ক্লান্ত নাগরিকেরা হারাচ্ছেন ধৈর্য, মরছে অধিকার।
আনোয়ার হোসেন, কক্সবাজারের রামু উপজেলার বাসিন্দা। জাতীয় পরিচয়পত্রে নাম সংশোধনের জন্য গত এক বছর ধরে ছুটছেন চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসে। প্রতিদিন নতুন নতুন অজুহাতে তাকে ঘুরানো হচ্ছে এক কক্ষ থেকে আরেক কক্ষে। তবু মিলছে না কাঙ্ক্ষিত সংশোধন।
এমন ভোগান্তির শিকার শুধু আনোয়ার হোসেন নন। নির্বাচন অফিসে আসা আরও অনেকে জানিয়েছেন একই রকম হয়রানির কথা। অভিযোগ উঠেছে, উপজেলা অফিসের দায়িত্ব ঠেলে দেওয়া হয় জেলা অফিসে, সেখান থেকে বিভাগীয় অফিসে, শেষ পর্যন্ত আঞ্চলিক অফিসেও শুরু হয় নতুন করে প্রতারণা।
এই সব অভিযোগের ভিত্তিতে আজ বুধবার(১৮ জুন) দুপুরে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসে হঠাৎ অভিযান চালায়। দুদকের চট্টগ্রাম অঞ্চলের সহকারী পরিচালক এমরান হোসেন জানান, সেবা নিতে আসা অন্তত ছয়জন গ্রাহকের কাছ থেকে হয়রানির অভিযোগ পেয়েই এই অভিযান চালানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, “আমরা কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র সংগ্রহ করেছি। গ্রাহকের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার ঘটনায় কয়েকটি ব্যাংক একাউন্টের তথ্যও পাওয়া গেছে। অভিযোগের সত্যতা মিললে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এদিকে, অভিযানের বিষয়ে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন বলেন, “দুদক যে তথ্য চেয়েছে আমরা দিয়েছি। যদি আমার অফিসের কোনো কর্মকর্তা এই অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকে, অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
দুদকের এই উদ্যোগে খানিকটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন ভুক্তভোগীরা। তারা বলছেন, নিয়মিত তদারকি থাকলে হয়রানি অনেকটাই কমে আসবে। প্রশ্ন উঠছে ,জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের মতো মৌলিক সেবায় যদি এমন দুর্নীতির জাল বিছানো থাকে, তবে সাধারণ নাগরিক যাবে কোথায়?
এআরই/বাংলাধারা