৯ ডিসেম্বর ২০২৫

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাশেই ময়লার ভাগাড়

মাকসুদ আহম্মদ, বিশেষ প্রতিবেদক »

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাশেই ময়লার বিশাল ভাগাড় কক্সবাজারের চকরিয়ায়। কৈয়ারবিল এলাকার ইসলামনগরে ময়লার দুর্গন্ধে আকাশ বাতাস ভারি হয়ে আসছে। কক্সবাজার জেলার প্রশাসন পর্যটকদের বিষয়টি আমলে নিচ্ছে না। এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সচেতনদের মনে। তবে অভিযোগ উঠেছে ইচ্ছাকৃতভাবে পৌর মেয়রদের নির্দেশনায় মহাসড়কের দু’পাশকে ময়লার ভাগাড়ে পরিণত করা হচ্ছে। জলাশয় ভারাটের টার্গেট নিয়ে এগুচ্ছে ভূমিদস্যুরা। এতে পৌরসভাগুলো অনেকটা প্রতিযোগীতায় নেমেছে এমন মন্তব্য কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ(সওজ) বিভাগের। সাইনবোর্ড লাগিয়েও ময়লার ভাগাড় বানানো এমন কর্মকান্ডকে দমানো যাচ্ছে না। ফলে জনস্বাস্থ্যের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। কক্সবাজার বিমুখ হচ্ছে পর্যটকরা।

নখের পিঠের মত মসৃণ সড়কের পাশে এমন ময়লার ভাগাড় থাকায় পথচারী আর পরিবহনের যাত্রীদের নাকাল অবস্থা। কারন আকাশে বাতাসে উড়ছে ময়লা আবর্জনা আর বর্জ্য পদার্থের পোড়া বিষাক্ত ও দূষিত জীবানু। এ সড়কে চলমান বেশিরভাগ পরিবহনই আচ্ছাদিত নয়। পাবলিক গাড়িগুলোর চালক থেকে শুরু করে হেলপার ও যাত্রী কেউই বাদ পড়ছে না দূষিত অক্সিজেন থেকে। শুধু তাই নয়, খোলা এই ময়লার ভাগাড়ে খাদ্য নিবারনে আসছে পশুপাখি থেকে শুরু করে মানসিক প্রতিবন্ধিরাও। আর রাস্তার পাশ দিয়ে হেঁটে চলা পথচারীরাও দু’হাতে নাক চেপে ধরেও দুর্গন্ধ থেকে নিস্তার পাচ্ছেন না। এমনকি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাস, জীপ ও কারের যাত্রীরাও বাদ পড়ছেন না। কারন এসির এয়ারফিল্টারের মাধ্যমেও আংশিক দুর্গন্ধ গাড়ীতে প্রবেশ করা মাত্রই অস্বস্তিকর পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে উচ্চবিত্তদের।

অভিযোগ রয়েছে, কক্সবাজারের চকরিয়াস্থ কৈয়ারবিল এলাকার ইসলামনগরে এ ময়লার ভাগাড়ের অবস্থান। কক্সবাজার মহাসড়কের পাশেই এমন পরিস্থিতির শিকার হবেন পর্যটকরা এমনটি কখনো আশা করেনা। শুধু দেশি পর্যটকই নয় বিদেশী পর্যটকরাও বাদ নেই এমন ভোগান্তি থেকে। চকরিয়া এলাকার প্রত্যেকটি ইউনিয়নের ময়লার ভাগাড় বানানো হয়েছে মহাসড়কের পাশে থাকা বিশাল এই স্পটকে। চেয়ারম্যানের নির্দেশেই ময়লা ফেলা হচ্ছে এমন তথ্য সেবকদের। নির্দেশ অমান্য করলে কটু কথা শুনিয়ে দেন সংশ্লিষ্টরা। এমনকি চাকরী খেয়ে ফেলার হুমকীও দেওয়া হয় এসব নিরীহদের। এমন পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়ে সেবকরা চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাশে ইউনিয়নবাসীদের উচ্ছিষ্ট ও ময়লা আবর্জনা ফেলতে বাধ্য হয়।

আরো অভিযোগ রয়েছে, কাকপক্ষী আর প্রাণীকুলের সঙ্গে এসব ময়লার ভাগাড়ের জীবানু চলে যাচ্ছে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে। এসব জীবানু থেকে সৃষ্টি হচ্ছে নানা রোগব্যাধী। এমকি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকেও ময়লার ভাগাড় সরাতে কোন ধরনের চিঠি চালাচালী বা অভিযোগ নেই। স্বাস্থ্য কর্মকর্তার এমন উদাসীন ভূমিকায় উদ্বিগ্ন উপজেলাবাসী। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পার্শ্বে এমন একটি ভাগাড় পর্যটকদের হয়রানি ছাড়া আর কিছু নয়। সুবিশাল এ ময়লার ভাগাড়ে সাদা বক, শালিক, কাক ছাড়াও শিয়াল কুকুরের উপস্থিতিও কম নয়। শুধু তাই নয় মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষও খাবারের সন্ধানে সেখানে অবস্থান নেয়।

সচেতন নাগরিকেদের পক্ষে আনোয়ার হোসেন বাংলাধারাকে বলেন, ময়লা না ফেলতে সওজ সাইনবোর্ডও লাগিয়েছিল। সাইনবোর্ডে লেখা ছিল ‘এখানে ময়লা ফেলবেন না’, ‘মিডিয়ান এলাকায় ময়লা ফেলবেন না’ কিন্তু কে কার কথা শোনে। যেন আরো বেশি করে ময়লা ফেলার মহোৎসবে মেতে উঠেছে স্থানীয়রা। অথচ ভুগতে হচ্ছে পথচারী আর যাত্রীদের। তবে স্থানীয় বসবাসকারীরাও কোনভাবে পার পাচ্ছেন না। ভাগাড় এলাকার আবাসস্থলগুলোতে নিত্য রোগ বালাই লেগেই রয়েছে।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রকৌশলী জমির উদ্দিন বাংলাধারাকে বলেন, এ ব্যাপারে কিছু বললে সরকারী উন্নয়ন ব্যহত হবে। তবে ময়লার ভাগাড়ের স্থানে আমাদের পক্ষ থেকে নির্দেশনা মূলক সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছিল। কিন্তু কার কথা কে শোনে। মনে হয় ময়লা ফেলতে নিষেধ করায় লোকজন নিরুৎসাহিত না হয়ে উৎসাহিত হয়েছে।

আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও

সর্বশেষ