২৪ অক্টোবর ২০২৫

চট্টগ্রাম উত্তরে যুবলীগের শিষ্টাচার বহির্ভূত সম্মেলন

চট্টলার রাজনীতির জীবন্ত কিংবদন্তীকে অসম্মান

বাংলাধারা প্রতিবেদক»

১৯ বছর পর শুরু হয়েছে চট্টগ্রাম উত্তরজেলা যুবলীগের  সম্মেলন। সম্মেলনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে গতকদিন যাবত ছিলো ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা। নেতাকর্মীদের সকল উৎসাহ উদ্দীপনা অসন্তোষে পরিণত হয়েছে সম্মেলনের মঞ্চে বীর চট্টলার রাজনীতির জীবন্ত কিংবদন্তী ইঞ্জিনিয়ার মোশারফকে প্রধান অতিথির পাশের চেয়ারে দেখে।

রোববার (২৯ মে) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হাটহাজারীর পার্বতী স্কুল মাঠে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ। সম্মেলন শুরুর পর সম্মেলন স্থলে হাজির হোন আওয়ামীলীগের বর্ষীয়ান নেতা ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন। তাকে প্রধান অতিথি হিসেবে দেখতে না পেয়ে নেতা কর্মীরা স্নায়ু ক্ষোভ তৈরী হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উত্তর জেলা যুবলীগের এক কর্মী বলেন, ‘ ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ যখন রাজনীতি শুরু করে তখন মঞ্চে বসে থাকা অনেক নেতার জন্মই হয়নি। চট্টগ্রামের আওয়ামীলীগের জন্য ইঞ্জিনিয়ার মোশারফের যে অবদান, আজকের ঘটনার মাধ্যমে ইতিহাসের সেই অবদানকে ছোট করা হয়েছে।’  এই ঘটনাকে চট্টলার রাজনীতির অন্যতম স্ক্যান্ডাল বলে মন্তব্য করেন তিনি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বয়ে যাচ্ছে নিন্দার ঝড়। এই ব্যাপারে জানার জন্য উত্তর জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন চট্টল শার্দুল এম.এ. আজিজের হাত ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত হোন। স্বাধীনতা আন্দোলনে অতপ্রোতভাবে জড়িত হন। ১৯৭০ সালে তিনি সর্বপ্রথম তৎকালীন পূর্বপাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। স্বাধীনতার পর তিনি ১৯৭৩, ১৯৮৬, ১৯৯৬, ২০০৮,২০১৪ এবং ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮ খ্রিঃ তারিখে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭২ সালে তিনি সংবিধান প্রণেতাদের মধ্যে তিনি অন্যতম।

১৯৮৬ সালে জাতীয় সংসদে তিনি বিরোধী দলীয় হুইপের এবং ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারে তিনি অত্যন্ত দক্ষতা ও সততার সাথে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৮ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি জাতীয় সংসদে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

রাজনীতিতে আসার পর তিনি দলের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৫ সালে তিনি চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বাকশাল এবং ’৭৭ সালে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়কের দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া ১৯৮০ ও ৮৪ সালে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং ১৯৯২, ১৯৯৬, ২০০৪ এবং ২০১২ সালে সভাপতি এবং একই সাথে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

স্বাধীনতা পদক পাওয়া এই বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদের সাথে আজকের ঘটে যাওয়া ঘটনা পরের প্রজন্মকে কি বার্তা দিচ্ছে, তা কি ভেবে দেখছেন নেতারা?

আরও পড়ুন