২৪ অক্টোবর ২০২৫

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে স্যাটেলাইট স্টেশন নির্মাণ শুরু

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে দেশের প্রথম ওশান স্যাটেলাইট গ্রাউন্ড স্টেশনের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। এই স্টেশনের মাধ্যমে ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাসসহ উপকূলীয় দুর্যোগের দ্রুত পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব হবে। স্টেশনটি মাত্র ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে উপকূলীয় এলাকার বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করতে পারবে।

বঙ্গোপসাগরকে কেন্দ্র করে তৈরি এই স্টেশন চীনের স্যাটেলাইটগুলোর মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে তথ্য সংগ্রহ করতে পারবে। এতে করে দেশের সমুদ্র ও বিমানবন্দর সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থাকে সঠিক তথ্য, পূর্বাভাস, সতর্কতা ও পরামর্শ দেওয়া সম্ভব হবে।

২০২৪ সালের ডিসেম্বরে চীনের সেকেন্ড ইন্সটিটিউট অব ওশানোগ্রাফির সঙ্গে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। সেই ধারাবাহিকতায় ২০২৫ সালের ২৬ মার্চ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্রবিজ্ঞান অনুষদে এই গ্রাউন্ড স্টেশনের নির্মাণকাজ শুরু হয়।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের মতে, প্রায় ৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই স্টেশন নির্মাণ হচ্ছে। এর মধ্যে প্রায় ৬০ কোটি টাকার যান্ত্রিক ও কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে চীনা প্রতিষ্ঠানটি। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় লোকবল, নিরাপত্তা ও গবেষণা পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে।

বর্তমানে বাংলাদেশ ঘূর্ণিঝড় ও আবহাওয়ার পূর্বাভাস দিতে যুক্তরাষ্ট্রের NOAA, JTWC এবং ভারতের IMD-এর মতো বিদেশি সংস্থার উপর নির্ভর করে। এসব তথ্য বিশ্লেষণ করে পূর্বাভাস দিতে ২০ থেকে ৩০ ঘণ্টা সময় লাগে, যা সময়সাপেক্ষ এবং পরনির্ভরশীল।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্রবিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক ও প্রকল্প সমন্বয়ক ড. মোহাম্মদ মোসলেম উদ্দিন জানান, নতুন এই স্টেশন চালু হলে চীনের HY-1SI/D ও FY-4B স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সমুদ্রের তাপমাত্রা, বাতাস ও মেঘের গতিবিধি বিশ্লেষণ করে ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টা আগেই নির্ভরযোগ্য পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব হবে।

ইতোমধ্যেই প্রকল্প বাস্তবায়নে চায়না হারবার ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। চলতি বছরের মধ্যেই নির্মাণকাজ শেষ করে স্টেশন চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে। ২০৩৫ সালের মধ্যে এই প্রকল্পটি আর্থিকভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে বলেও আশা প্রকাশ করা হয়েছে।

এআরই/বাংলাধারা

আরও পড়ুন