কক্সবাজার প্রতিনিধি »
ইয়াবা ব্যবসা ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার প্রত্যয়ে ২১ ইয়াবা কারবারির দ্বিতীয় দফায় আত্মসমর্পণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৩টায় কক্সবাজারের টেকনাফ সরকারি ডিগ্রি কলেজ মাঠে আয়োজিত আত্মসমর্পণ উপলক্ষে অতিথিগণ বক্তব্য রাখছেন। পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেনের সভাপতিত্বে আত্মসমর্পণে প্রধান অতিথি রয়েছেন পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক।
গত ২০১৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি ১০২ জন চিহ্নিত ইয়াবা কারবারি প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করেছিলেন, যারা এখনো কারান্তরিণ।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. ইকবাল হোসাইন বলেছেন, শেষ পর্যন্ত ২১জন ইয়াবা ব্যবসায়ী আত্মসমর্পণ করছেন। আত্মসমর্পণকারিরা ২১ হাজার ইয়াবা, ১০টি এলজি ও ৩০টি তাজা কার্তুজ জমা দিয়েছেন।

সূত্রমতে, আলোচনা সভা শেষে আত্মসমর্পণ করা ইয়াবা কারবারিদের আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হবে। তাদের বিরুদ্ধেও মাদক এবং অস্ত্র আইনে পৃথক দুটি মামলা করা হতে পারে। প্রথমবার আত্মসমর্পণে সাবেক সাংসদ আবদুর রহমান বদির কয়েক নিকটাত্মীয় থাকলেও এবার তার কোন স্বজন নেই। ২০১৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি আত্মসমর্পণে যাওয়া ১০২ জনের মাঝে একজন কারাগারে মারাগেছেন। বাকি ১০১ জনের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে চার্জশিট দাখিল করেছে টেকনাফ থানা পুলিশ।
আত্মসমর্পণে যাওয়া ১০২ জন রাষ্টপক্ষের বিশেষ অনুকম্পা পাওয়া কথা প্রচার পেলেও সর্বশেষ সেটা হয়ে উঠেনি। ফলে দ্বিতীয় দফায় আরো বেশি সংখ্যক আত্মসমর্পণের কথা থাকলেও কারাগারে ধুকে মরার ভয়ে শেষ মেষ নিজেদের ধরা দেয়নি অনেকে। একদিকে বন্দুকযুদ্ধের ভয়, অপর দিকে কারাগারে ধুকে মরার ভয় দুটানায় ফেলেছে ইয়াবায় সম্পৃক্তদের।
টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে বিগত কয়েক বছর ধরে ‘যুদ্ধ’ চলছে। ফলে কমে এসেছে ইয়াবা ব্যবসা। কোনও মাদক কারবারিকে ছাড় দেয়া হবে না। যেকোনভাবে এই অঞ্চল থেকে মাদক বন্ধ করা হবে।
উল্লেখ্য, গত জানুয়ারি মাসে পুলিশ, বিজিবি ও র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ৯ মাদক কারবারি নিহত হয়েছেন। এদের মাঝে ৬ জন রোহিঙ্গা। এর আগে ২০১৮ সালের মে থেকে ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কক্সবাজার জেলায় বিশেষ অভিযানে ৫৬ রোহিঙ্গাসহ ২০৯ জন ইয়াবা কারবারি ও ডাকাত-সন্ত্রাসী বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। এ সময়ে ১ কোটি ৬৯ লাখ ২৬ হাজার ৫৭০ পিস ইয়াবাও জব্দ হয়। আটক হন ২ হাজার ৩৩৮ জন। এসব ঘটনা মাদককারবারিদের মনে আতংক সৃষ্টি করেছে। ফলে অনেক চিহ্নিত ইয়াবা কারবারি গা-ঢাকা দিয়েছেন আর অনেকে আত্মসমর্পণ করতে মরিয়া হয়ে ছুটেছেন। এরই ফল আজকের অনুষ্ঠান।
বাংলাধারা/এফএস/টিএম













