বাংলাধারা প্রতিবেদন »
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে এসআরও সুবিধার অপব্যবহার করে প্রায় ৮ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে ঢাকার একটি আমদানিকারক কোম্পানি।
বুধবার (৩০ ডিসেম্বর) উক্ত চালানটি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের এসআরও সুবিধার অপব্যবহার করে শুল্কায়ন করে খালাসের পর্যায়ে রয়েছে।
ঢাকার আরপিসিএল নরেনকো ইন্টারন্যাশনাল পাওয়ার লিমিটেড চীন হতে ৮ লক্ষ ৩১ হাজার ১৪৯ মার্কিন ডলারের ৭৫০০ টন পাইপ পাইল বিদ্যুৎ প্লান্টের নামে আমদানি করে।উক্ত চালানের সঠিক এসেসমেন্ট করা গেলে প্রায় ৮ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করা সম্ভব হতো।
বৈদ্যুতিক প্লান্টের নামে চীনের উয়ানবাও ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি মাদার ভেসেল এমভি সুফিয়া- জাহাজে উক্ত পন্য চালান চট্টগ্রাম বন্দরে পাঠায়। চালানটি খালাসের জন্য গত ১৭ ডিসেম্বর আগ্রাবাদের ঠিকানায় সিএন্ডএফ এজেন্ট মা ট্রেডিং আমদানীকারকের প্রতিনিধি হিসেবে কাস্টমসে বিল অব এন্ট্রি দাখিল করেন (বি/ই সি নং ১৭৫৯৬৬৫)।
কিন্তু কাস্টমস তথ্যমতে পণ্য পাইপ পাইল এসআরও নং ৭০ আইন/২০২০/কাস্টমস এর সুবিধা পায় না।
এসআরও শর্তে বলা আছে, বৈদ্যুতিক প্লান্টে মুল ইক্যুইপমেন্ট যা বিদ্যুৎ উৎপাদনে সরাসরি জড়িত পন্য ছাড়া অন্য কোন পণ্য এসআরও সুবিধার অন্তভুক্ত নয়।
কাস্টমস এস.আর.ও. নং ৭০ এর ১৩ নং শর্তে উল্লেখ আছে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সাথে সম্পর্কি নহে, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের ব্যবহার্য নহে এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় প্লান্ট ও ইক্যুইপমেন্ট, ইরেকশন ম্যাটেরিয়ালস, যস্ত্রপাতি ও যন্ত্রপাতির অংশ নয় এইরুপ তফসিলে বর্ণিত বাংলাদেশে সহজলভ্য ও কনজিউম্যাবল পণ্য এ প্রজ্ঞাপনের অধীনে রেয়াতি সুবিধায় আমদানিযোগ্য হবে না।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সিনিয়র সচিব আবু হেনা রহমাতুল মুমিন স্বাক্ষরিত একটি প্রজ্ঞাপনে ১৯টি পণ্যের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে যা এসআরও সুবিধা পাবে না। এর মধ্যে রয়েছে স্টীল শিট, স্টীল রড, স্টীল পাইপ, সব ধরণের সিমেন্ট, বোল্ডার স্টোন, বৈদ্যুতিক লাইট- ফিটিংস, ট্রান্সমিশন টাওয়ার, ক্যাবল, সকল প্রকার বিতরণ ট্রান্সফরমার, রং, গৃহস্থলী সামগ্রী, রসায়নিক দ্রব্য, লুব্রিকেটিং, অয়েল, আসবাবপত্র অফিসিয়াল সরঞ্জাম, ইয়ার কন্ডিশন, ড্রেজার, এ্যাংকার বোট ইত্যাদি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সিএন্ডএফ এজেন্ট মা ট্রেডিংয়ের সত্ত্বাধিকারী সারওয়ার ইশান জিয়া বলেন, উক্ত চালান খালাসের জন্য মন্ত্রনালয় হইতে প্রত্যায়ন পত্র নেয়া হয় । এ প্রত্যায়ন পত্রের পরিপেক্ষিতে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস উক্ত চালান এসআরও সুবিধায় খালাসের জন্য অনুমোদন দিয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের সংশ্লিষ্ট শুল্কায়ন সেকশন ৮বি এর ডেপুটি কমিশনার রিয়াদুল ইসলাম বলেন, চট্টগ্রাম কাস্টমসে বিল অব এন্ট্রি দাখিলে পর আমরা অনেক যাচাই বাছাই করেছি। আমরা চালানটি দ্রুত খালাস না দিয়ে একটু দেখে শুনে খালাস দেওয়ার চেষ্টায় ছিলাম। এতে সংশ্লিষ্ট সিএন্ডএফ এজেন্ট মন্ত্রনালয়ের প্রত্যায়ন পত্র নিয়ে এসেছেন ফলে আমরাও এসআর ও সুবিধায় ছাড় দিয়েছি।
এসআরও শর্তের অপব্যহার ব্যবহার সম্পর্কে তিনি বলেন, এক সিএন্ডএফ এজেন্ট অপর সিএন্ডএফ এজেন্টর বিরুদ্ধে ভুল বুঝায় । কাজ না পেলে আটকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে, এগুলো সব সময় সত্য হয় না।
বাংলাধারা/এফএস













