৩০ অক্টোবর ২০২৫

চবিতে ফের অবরোধ: ছাত্রলীগ সম্পাদকের পদত্যাগ দাবি, শাটল চলাচল বন্ধ

চবি প্রতিনিধি »  

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শাখা ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মারধরের ঘটনায় গত ২২ জানুয়ারি অবরোধের ডাক দেয় সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মদ ইলিয়াছের অনুসারী ‘বিজয়’ গ্রুপ। ওই অবরোধ শেষ না হতেই ফের অবরোধের ডাক দেয় সাবেক উপ-বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি সম্পাদক রকিবুল হাসান দিনারের অনুসারী ‘রেড সিগনাল’ (আর এস)। তবে রাত নয়টার দিকে অবরোধ স্থগিত করা হয়েছে শোনা গেলেও রেড সিগনাল গ্রুপের নেতা রকিবুল হাসান দিনারের ফোন বন্ধ পাওয়ায় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

সোমবার (২৭ জানুয়ারি) বিকাল তিনটার দিকে সমাজবিজ্ঞান অনুষদে রেড সিগনালের দুই কর্মীকে মারধরের ঘটনায় দুই দফা দাবিতে এ অবরোধের ডাক দেয় গ্রুপটি। এতে বিকাল থেকে বন্ধ থাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল চলাচল।

ছাত্রলীগ সূত্রে জানা যায়, সোমবার বিকাল তিনটার দিকে সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ক্যাফেটেরিয়ায় রেড সিগনালের কর্মী ও ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র এমরান আশিক ও একই বিভাগের ১৭-১৮ শিক্ষার্থীবর্ষের মো. আরমানকে মারধর করে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপুর অনুসারী ‘সিক্সটি নাইন’ গ্রুপের কর্মীরা। আহত অবস্থায় তাদের হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে বিকাল সাড়ে চারটার দিকে সিক্সটি নাইন গ্রুপের কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয় এক নং রেলক্রসিংয়ে এলাকাবাসীর উপর হামলা করেছে বলে অভিযোগ রেড সিগনাল গ্রুপ।

এদিকে তিনটার দিকে মারধরের পর ক্যাম্পাসে থেকে ছেড়ে যাওয়া আড়াইটার শাটল ট্রেন ফতেয়াবাদ স্টেশনে আসলে শাটলের কেটে নেয় দুর্বৃত্তরা। তখন থেকে ক্যাম্পাসগামী সকল ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় রুটে আর শাটল চলাচল করেনি। নগরী থেকে রাতের শাটলও ছেড়ে যায়নি।

এ বিষয়ে সাবেক উপ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল হাসান দিনার বলেন, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আমার ছেলেদের উপর হামলা করেছে সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীরা। আবার এলাকাবাসীর ওপরও হামলা করেছে তারা। তাদের শাস্তি এবং এসব ঘটনায় ইকবাল টিপুর পদত্যাগের দাবিতে আমাদের অনির্দিষ্টকালের অবরোধ চলবে।

আর এলাকাবাসীর উপর হামলার ঘটনা জানেন না বলে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু বলেন, ‘এখন ট্রেন্ড হয়ে গেছে কিছু হলেই অবরোধ। অবরোধ তো মামার বাড়ির মুয়া না। কেউই ঝামেলা করার সময় আমার অনুমতি নেয় না। নিজেরা নিজেরা ঝামেলা করে। এখন দোষ কার? সেক্রেটারির, এরকম? প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত যারা গণ্ডগোল করছে কেন্দ্রের সাথে কথা বলে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিব।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এসএম মনিরুল হাসান বলেন, অবরোধের বিষয়টা আমরা জেনেছি। উভয় পক্ষের সাথে কথা বলে সমাধানের চেষ্টা চলছে।

তিনি বলেন, ছাত্ররা বারবার নিজের মধ্যে মারামারি করে ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করে তুলছে। তবে আমরা কাউকে ছাড় দিব না।

প্রসঙ্গত, গত ২০ জানুয়ারি প্রক্টর কার্যালয়ে আরএস গ্রুপের কর্মী মো. শুভকে মারধর করে সিক্সটি নাইন গ্রুপের কর্মী ইফরাতুল আলম পিটু। এ ঘটনায় এক মাসের পিটুকে বহিস্কার করে ছাত্রলীগ। পরে ২২ জানুয়ারি সিক্সটি নাইন গ্রুপের তিন কর্মীকে মারধর করে মুখোশধারী দুর্বৃত্তরা। এদিকে সেদিন সিএফসি ও বিজয় গ্রুপের সংঘর্ষের জেরে সভাপতি রেজাউল হক রুবেলের বহিস্কারের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবরোধ ডাকে বিজয় গ্রুপ। পরে প্রশাসনের আশ্বাসে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত অবরোধ শিথিল করা হয়েছিল।

বাংলাধারা/এফএস/টিএম

আরও পড়ুন