চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) শুরু হয়েছে পাঁচ দিনব্যাপী অমর একুশে বইমেলা। এবারের মেলার প্রতিপাদ্য বই হোক আনন্দ ও সচেতনতার উপকরণ, বইমেলায় সবাইকে আমন্ত্রণ’। রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় মেলা উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ড. মো. শামীম উদ্দিন খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন এবং সাবেক চাকসু ভিপি এস এম ফজলুল হক।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার বলেন, ‘বইমেলায় আসা গল্পগুজব করা এবং বই হাতে নিয়ে নেড়েচেড়ে দেখাও বইমেলার একটি অংশ। প্রতিবছর বই প্রকাশিত হচ্ছে। আমাদের সম্মানিত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বই লিখছেন। তবে আমি পর্যবেক্ষণ করে দেখেছি, বইমেলায় মানসম্মত বইয়ের সংখ্যা ক্রমান্নয়ে হ্রাস পাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি বাংলা একাডেমির জরিপে দেখা গেছে, এক বইমেলায় প্রকাশিত বইয়ের মধ্যে মাত্র ১০ শতাংশ মানসম্মত। বাকি ৯০ শতাংশ বইয়ে ঠিকমতো এডিটিং নেই, বিষয়বস্তু নেই এবং থিম নেই। এজন্য আমি বাংলা একাডেমির বিশৃঙ্খলাকে দায়ী করবো।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চবি উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, ‘একুশকে স্মরণে রেখেই জাতীয় পর্যায়ে বইমেলার যাত্রা শুরু হয়। এরপর থেকেই আস্তে আস্তে এটি বিকেন্দ্রীকরণ হয়েছে। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বইমেলা হচ্ছে। বইমেলার মাধ্যমে পাঠকদেরকে ভিতরে আগ্রহ করে তোলা। এর মাধ্যমে চিন্তা ও মননশীলতার বিকাশ ঘটবে।’
চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদের সভাপতি শাহাবুদ্দিন হাসান বাবু বলেন, ‘বই হচ্ছে প্রকৃত বন্ধু। বই থেকে আমরা জানতে পারি, বুঝতে পারি এবং শিখতে পারি। এজন্য আমাদেরকে বই পড়তে হবে। বইয়ের সঙ্গে বন্ধুত্ব তৈরি করতে হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আহমেদ শান্ত বলেন, ‘বইমেলা শুধু একটা মেলা না। আমাদের চিন্তা মননশীলতার ধারকও বটে। আমরা জাতি হিসেবে বই বিমুখ। আমরা সিস্টেমের জাঁতাকলে পড়ে বইয়ের কাছে যেতে পারি না। বইমেলা শহরে হলে আমাদের অংশগ্রহণ করা কঠিন হয়। এজন্য ক্যাম্পাসে বইমেলা হওয়া আমাদের শিক্ষার্থীদের জন্য ভালো দিক। মেলায় আসলেও যে বই কিনতে হবে বিষয়টি এমন না।’
প্রসঙ্গত, প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়ে রাত ১০টা পর্যন্ত চলবে এই বইমেলা। মেলায় রয়েছে ৩০টি স্টল। এতে জাতীয়, আঞ্চলিক, সাংস্কৃতিক এবং রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর প্রকাশনার বই পাওয়া যাচ্ছে।