চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) একাডেমিক কাউন্সিল সভা চলাকালীন সময়ে অধ্যাপক ড. মু. গোলাম কবিরকে শারীরিকভাবে আক্রমণের প্রচেষ্টা ও তাকে উদ্দেশ্য করে অশালীন বক্তব্য প্রদান করার অভিযোগ উঠে কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড.মোহাম্মদ মাহবুবুল হকের বিরুদ্ধে।তবে অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেন তিনি।
গত ২৫ জুলাই ( মঙ্গলবার) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপাচার্যের সম্মেলনকক্ষে একাডেমিক কাউন্সিলের ২৪৪ তম অনুষ্ঠিত হয়। এ সভায় কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ডিন ও প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও স্পোর্টস সাইন্স বিভাগের সাবেক সভাপতির মধ্যে উচ্চবাচ্য বিনিময় হয়। এ ঘটনার পর ২৬ জুলাই একাডেমিক কাউন্সিল সভায় কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহবুবুল হকের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের বিষয়ে সুবিচার চেয়ে উপাচার্য বরাবর চিঠি দেন অধ্যাপক ড. মু গোলাম কবির।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহবুবুল হক বাংলাধারাকে বলেন, তিনি (অভিযোগকারী) চিঠিতে বলেছেন যে তিনি বক্তৃতা দেওয়ার পরে আমি তাকে আক্রমণাত্মক কথা বলেছি। কিন্তু বিষয়টা এমন না। তিনি আগে বলেছেন কিনা আমি খেয়াল করিনি। এজেন্ডার বিষয় ছিল জাতীয় পর্যায়ের খেলোয়াড়দের পরীক্ষা ব্যতীত স্পোর্টস সাইন্স বিভাগে ভর্তি করা হবে। বিষয়টি নিয়ে সবাই কথা বলেছেন। আমাকে যখন এবিষয়ে বলার সুযোগ দেওয়া হল তখন আমি বললাম ‘ভর্তি পরীক্ষা ব্যতীত ভর্তি করা হলে নৈরাজ্য তৈরি হবে’ ঠিক এই কথা বলার পরে পিছন থেকে একজন জোরে জোরে চিৎকার করছে, আমি কথা বলতে পারছিনা। আমি তখন তাকে বললাম আপনি চুপ করেন। উনি ওনার কথা বলেই যাচ্ছেন। আমি বারবার তাকে বলি আমাকে কথা বলতে দেন। আমার বলার পর আপনি যা বলার বলবেন। কিন্তু উনি ক্রমশ চিৎকার করতে থাকলে, তখন আমিও চিৎকার করি। তখন একটা হৈচৈ অবস্থা তৈরি হয়। তখন আমাদের পাশে যারা ছিলেন তারা আমাদেরকে শান্ত করেন। তখন একজন সিনিয়র অধ্যাপক বললেন এই মাত্র যা ঘটেছে তা ঠিক হয় নাই, তিনি সভাপতিকে (একাডেমিক কাউন্সিল সভার সভাপতি ও চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার) বললেন এটি এক্সপাঞ্জ করুন। তখন সভাপতি বললেন এটা এক্সপাঞ্জ করা হল। তার মানে হল বিষয়টি আমলে নেওয়া হল না এবং এটা এখানে শেষ।
তিনি বলেন, দুজন একসাথে চিৎকার করার কারণে সে কি বলেছে আমি শুনি নাই। আমি কি বলেছি সেও শোনে নাই বলে আমার ধারণা। এখন আমাকে বেকায়দায় ফেলার জন্য অভিযোগ তোলা হচ্ছে।
তবে অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহবুবুল হক বলেন, একাডেমিক কাউন্সিল সভায় দুজনই চিৎকার করেছি, এটা ঠিক না।
অভিযোগকারী অধ্যাপক ড.মু গোলাম কবির চিঠিতে লেখেন, ‘গত ২৫/০৭/২০২৩ তারিখ অনুষ্ঠিত একাডেমিক কাউন্সিলের ২৪৪ তম সভার ২৮ নং আলোচ্য সূচীতে যথাযথ নিয়মে আমি আপনার অনুমতি নিয়ে আমার মতামত ব্যক্ত করি। আমার বক্তব্যের পরেই কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মাহবুবুল হক আমাকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করে বক্তব্য প্রদান করতে থাকেন। আমি সহ আরও কয়েকজন সদস্য তাঁকে ব্যক্তিগত আক্রমণ না করে তাঁর মতামত প্রদানের অনুরোধ করি। এতে তিনি আরও উত্তেজিত ও ক্ষিপ্ত হয়ে বিভিন্ন অশালীন ও আপত্তিকর শব্দ (যেমন: বেয়াদব, তোর গলা চেপে ধরব ইত্যাদি) প্রয়োগ করে বক্তব্য দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে তিনি অত্যন্ত উত্তেজিতভাবে আমাকে শারীরিকভাবে আক্রমণ করতে উদ্যত হন। কয়েকজন সহকর্মী তাঁকে বাধা প্রদান করে আমাকে শারীরিক আক্রমণ থেকে রক্ষা করেন। উপাচার্যের ও মাননীয় উপ-উপাচার্য এবং একাডেমিক কাউন্সিলের অন্যান্য সদস্যদের উপস্থিতিতে শারীরিকভাবে আক্রমণ করার প্রচেষ্টা চালানো হয়। এ ঘটনায় আমি অত্যন্ত মর্মাহত ও মানসিকভাবে বিপর্যন্ত। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে বর্তমানে আমি চরম নিরাপত্তাহীনতা বোধ করছি।’
চিঠিটি প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের সভাপতির সুপারিশ ও মাধ্যম হয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার বরাবর পেশ করা হয়।
				












