গাজীপুরে ‘মিথ্যা অভিযোগে’ গ্রেপ্তার হওয়া মসজিদের খতিব মাওলানা মুহাম্মদ রইস উদ্দিনের মৃত্যুতে ক্ষোভে ফুঁসছে আলেম সমাজ। তাকে প্রকাশ্যে মারধর ও কারাগারে ‘বিনা চিকিৎসায়’ মৃত্যুর প্রতিবাদে দেশজুড়ে চলছে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বিকেলে চট্টগ্রাম ষোলশহর রেলস্টেশনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধনে আল্লামা জয়নাল আবেদীন আল কাদেরী বলেন,”একজন মসজিদের খতিবকে রাস্তার মানুষ পিটিয়ে মারে, এরপর পুলিশ হেফাজত করে না। তাহলে আপনাদের বলতে চাই— দেশের সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ ভিআইপি হচ্ছে তারা, যারা মিম্বরের দায়িত্ব পালন করেন। কুরআন-হাদিস আমাদের (খতিব) ভিআইপি বলেছে।”
তিনি বলেন, “রইস উদ্দিন হকের পক্ষে কথা বলেছিলেন, আর তাই শহীদ হয়েছেন। তাকে পানি পান করতেও দেওয়া হয়নি। যারা হকের পথে থাকে, সত্যের পক্ষে দাঁড়ায় তাদের জন্য আজ কারাগারেও পানি নেই। কিন্তু হাশরের মাঠে হাউজে কাউসার থাকবে।”
মনববন্ধনে বক্তারা বলেন, মাওলানা রইস উদ্দিনকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে অপবাদ দিয়ে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ তাকে কারাগারে পাঠানোর পর পর্যাপ্ত চিকিৎসা না পাওয়ায় তিনি মারা যান। এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করেন তারা।
উল্লেক্য যে, শনিবার (২৬ এপ্রিল) ঢাকায় ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে আয়োজিত সুন্নি মুসলিমদের সমাবেশে বিপুল সংখ্যক অনুসারী নিয়ে অংশ নেন রইস উদ্দিন। পরদিন রবিবার সকালে গাজীপুরে ‘বলাৎকারের’ অভিযোগ তুলে কিছু লোক তাকে প্রকাশ্যে মারধর করে। পরে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে এবং আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠায়।
রাত ৩টার দিকে রইস উদ্দিন অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত রইস উদ্দিন (৩৫) কুমিল্লার মতলব থানার বাদশা মিয়ার ছেলে এবং গাজীপুরের হায়দরাবাদ আখলাদুল জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব ছিলেন।
বিচার দাবিতে বিক্ষোভ
এই ঘটনায় চট্টগ্রাম, ঢাকা ও অন্যান্য জায়গায় আলেম সমাজ ও ইসলামপন্থী সংগঠনগুলোর আয়োজনে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করা হয়।মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, “রইস উদ্দিনের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে নির্মম নির্যাতন চালানো হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত না হলে দেশজুড়ে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।”