বাংলাধারা প্রতিবেদক »
চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁও থানা এলাকার এক গৃহবধুকে হেনস্থার অভিযোগ পাওয়া গেছে। হেনেস্থার শিকার গৃহবধুর নাম গুলতাজ বেগম।
রবিবার (২৭ জুন) সকাল ৯টার সময় চান্দগাঁও থানার মৌলভী পুকুর পাড় এলাকার গাজী ভোলা সারাংয়ের বাড়ির রেখার বিল্ডিংয়ের (২য় তলায়) ঘর ভাড়া সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ঐ গৃহবধুকে হেনেস্থা করা হয়। এই সময় তাকে টেনে হিচঁড়ে অপদস্ত করে তালাবন্ধি করা হয় এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। এছাড়া ঘরে বৈদ্যুতিক লাইন, গ্যাস সংযোগ, ওয়াসার লাইন বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। এরপর হেনেস্থার শিকার ঐ গৃহবধু জাতীয় জরুরি সেবা ১০৯ নম্বরে ফোন করলে দুপুর ১২ টায় চান্দগাঁও থানা পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে।
হেনেস্থার শিকার গৃহবধু গুলতাজ বেগম বাংলাধারাকে জানান, সকাল ৯ টায় হঠাৎ বিল্ডিয়ের মালিক রেখার নির্দেশে ঐ এলাকার সন্ত্রাসী জাহিদ গিয়াস উদ্দিনের নেতৃত্বে ছেলে রাসেল, দেবর খালেক, ভায়ের স্ত্রী লাকীসহ আরও বেশ কয়েকজন এসে আমাকে দরজা খুলতে বলে। আমি দরজা খুলতেই আমাকে রাসেল, খালেক, লাকী হাত ধরে টেনে হিচঁড়ে ঘর থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করে। তারা আমার ওড়না ও জামা ধরে টানাটানি করে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করতে থাকে। এই সময় তারা আমাকে ঘর থেকে বের করতে না পেরে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে বাহির থেকে তালাবন্ধি করে রাখে। তারপর আমি নিরুপায় হয়ে তাৎক্ষণিক জাতীয় জরুরি সেবা ১০৯ নম্বরে কল দিয়ে বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করি। এরপর চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁও থানা পুলিশ আমাকে উদ্ধার করেন। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
তিনি আরও বলেন, ভাড়া সংক্রান্ত বিষয়টি মিমাংশিত একটি ঘটনা। তারা আমাদের জুন মাস পর্যন্ত সময় দিয়েছিল। কিন্তু আমাদের পারিবারিক কিছু সমস্যার কারণে আমরা আরও দুই মাস বাড়তি থাকার অনুমতি নিই। বাড়ির মালিক রেখা আমাদের সময়ও দিয়েছিলেন। কিন্তু আজ নিজেদের দেওয়া সময়কে উপেক্ষা করে গুন্ডাবাহিনী নিয়ে আমাকে হেনস্থা, অপদস্ত ও ঘরে তালাবন্ধি করে রাখে।
জানা যায়, এর আগেও ভাড়া সংক্রান্ত কারণে হেনস্থার শিকার নারী গুলতাজ বেগমের স্বামীকে এলাকার কিশোর গ্যাং লিডার খ্যাত জাহেদ গিয়াস উদ্দিন তার টর্চার সেলে (মিলিনিয়াম কনস্ট্রাকশন সেন্টার) নিয়ে গিয়ে অপমান অপদস্ত করে। এবং জোরপূর্বক একটি খালি সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে হত্যার হুমকি দিয়ে ছেড়ে দেয়। নিজের এবং স্ত্রী-সন্তানের প্রাণের ভয় এবং মালিক রেখা বেগমের আশ্বাসে মামলা মোকদ্দমায় জড়ায়নি।
গৃহবধুর স্বামী মো. ইমরুল বাংলাধারাকে জানান, মূলত ভাড়া সংক্রান্ত বিষয়টি বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়। ওই বিল্ডিংয়ে বেশ কিছু অনৈতিক কাজের প্রতিবাদ করাতে রাসেল এবং খালেক রেডিমেট মিথ্যা গল্পকাহিনি তৈরি করে আমাদেরকে বের করে দেয়ার ষড়যন্ত্র করেছে। এর আগেও আমার অনুপস্থিতিতে আমার স্ত্রীকে অনৈতিক প্রস্তাব করায় ঝগড়া ও কথাকাড়াকাড়ি হয়। আমরা নিজেরাও এই বাসা ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম অনেক আগেই, কিন্তু লকডাউন এবং অর্থনৈতিকভাবে সমস্যায় পড়ে যাওয়ার কারণে ছাড়তে পারিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উদ্ধার কাজে নেতৃত্বদানকারী চট্টগ্রাম চান্দগাঁও থানার এসআই আজিজ বাংলাধারাকে জানান, এটা আসলে ভাড়া সংক্রান্ত ঘটনা। আগামীকাল দুই পক্ষকে নিয়ে থানায় বসবো। সেখানে সমাধান হবে।
বাংলাধারা/এফএস/এআই













