২৩ অক্টোবর ২০২৫

চবিতে পরীক্ষায় ফেল, হতাশায় আত্মহত্যার চেষ্টা শিক্ষার্থীর

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের এক শিক্ষার্থী স্নাতক শেষ বর্ষের পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ার পর চরম মানসিক হতাশায় আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের পাঁচতলার রেলিং থেকে ঝাঁপ দেওয়ার চেষ্টাকালে এক কর্মচারীর উপস্থিত বুদ্ধিতে রক্ষা পান তিনি। শিক্ষার্থীর অভিযোগ, ফলাফল সঠিক হয়নি এবং খাতা পুনঃমূল্যায়নের সুযোগ না থাকায় তিনি এই অবস্থায় পৌঁছেছেন।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) এমবিএ কোর্সের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের এক শিক্ষার্থী, যিনি নিজেকে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের বলে দাবি করেন, গত বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দুপুরে প্রশাসনিক ভবনের পঞ্চম তলায় উঠে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।

জানা গেছে, ওই শিক্ষার্থী স্নাতক ফাইনাল পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ১২৪ জনের মধ্যে একমাত্র একজন যিনি একটি থিওরি কোর্সে অকৃতকার্য হয়েছেন। তার দাবি, তিনি পরীক্ষায় সন্তোষজনকভাবে উত্তর দিয়েছেন এবং ফেল করার মতো কিছু লেখেননি। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক ও প্রশাসনের কাছে পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানালেও কোনো সদুত্তর পাননি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই শিক্ষার্থী বলেন, “অতীতে কোনো পরীক্ষায় আমি ফেল করিনি। এই কোর্সে মাত্র ছয়টি ক্লাস হয়েছে, তবুও আমি ভালো প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষা দিয়েছি। আমার খাতা যদি অন্য কোনো শিক্ষক পুনরায় দেখেন, তবেই সত্যতা বের হবে। যদি প্রমাণ হয় আমি ফেল করেছি, আমি নিজেই সরে যাব।”

তিনি আরও বলেন, “৮ বছর ধরে অনার্স শেষ করছি। এই মানসিক চাপ আর নিতে পারছি না। একজন শিক্ষার্থী না মরলে চবির নিয়ম বদলায় না, যেমন মানুষ না মরলে ১৭ বছরেও সরকার বদলায় না।”

বিষয়টি নিয়ে কোর্স শিক্ষক ড. মোহাম্মদ জামাল উদ্দীন বলেন, “আমরা শিক্ষার্থীদের ভালো ফলাফলের জন্য আন্তরিকভাবে পড়াই। তবে পরীক্ষায় কে পাস বা ফেল করবে, তা নির্ধারণ হয় গোপন কোডিংয়ের মাধ্যমে দুইজন পরীক্ষকের মূল্যায়নে। ইন্টারনাল মার্কসে সে ভালো করলেও ফাইনাল খাতায় অকৃতকার্য হয়েছে।”

তিনি আরও জানান, “ছয়টি ক্লাস হয়েছে এই অভিযোগ ভিত্তিহীন। আমি চিকিৎসার কারণে ভারতে থাকলেও যথাসম্ভব ক্লাস নিয়েছি।”

ঘটনাটির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান বলেন, “আমরা অভিযোগ পেয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী কী করা সম্ভব, তা আন্তরিকতার সঙ্গে বিবেচনা করছি।”

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যমান নিয়ম অনুযায়ী খাতা পুনঃনিরীক্ষণের কোনো সুযোগ নেই। ফলে ফলাফলে অসন্তুষ্ট হলেও শিক্ষার্থীদের আর কোনো প্রতিকার থাকে না।

এআরই/পিএন/বাংলাধারা

আরও পড়ুন