বাংলাদেশে বসে আন্তর্জাতিক পর্নগ্রাফি ওয়েবসাইটের সঙ্গে যুক্ত থেকে অশ্লীল ভিডিও বানানোর অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছে এক যুগল। এই যুগলের পর্ন ভিডিও আন্তর্জাতিক পর্নগ্রাফি সাইটে শীর্ষে রয়েছে। দেশে বসে অশ্লীল ভিডিও বানিয়ে পর্ন তারকা বনে যায় তারা।
তাদের গ্রেপ্তারের পর জানা যায় অজানা তথ্য। অভিযুক্ত মো. আজিম উদ্দিন (২৭) চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বরুমচড়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। পরিবারের তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে আজিম তৃতীয়। সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে বলে জানা যায়। প্রথম দুই স্ত্রীকে তালাকের পর গ্রেপ্তারকৃত বৃষ্টিকে বিয়ে করে নিরুদ্দেশ হয় আজিম। বৃষ্টি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর থানার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামের মেয়ে বলে জানা যায়। চলতি বছরের ২৩ আগস্ট সিএনজি অটোরিকশা চুরির অভিযোগে আজিম ও তার এক ভাইকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এছাড়া মাদক মামলাতেও ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি আজিম।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে তাদের প্রথম ভিডিও প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে এক বছরে তাদের প্রকাশিত মোট ১১২টি ভিডিও ২ কোটি ৬৭ লক্ষাধিক বার দেখা হয়েছে বলে পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে উঠে আসে। এতে করে দুই দিন ধরে সারা দেশে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে।
আজিমের এলাকায় গিয়ে প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আজিমের বাবা পেশায় অটোরিকশা চালক। তবে তাদের পরিবারের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে আশপাশের কারও সম্পর্ক নেই। চার বছর আগে সে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেনি। তবে মাঝে মধ্যে বাড়িতে আসে বলে প্রতিবেশীরা জানান। দুই বছর আগে বৃষ্টি (২৮) নামের ওই মেয়েকে নিয়ে বাড়ি আসে এবং তাকে বিয়ে করেছে বলে দাবি করে। তবে বৃষ্টি তার তৃতীয় স্ত্রী। আজিম এর আগে দুইটি বিয়ে করে তাদের তালাক দিয়ে বাড়ি থেকে চলে যায়। অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত থাকার কারণে স্থানীয়রা তাদের এড়িয়ে চলত বলেও জানান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক (৫০) বছর বয়সী আজিমের এক প্রতিবেশী জানান, পরিবারটি চুরি ও মাদকের সঙ্গে জড়িত থাকায় তাদের সঙ্গে সমাজের কারও সম্পর্ক নেই। আজ সোমবার ফেসবুকে দেখলাম, আজিম তার স্ত্রীকে নিয়ে খারাপ ভিডিও করে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ায় তাকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে তারা বাড়িতে খুব কম আসে, আসলেও কারও সঙ্গে কথা বলে না।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, এই পরিবারটি বিভিন্ন অসামাজিক কাজে জড়িত থাকায় তাদের সঙ্গে কারও সম্পর্ক নেই। তারা আগে থেকেই এসব কাজে জড়িত। কয়েকদিন আগে একটি সিএনজি অটোরিকশা চুরির অভিযোগে তাদের সঙ্গে সালিস বৈঠকও হয়েছে। আমরা তাদের বিচারের দাবি করছি।
আনোয়ারা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মনির হাসান জানান, আলোচিত পর্নগ্রাফির সঙ্গে জড়িত আজিম মাদক মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি। তার বিরুদ্ধে সিএনজি অটোরিকশা চুরির অভিযোগও রয়েছে। সিএনজি চুরির ঘটনায় গত ২৩ আগস্ট তাদের বাড়িতে তদন্তে গেলে মাদক মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামির অভিযোগে আজিম ও তার এক ভাইকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
