২৫ অক্টোবর ২০২৫

চবিতে একুশে পদকপ্রাপ্ত আজাদী সম্পাদককে সংবর্ধনা

চবি প্রতিনিধি »

একুশে পদকে ভূষিত বরেণ্য সাংবাদিক ও দৈনিক আজাদী পত্রিকার সম্পাদক এম এ মালেককে সংবর্ধনা দিয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি)।

বৃহস্পতিবার (২ জুন) বেলা ১২টায় উপাচার্যের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ সংবর্ধনা প্রদান করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার এবং উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দে, রেজিস্ট্রার এসএম মনিরুল হাসান, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি ও বিভিন্ন অনুষদের ডিনবৃন্দ। এছাড়াও এম এ মালেকের দুই সন্তান ওয়াহিদ মালিক ও শিহাব মালিক, সাংবাদিক এবং শিক্ষার্থীরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

এসময় বড় ছেলে ওয়াহিদ মালিক আজাদী পরিবারের পক্ষ থেকে সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়ে ভবিষ্যতে আরও বড় করে এই বৃত্তি কার্যক্রম পরিচালনা করার আশা ব্যক্ত করেন। ছোট ছেলে শিহাব মালিক সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এমন এক মহৎ মানুষকে বাবা হিসেবে পেয়ে।

অনুভূতি প্রকাশ করে যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের তাসনুভা বলেন, আমাদেরকে এ বৃত্তি অনুপ্রেরণা এবং উৎসাহ যোগায়। এজন্য ধন্যবাদ আজাদী পত্রিকার পরিবারকে।

একজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা প্রতিবন্ধীরা অনেক প্রতিকূলতার মধ্যে পড়াশোনা করছি। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হওয়ায় আমরা টিউশন করার সুযোগ পাই না। এই আর্থিক সহায়তা আমাদের জন্য অনেক বড় কিছু এবং পড়াশোনা করার জন্য অনুপ্রেরণা জোগায়।’

অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত অতিথি একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক এম এ মালেক বলেন, ‘আমরা আমাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করবো মেধাবী এবং প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের সাহায্য করার। আমরা প্রতিষ্ঠান সুপারিশ করলে যেকোনো প্রতিবন্ধীদের সহায়তা করবো।’

আজাদী সম্পাদক বলেন, ‘সাধারণ হওয়া একটা অসাধারণ ব্যাপার, সেটা সকলেই পারে না। আমি সাধারণ হয়ে থাকতে চাই, পদক পাওয়ার প্রত্যাশা নিয়ে কিছু করিনি। সামাজিক কাজ করতে হবে, কিন্তু কিছু পাওয়ার আশায় নয়।’

এম এ মালেক বলেন, ‘আমি কখনোই কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাইনি। বিশ্ববিদ্যালয়ে না পড়েও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংবর্ধিত হতে পেরে নিজেকে গৌরবান্বিত মনে করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আজাদী স্বাধীন বাংলার ১ম কাগজ। সেদিন আমাদের স্লোগান হেডলাইন ছিলো ‘জয় বাংলা, বাংলার জয়’। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ— সেই স্লোগানকে জাতীয় স্লোগান হিসেবে ঘোষণা করায়।’

উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার বলেন, ‘আমার বাবার সকাল শুরু হতো চা, বিস্কুট আর আজাদী পত্রিকার সাথে। একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক এম এ মালেককে সংবর্ধিত করতে পেরে মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ই সম্মানিত হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘মালেক ভাই শুধু যে একজন সাংবাদিক তা না। তিনি জন্মগতভাবেই একজন সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান। তা সত্ত্বেও তিনি সর্বস্তরের মানুষের প্রতি যে বিনয় আচরণ করেন তা সত্যিই প্রসংশার দাবিদার।’

এর পাশাপাশি ২০২১-২০২২ সালে রাষ্ট্রপতির ঐচ্ছিক তহবিল থেকে ১২ জন দৃষ্টি প্রতিবন্ধীকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন। অনুষ্ঠান শেষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (চবিসাস) পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানানো হয়। সেখানে চবিসাসের সকল সাংবাদিক সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল খালেক দৈনিক আজাদী বৃত্তি নামে ২০০০ সালে যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থীদের উৎসাহ প্রদানের জন্য এই বৃত্তি চালু হয়। পরবর্তীতে ২০১৬ সাল থেকে অন্যান্য বিভাগেও চালু করা হয়। বর্তমানে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদেরকেও এই বৃত্তির আওতাভুক্ত করা হয়েছে।

আরও পড়ুন