৪ নভেম্বর ২০২৫

চবিতে ছাত্রলীগের সংঘর্ষের ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি

চবি প্রতিনিধি »

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের দুপক্ষের সংঘর্ষে ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যে কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. শ্যামল রঞ্জন চক্রবর্তীকে আহবায়ক, তথ্য ও ফটোগ্রাফি শাখার সহকারী রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ হোসাইনকে সচিব এবং সহকারী প্রক্টর আহসানুল কবির পলাশকে সদস্য করে কমিটি গঠন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার এ কমিটি গঠন করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কে এম নুর আহমদ বলেন, গত ৩০ নভেম্বর সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ আবদুর রব হলে একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মারামারির ঘটনা এবং ১ ডিসেম্বর ক্যাম্পাসের দুই কিলোমিটার দূরে হাটহাজারী এগারমাইল এলাকায় দুই (একজন প্রাক্তন) শিক্ষার্থী আক্রান্ত হওয়ায় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনার সময় ও আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর চারটি গাড়ী, প্রক্টরের একটি গাড়ী এবং জিরো পয়েন্টে ওয়াচটাওয়ার ভাংচুরের ঘটনায় এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কমিটিকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তদন্ত করে রিপোর্ট প্রদানের জন্য বলা হয়েছে।

এর আগে ২৯ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) রাতে শহীদ আবদুর রব হলের টিভি রুমে মিটিং বসাকে কেন্দ্র করে করে দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়িয়েছে দুটি পক্ষ চুজ ফ্রেন্ড উইথ কেয়ার (সিএফসি) এবং ভার্সিটি এক্সপ্রেস (ভিএক্স)। এর মধ্যে গত ১ ডিসেম্বর (রোববার) সন্ধায় হাটহাজারী উপজেলার এগারো মাইল এলাকায় সিএফসি গ্রুপের নেতা শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি নাসির উদ্দিন সুমন ও ছাত্রলীগ কর্মী আব্দুল্লাহ আল নাহিয়ান রাফিকে কুপিয়ে জখম করে প্রতিপক্ষের নেতাকর্মীরা। এমন খবর পেয়ে দুইপক্ষ ফের সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।

এসময় পুলিশ কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ ও জলকামান ব্যবহার করে উভয়পক্ষকে নিবৃত্ত করে। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্টে থাকা পুলিশের চারটি গাড়ি, প্রক্টরের একটি গাড়ি ও ওয়াচ-টাওয়ারে ভাংচুর চালানো হয়।

পরে দুই ছাত্রলীগ নেতার ওপর হামলার মদদদাতাদের গ্রেফতার ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের দাবি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টার অপসারণের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের অবরোধের ডাক দেয় সিএফসির নেতাকর্মীরা। চট্টগ্রামে রাষ্ট্রপতির আগমন উপলক্ষে সোমবার সকালে অবরোধ শিথিল করে সিএফসি।

এই ঘটনায় ৩৬ জনকে আসামী করে উভয় পক্ষ পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করে হাটহাজারী মডেল থানায়।

বিবাদমান পক্ষ দুটি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেলের অনুসারী বগি ভিত্তিক উপগ্রুপ ‘চুজ ফ্রেন্ডস উইথ কেয়ার (সিএফসি)’ ও শাখা ছাত্রলীগের সাবেক উপ-দফতর সম্পাদক মিজানুর রহমান বিপুলের অনুসারী ‘ভার্সিটি এক্সপ্রেস (ভিএক্স)’। এর মধ্যে রুবেল আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী এবং বিপুল নগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী দিবসে ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের এই দুটি পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ চলাকালে প্রতিপক্ষের ছোড়া গুলিতে নিহত হয়েছিলেন সিএফসি কর্মী ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী তাপস সরকার।

বাংলাধারা/এফএস/টিএম

আরও পড়ুন