বাংলাধারা প্রতিবেদন »
কর্ণফুলী নদীর তীর বরাবর কালুরঘাট সেতু থেকে চাক্তাই খাল পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় বাড়ানো হয়েছে আরও ৪৩৬ কোটি ১৫ লাখ টাকা। ২০১৭ সালে একনেকে কর্ণফুলী নদীর তীর ঘেঁষে চাক্তাই থেকে কালুরঘাট চার লেনের সড়ক কাম উপকূলীয় বেড়িবাঁধের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল ২ হাজার ৩১০ কোটি টাকা। আগামী বছরের জুনে প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা থাকলেও আরো একবছর বর্ধিত করার পাশাপাশি প্রকল্পের বাজেটও বাড়ানো হয়েছে। সংশোধিত বাজেটে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে ২ হাজার ৭৪৬ কোটি টাকা। যা বিগত বাজেটের চেয়ে ৪৩৬ কোটি টাকা বেশি।
মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) এ প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে গণভবন থেকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী এবং একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।
এর আগে চাক্তাই থেকে কালুরঘাট পর্যন্ত রিং রোড কাম উপকূলীয় বেড়িবাঁধ নির্মাণ প্রকল্পটি শুরু হয়েছে ২০১৭ সালের জুলাই। ২ হাজার ৩১০ কোটি ২৪ লাখ ২০ হাজার টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়সীমা নির্ধারণ হয়েছিল ২০২১ সালের জুনে। কিন্তু সময় গড়ালেও আর্থিক কারণে প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি হয়নি। নগরীর চাক্তাই থেকে কালুরঘাট পর্যন্ত কর্ণফুলী নদীর তীর ঘেঁষে সাড়ে আট কিলোমিটার দীর্ঘ রিং রোড কাম বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন পায় ২০১৭ সালে। তবে যথাসময়ে অর্থ ছাড় না হওয়ায় ২০২২ সাল পর্যন্ত বাস্তবায়নকাল বাড়ানো হয়।
মমঙ্গলবার একনেকে অনুমোদনের আগে ‘কর্ণফুলী নদীর তীর বরাবর কালুরঘাট সেতু হতে চাক্তাই খাল পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ’ প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধনিতে এসে ১৮টি নতুন অঙ্গ অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করেছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।
সেই সঙ্গে প্রকল্পে রয়েছে ধীরগতিও। চলতি বছরের জুন পর্যন্ত প্রকল্পে খরচ হয়েছে ১ হাজার ১৫৫ কোটি ৩৮ লাখ ৩২ হাজার টাকা (৫০ শতাংশ) এবং বাস্তব অগ্রগতি দাঁড়িয়েছে ৬২ শতাংশ। এখন দ্বিতীয় সংশোধনিতে মেয়াদ এক বছর বাড়িয়ে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত করার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু মূল অনুমোদিত মেয়াদ ছিল ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত।
মাঝে দুদফায় মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়। এদিকে প্রকল্পটির মূল অনুমোদিত ব্যয় ছিল ২ হাজার ২৭৫ কোটি ৫২ লাখ টাকা। প্রথম সংশোধনিতে কিছুটা বাড়িয়ে করা হয় ২ হাজার ৩১০ কোটি ২৪ লাখ টাকা। এখন ৪৩৬ কোটি টাকা বাড়িয়ে মোট ২ হাজার ৭৪৬ কোটি ৩৯ লাখ টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, প্রকল্পটির শেষ সময়ে যেসব নতুন কার্যক্রম যুক্ত করা হবে সেগুলো হলো-রাস্তার দৈর্ঘ্য ৪৮৪ মিটার বৃদ্ধি, আরসিসি কিলোমিটার পোস্ট, বাস-বে, ফুট ওভারব্রিজ, যাত্রী ছাউনি এবং রাস্তার পাশের স্থায়িত্ব বাড়াতে রিভিড পেভমেন্ট নির্মাণ কাজ যুক্ত করা হবে।
এছাড়া সড়কের মাঝখানে নিউ জার্সি ব্যারিয়ার, দুটি সংযোগ সড়ক অন্তর্ভুক্তি, ২৫০ বর্গমিটারের একটি ব্রিজ, রেগুলেটরের সঙ্গে আনুষঙ্গিক কার্যক্রম যোগ করা এবং বিভিন্ন ড্রেন নির্মাণ যুক্ত করা হবে।
পাশাপাশি রেগুলেটরের মুখে স্লোপ প্রটেকশনের কাজ, রিটেইনিং ওয়াল, ওয়ার্কওয়ে নির্মাণ, ১ হাজার ৮৪টি এলইডি সড়ক বাতিসহ অন্যান্য কাজ যুক্ত করার প্রস্তাব রয়েছে।
উল্লেখ্য, নগরীর চাক্তাই থেকে কালুরঘাট পর্যন্ত কর্ণফুলী নদীর তীর ঘেঁষে সাড়ে আট কিলোমিটার দীর্ঘ ও ৩০ ফুট উচ্চতার রিং রোড কাম বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন শেষে শাহ আমানত সেতু থেকে কালুরঘাট সেতু পর্যন্ত নদীর তীর ঘেঁষে মানুষ যাতায়াত করতে পারবে। পুরো নদীর তীর নগরবাসীর একটি বিনোদন স্পটে পরিণত হবে।













